skip to Main Content

কুন্তলকাহন I ধূসরতা লুকাতে

চুল স্বাভাবিক দেখানোর জন্য এর প্রকৃত রঙই জরুরি। কিন্তু বিবর্ণ হয়ে গেলে তা লুকানো যায় কীভাবে?

সৌন্দর্যের সাধারণ ও বড় সমস্যা হলো ত্বকের রিংকেল এবং চুলের বিবর্ণতা। শুধু বয়স হলেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয় তা নয়। তরুণকালেও অনেককে এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তবে ধূসর বা সাদাটে চুল নিয়েও কেউ কেউ স্বচ্ছন্দ। অনেকে এই হালকা রঙের চকচকে চুল আড়াল করতে চান।
চুলের ধূসরতা লুকাতে চাইলে পদ্ধতিগুলো জেনে নেওয়া যেতে পারে।
কালার মেইনটেইন কিংবা প্রয়োগের জন্য স্যালুনে ঘন ঘন যাওয়া কারও কারও পক্ষে সম্ভব হয় না। ধূসর চুল আড়াল করার কাজটি বাড়িতে নিজেই সেরে নেওয়া যায়। এ জন্য স্বনামধন্য কোনো বিউটি স্যালনের কালারিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা রঙের রাসায়নিক উপাদান সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা থাকে। এমন উপায় আছে যেটি অনুসরণে নিজেই চুলে রঙ করে একটি চমৎকার, ন্যাচারাল লুক দেওয়া যায়।
প্রথমে ঠিক করে নিতে হবে, চুলে কোন রঙ মানাবে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রে হেয়ারের একটি বিশেষ দিক হলো এটি লুকিয়ে থাকতে পারে। একেবারেই তা বদলে ফেলতে চাইলে স্থায়ী রঙ করে নিতে হবে। তবে আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। কারণ, স্থায়ী রং ওঠানো কঠিন এবং তা চুলের বৃদ্ধি না ঘটা পর্যন্ত প্রায় অসম্ভব। প্রক্রিয়াটিতে যথেষ্ট সময় দিতে হয়। কেননা, চুলজুড়ে বিভিন্ন টোন ব্যবহার করতে হবে। যেমন চুলের ডগায় যে কালার, তার সঙ্গে মধ্যভাগে বা গোড়ার রঙের পার্থক্য থাকবে। যদি স্থায়ী রঙের প্রক্রিয়াটি বাদ দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে কালারের ধারাবাহিকতার সঙ্গে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে।
স্থায়ী রঙ করতে না চাইলে সেমি-পারমানেন্ট কালার করে নেওয়াই ভালো। এতে কোনো অ্যামোনিয়া নেই, তাই এটি ধূসর চুলকে ঢেকে রাখে না, বরং ব্লেন্ড করে নেয়। এতে হালকা চুল প্রায় গাঢ় দেখাবে। চুল বেড়ে যাওয়ার পর ধূসর চুলে যে টোনটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা পিক করে নেয়। এগুলো কখনো কখনো হাইলাইটের মতো দেখায়।
চুলে কালারের আগে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এমন কিছু উপায় রয়েছে, যা চুলকে আরও ভালোভাবে রঙ শোষণের জন্য প্রস্তুত করতে পারে। তাই এ ধরনের ট্রিটমেন্ট করতে চাইলে শাওয়ার ফিল্টার বিষয়ে জেনে রাখা জরুরি। কেননা, পানির খনিজ উপাদান চুলে প্রভাব ফেলে। এখন বেশির ভাগ এলাকার পানিতে যার মাত্রা প্রকট। এটি চুলে কালার ঠিকঠাকভাবে প্রসেসিং হওয়া থামিয়ে দেয়। ব্লিচিংকে ধীর করে। শাওয়ার ফিল্টারগুলো পানির খনিজ উপাদান সরিয়ে দিতে সাহায্য করে। একইভাবে ব্রিটা ফিল্টার পানি থেকে দূষিত উপকরণ সরিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে অ্যাপল সিডার ভিনেগার ব্যবহারেরও পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ, এটি চুল ঝরানো ছাড়াই মাথার ত্বকের পিএইচ লেভেল পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে।
ঠিকঠাক প্রডাক্টটি বেছে নেওয়া জরুরি। বাড়িতে নিজেই রঙ করে নিতে চাইলে সেমি-পারমানেন্ট কালার বেছে নেওয়াই ভালো। পারমানেন্ট বক্স ডাই এড়িয়ে চলা দরকার। এটির ফলাফল এবং মানের পার্থক্য সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। তাই নন-পারমানেন্ট কালার অপশন খুঁজে নেওয়া ভালো। এ কাজে স্প্রে, টাচ অ্যাপলিকেটর বা পাউডারের মতো অ্যাপ্লিকেশন পদ্ধতিগুলো বেছে নেওয়া যায়।
এই পণ্যগুলো চুলে কত দিন স্থায়ী হবে, তা পরবর্তী শ্যাম্পু করে নেওয়া পর্যন্ত অথবা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বোঝা যায়। চুলের গোড়ার দিকে নজর দেওয়া বা চুল জুড়ে আরও কিছুটা রঙ যোগ করা- পরীক্ষা করে দেখা দরকার কোনটি বেশি কার্যকর। ভালো ব্র্যান্ডের গ্রে রুট কভার করার স্প্রে রয়েছে, যেটির ব্যবহার সহজ। যে পাউডার চুলের গোড়া রাঙাতে বেশি সুবিধা দেয়, সেই রুট টাচআপ প্রডাক্টগুলো ভালো কাজ দেবে।
সঠিক কালার ও চুল কতখানি ধূসর হয়েছে, তা বোঝার ক্ষেত্রে আলো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাই এ কাজের জায়গায় পর্যাপ্ত আলো থাকা জরুরি। কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক আলোয় রঙের তারতম্য ঘটতে পারে। উভয় ক্ষেত্রে কালার প্রয়োগের প্রস্তুতি রাখা ভালো। কতটুকু পারফেক্ট হলো, কাজ শেষে দুই আলোয় তা দেখে নেওয়া যেতে পারে।
স্প্রে বা ব্রাশ অ্যাপলিকেটর ব্যবহারের আগে পরীক্ষা করে নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে সময় নিয়ে কাজটা করাই ভালো।
ঘরে এবং স্যালনে কালার করার ফলাফলে মানগত পার্থক্য থাকে। শুকিয়ে যাওয়ার পরে রঙটি প্রায়শই বেশি দৃশ্যমান হয়। তাই ব্যবহৃত প্রডাক্টের এক কোট দিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে চব্বিশ ঘণ্টা অপেক্ষা করে কাক্সিক্ষত কালার না পেলে আরেক কোট দেওয়া দরকার।
কালার করার আগে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হাতের কাছে রাখতে হবে।

 আহমেদ বুবলি
মডেল: মাহলেকা
ছবি: জিয়া উদ্দিন ও সৈয়দ অয়ন
মেকওভার: পারসোনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top