skip to Main Content

ফিচার I স্বস্তির কাফতান

গ্রীষ্মের প্রলম্বিত তপ্ত দিনের পোশাক। আরামদায়ক। ট্রেন্ডিও বটে

নানান ডিজাইনের সামার কালেকশনে ফ্যাশন হাউসগুলো ইতিমধ্যে সাজতে শুরু করেছে। ফ্যাশনমোদীরা চান সব সিজনেই নিজের আউটফিট নিয়ে ব্যতিক্রম ও আকর্ষণীয় হয়ে থাকতে। তবে এই তপ্ত দিনে সুন্দর পোশাকের সঙ্গে স্বস্তিবোধের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। তাই নতুন বা পুরোনো ধারা- যা-ই হোক না কেন, এ সময়ের পোশাক হওয়া চাই আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল।
এখনকার উপযোগী পোশাকের একটি ভালো বিকল্প হতে পারে কাফতান। মরোক্কান গণ্যমান্য ব্যক্তিরা লাক্সারিয়াস সিল্ক এবং অলংকৃত পুঁতি দিয়ে তৈরি এই ডেকোরেটিভ কস্টিউমগুলো তৈরি করিয়েছিলেন। হাজার বছর ধরে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় উদ্ভূত এই পোশাক। কাফতানের স্টাইল, ব্যবহার ও নাম সংস্কৃতিভেদে আলাদা হয়। তাই নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিধেয়টির ডিজাইনে বৈচিত্র্য নিয়ে আসা যায়। হালকা ওজন ও লুজ ফিটিংয়ের পোশাক বলে গ্রীষ্মে এটি অনায়াসেই পরে নেওয়া সম্ভব। তবে আঁটসাঁট ফিটিংয়ের কাফতানের প্রচলনও রয়েছে, যা অটোমান সাম্রাজ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিল।
এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় লাক্সারি লুক ও লুজ-ফিটিং ফর্মের জন্য। ফরাসি ফ্যাশন ডিজাইনার পল পাইরেট বিশ শতকের গোড়ার দিকে স্টাইলটিকে আরও জনপ্রিয় করেছিলেন। পাশ্চাত্য সমাজের সঙ্গে কাফতান পরিচিত হয়েছিল মূলত ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে ক্রিস্তোব্যাল বাঁলেসিয়াগা এবং ক্রিশ্চিয়ঁ দিওরের মতো শীর্ষস্থানীয় কতুরিয়ারদের হাত ধরে। তারা এটিকে অভিযোজিত করেছিলেন ইভনিং গাউনের নতুন ফর্ম হিসেবে। এই ভার্সনগুলো ছিল স্যাশলেস। পরবর্তীকালে এটি আরও ক্যাজুয়াল পোশাকে পরিণত হয়েছিল, যেগুলো বিশেষত সৈকতে পরার উপযুক্ত। সময়ের পরিক্রমায় এগুলোতে যোগ হয়েছে বিভিন্ন স্টাইল ও বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রভাব। এখন কাফতান ভীষণ ট্রেন্ডি।
ফ্যাশন ডিজাইনাররা এই আউটফিটের স্ট্রিট স্টাইলগুলোও তাদের নকশায় ব্যবহার করেছিলেন। যেমন হোস্টেস গাউন হিসেবে ল্যাভিশ কাফতান বাজারজাত করা হয়েছিল সাধারণ ঘরোয়া বিনোদনের জন্য। মেইনস্ট্রিম ওয়েস্টার্ন ফ্যাশনে পোশাকটি জনপ্রিয়তা পায় দিয়ানা ভিল্যান্ড, বেব প্যালে ও বারবারা হটনের হাত ধরে।
লুজ সিলুয়েট, যা কাফতানকে বেশ আকর্ষণীয় করে তোলে। এর ভেন্টিলেশন ও কাভারেজ থাকার কারণে এটি যে কাউকে স্টাইলিশ দেখায়। কাফতান ডিজাইনের অসংখ্য অপশন রয়েছে- লেন্থ লং বা শর্ট থেকে শুরু করে সিল্ক, কটন ভয়েলের কাপড়, প্যাটার্ন ব্রাইট, মিউট এবং নান্দনিকতার মিশেল। এগুলোর মধ্য থেকে স্টাইলিশ কাফতানটি সহজেই বেছে নেওয়া যায়।
বিচ লুকের জন্য তপ্ত দিনে শীতল হয়ে ওঠা যায় স্নিগ্ধ কোনো রঙের ব্রিজি সিলুয়েটস নিয়ে। পছন্দের সামার স্যান্ডেল আর রাফিয়া ক্যারিয়েল- এতেই লুক পরিপূর্ণতা পেতে পারে।
সান-কিসড ইয়েলো হালকা ওজনের ম্যাটেরিয়ালের সংযোজনে তৈরি কাফতান হতে পারে গ্রীষ্মের জন্য আদর্শ। সানসেট টোনের বা স্ট্রাইপড লং এবং ইজি ফিটেড এই সিঙ্গেল পিস গ্রীষ্মের প্রলম্বিত দিনগুলোকে করে তুলবে দৃষ্টিনন্দন ও আরামদায়ক। এই ব্রিজি পিসে সাদা ও কমলা একধরনের ফ্যান্সিফুল কম্বিনেশন তৈরি করে, যা গর্জাস ও প্লেফুল।
হালকা ওজনের ও রঙের পোশাক গরমে দেবে স্বস্তি। নেকে আনা যেতে পারে বৈচিত্র্য। ডিপ ভি নেকের কাফতান গরমে আরামদায়ক। সঙ্গে থাকতে পারে ন্যাচারাল অ্যাকসেসরিজ। এফোর্টলেস লুক পেতে এটি সিঙ্গেল বা একটি ট্যাঙ্কটপের সঙ্গে পরে নেওয়া যায়। বিভিন্ন ডিজাইনের কলার এতে ভিন্নতা যোগ করবে। পোশাকটি আরও দৃষ্টিনন্দন করে তোলার সহজ উপায় হতে পারে এমব্রয়ডারি, পমপম ও টাই দিয়ে করা ডিজাইন। স্ট্রিকিং ইফেক্টের জন্য মেটালিক ফ্যাব্রিকস ও বোল্ড নান্দনিক প্যাটার্নের ফ্লোর-লেন্থ কাফতান বেছে নেওয়া যায়। এটি উজ্জ্বলতাকে বাড়িয়ে তুলবে।
গুচি ডিজাইন করেছিল কিমোনো-প্রাণিত কাফতান। ফ্লোরাল প্রিন্ট লিনেন টুইল কাফতান ড্রেস। একটি ঝলমলে লুক তৈরি করতে কালারফুল ফ্লেয়ার স্টাইলের এই পোশাকের হেম রুমাল ছাঁটে করা হয়েছিল। এমিলিও গুচির কাফতানগুলোও আইকনিক ও টাইমলেস।
কাফতান সাধারণত দূরে কোথাও ভ্রমণের সময় স্যুভেনির হিসেবে কেনার মতো পোশাক।

 আহমেদ বুবলি
মডেল: প্রেইরী, আনসা
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: নুজহাত নাওয়ার
ছবি: জিয়া উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top