ফিচার I # কাপল গোল
পাওয়ার কাপলদের জন্য। একসঙ্গে সময় কাটানোর উপভোগ্য উপায়। সৌন্দর্যচর্চা, সঙ্গে সম্পর্কের উষ্ণতাকে আরেকটু উসকে দেওয়া
বিয়ে নামক আনকোরা বন্ধনের সৌন্দর্য নতুন দম্পতির রূপচর্চায়ও যদি সঞ্চারিত হয়, তবে সম্পর্কের রসায়নটা আরও উষ্ণ হবে বৈকি! সঙ্গে পারস্পরিক চিনে নেওয়ার পালাটিও গতিশীল। এত যে, মুহূর্তেই যেন ফুরিয়ে যাবে দিন।
সুস্থ, সুন্দর, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য প্রতিদিনই নিয়ম করে কিছু না কিছু করে থাকেন মেয়েরা। সে ক্ষেত্রে সঙ্গী হিসেবে বরকে রাজি করানো গেলে কিন্তু মন্দ হবে না। জেন্ডার নিউট্রাল অথবা ইউনিসেক্স সব পাওয়ার প্রডাক্ট ব্যবহারে সহজেই সেরে নেওয়া যাবে এসব সেশন। সঙ্গে খানিকটা খুনসুটির যোগ- সম্পর্ক সার্থক তো এভাবেই হয়।
এক্সফোলিয়েটর এক্সপার্ট
মেয়ে কিংবা ছেলে- উভয়ের রূপচর্চার একদম প্রাথমিক ধাপ এটি। ক্লিনজার তো ব্যবহার বাধ্যতামূলক, কিন্তু এক্সফোলিয়েশনেই ছেলেদের যত অনীহা। কারণ, সময় লাগে আর ঝক্কিও কম নয়। কিন্তু অর্ধাঙ্গিনী যদি নিজের এক্সফোলিয়েশনের মুহূর্তে একটু আদর-আহ্লাদ করে মাখিয়ে দেন বরের ত্বকে, উপভোগ্যই হবে ব্যাপারটা। দুজনের ত্বকই দেখাবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। এ ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যেতে পারে হাইএন্ড সব ব্র্যান্ডের লাক্সারি ফেশিয়াল স্ক্রাবগুলো। ইউনিসেক্স হলে ভালো, নইলে আয়ুর্বেদিকগুলোও সঠিক অপশন এ ক্ষেত্রে।
সুরক্ষায় ভরসা
সানস্ক্রিন। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচায়। ফলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে অনাকাক্সিক্ষত দাগছোপ, পোড়া কালচে ভাব এমনকি অকালবার্ধক্য থেকেও। আর সূর্য তো ছেলেমেয়েভেদে আলোকরশ্মি ছড়ায় না! তাই সুরক্ষা জরুরি দুজনের। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য একটু বেশিই প্রয়োজন। তাই নিয়ম করে সানস্ক্রিন মাখার অভ্যাস থাকা চাই দুজনেরই। এমন ফর্মুলাগুলো বেছে নিতে হবে, যা ত্বকে সহজে মিশে যাবে, দৃশ্যমান পরত তৈরি করবে না। দেবে ন্যাচারাল ম্যাট ফিনিশ। নিদেনপক্ষে হবে এসপিএফ ৫০ যুক্ত।
ময়শ্চার মিউজ
অবসন্ন খসখসে কিংবা চিটচিটে ত্বকের এমন বিপন্নতায় ভুগতে পারেন উভয়ই। এ ক্ষেত্রে সমাধান একই। ময়শ্চারাইজার। অযথা বাড়তি খরচ কেন করবেন? হাইড্রেটিং ফর্মুলার ময়শ্চারাইজার এ ক্ষেত্রে বেশি উপযোগী। হতে পারে নন-ম্যাটিফায়িং অথবা অয়েল ফ্রি। সেটা না হয় দুজন মিলেই ঠিক করে নিলেন। একই কনটেইনার কিংবা টিউব থেকে মেখে নেওয়ার এ নিয়মে ভালোবাসা যেমন উসকে উঠবে, ত্বকও ছড়াবে দীপ্তি।
স্প্রে অ্যান্ড সারপ্রাইজ
মেয়েরা তো বটেই, যেসব ছেলে একদমই রূপচর্চায় অভ্যস্ত নন, তারাও জানেন, চিটচিটে চুল কেমন বিশ্রী দেখায়। এ ক্ষেত্রে একদম ঝক্কিহীন সমাধান এক বোতল ড্রাই শ্যাম্পু। চুলের তেলে ভাব দূর করবে। ভলিউম জোগাবে। চটজলদি ধুলা-ময়লা পরিষ্কার করে দেবে ঝরঝরে ভাব। এক বোতলেই দুজন।
মাস্ক মাস্ট
শুধু মেয়েরাই যে সুন্দর হয়ে উঠতে চান, তা কিন্তু নয়। ছেলেরাও চান। সমস্যা একটাই- সৌন্দর্যচর্চায় সাধারণত স্বচ্ছন্দ নন তারা। সে ক্ষেত্রে তার সঙ্গী দারুণ সহযোগী হয়ে উঠতে পারেন। সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন মজার মাস্ক সেশন করে নিতে পারেন দুজনে মিলে। পছন্দসই কোনো ফেস প্যাক মেখে বসে থাকতে পারেন। সঙ্গে গল্প আর খুনসুটিতে মেতে ওঠা যায়। তোলা যায় সেলফিও, কাপল গোল হ্যাশট্যাগে আপলোড করার জন্য। তবে মাস্ক বা প্যাক বাছাইয়ের সময় খেয়াল রাখতে হবে, দুজনের ত্বকেই যেন মানিয়ে যায়। প্রোটিন বা ফাইবার রিচ ফর্মুলাযুক্ত মাস্ক এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর।
ভালোবাসায় সিক্ত
পারফেক্ট বেজ, তার ওপর আইশ্যাডো, ব্লাশঅন আর লিপস্টিকে কাক্সিক্ষত মেকআপ লুক। কিন্তু বরের মুখটা ম্যাড়ম্যাড়ে, অনুজ্জ্বল। এই ব্যবধান ঘুচিয়ে দেবে টিন্টেড ময়শ্চারাইজার। সহজে এবং চটজলদি ত্বকে উজ্জ্বলতার আভা তৈরি করতে এর জুড়ি নেই। অনেক সময় দাগছোপও ঢেকে দিতে সক্ষম। এটি এমন মেকআপ লুক তৈরি করে, যা একদমই কৃত্রিম দেখায় না। তাই দুজনের জন্যই ব্যবহারের উপযোগী। আর টিন্টেড ময়শ্চারাইজার যদি এসপিএফ যুক্ত হয়, তাহলে তো কথাই নেই। বরের মুখে মাখানোর সময় ময়শ্চারাইজার বলে চালিয়ে দেওয়া যায়, ক্ষতি কী!
জাহেরা শিরীন
মডেল: নাহিদ ও আনিকা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস