skip to Main Content

তনুরাগ I বিফোর বেদিং

রোজকার রুটিন। কিন্তু কৌশলের সামান্য হেরফের পাল্টে দিতে পারে এর কার্যকারিতা। কাঙ্ক্ষিত দেহত্বক পাবার জন্য

স্নানে শান্তি, স্নানে স্বস্তি! শুধু কি তাই! নিয়মিত গোসলে মন প্রফুল্ল থাকে, দেহ শান্ত হয়। তবে এর কার্যকারিতা আরও বাড়ানোর সহজ কিছু উপায় আছে। ইন শাওয়ার এসব প্র্যাকটিস দেহত্বককে করে তুলবে আরও বেশি সুন্দর, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
মেকআপ মুছে নিয়ে
গোসলের আগে ত্বক থেকে যত্নের সঙ্গে মেকআপ মুছে নিতে হবে। কাজল, মাসকারা, লিপস্টিক তুলে নিতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। তবে হাত দিয়ে চোখ রগড়ানো যাবে না কোনোভাবেই। যত্ন করে তুলে নিতে হবে তুলা অথবা মেকআপ রিমুভিং প্যাডের সাহায্যে। ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ তুলতে বেশ বেগ পেতে হয়। মাইসেলার ওয়াটার সাহায্য করবে এ ক্ষেত্রে। মনে রাখা চাই, শাওয়ারের পানির সংস্পর্শে নয়, এসব সেরে নিতে হবে তার আগেই!
শীতলে শান্তি
আমাদের দেশের তাপমাত্রা কিন্তু শীতল নয়। বছরের বেশির ভাগ সময় তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকেই থাকে। তবু অনেকের বাথরুমে গিজার দেখা যায়। পানির তাপমাত্রা বাড়িয়ে গোসল করার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, গরম পানি সাধারণত ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কেড়ে নেয়। হুট করে নয়, ধীরে ধীরে। ফলে ত্বক হয় যায় শুষ্ক। আর ঠান্ডা পানি ত্বকের প্রাকৃতিক ময়শ্চার কেড়ে নেয় না। সবচেয়ে ভালো হয় গোসলের পানি যদি ঈষদুষ্ণ হয়। এর সঙ্গে যদি শাওয়ারের আগে বডি অয়েল দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে নেওয়া যায়, তাহলে আরও বেশি উপকার পাওয়া সম্ভব। গোসলের সময় সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে মুখত্বক নিয়ে। ভুল করেও গরম পানিতে ধুয়ে নেওয়া যাবে না। কারণ, মুখের ত্বক দেহত্বকের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল।
চুল থেকে শুরু
শাওয়ারের নিচে দেহের কোন অংশ ভেজাতে হবে আগে? চুল। ভিজিয়ে নিতে হবে কোমল হাতে। তারপরে ধীরে ধীরে পুরো দেহ। চুলে শ্যাম্পু-কন্ডিশনার বুলিয়ে নিয়ে পানির সাহায্যে ধুয়ে নিতে হবে। কোনো তাড়াহুড়া ছাড়া। চুল ও ত্বক পরিষ্কার করার জন্য গোসলের সময় নানা প্রসাধন দরকার হয়। হেয়ার প্যাক, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, সাবান আর শাওয়ার জেলসহ নানান সামগ্রী। তবে এর কোনোটাই দীর্ঘক্ষণ দেহের সংস্পর্শে রাখার উপযোগী নয়। তাই পরিষ্কার করে নেওয়ার ক্ষেত্রে চাই পূর্ণ মনোযোগ। আর যখন মাথার শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ধোয়া হয়, স্বাভাবিকভাবেই তা মুখত্বকের সংস্পর্শে আসে। সে ক্ষেত্রে গোসলের পরপরই ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে, যেন তা লোমকূপ বন্ধ করে না দেয়।
যত্নে মাথার ত্বক
স্ক্যাল্প নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত। সপ্তাহে অন্তত একবার। স্ক্যাল্প স্ক্রাব পাওয়া যায় বেশ কিছু ব্র্যান্ডের। সেখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী বেছে নিলে ভালো। স্ক্রাবিং করতে হবে শ্যাম্পু মাখার আগেই। এতে মাথার ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকবে। সেই সঙ্গে এই প্রি শ্যাম্পু স্ক্যাল্প স্ক্রাব মাথার ত্বকে জমে থাকা ময়লা, মৃতকোষ, হেয়ার প্রডাক্ট বিল্ডআপ আর তেলে ভাবও দূর করবে। অনেক স্ক্যাল্প স্ক্রাবার আবার মাল্টিটাস্কিংয়ের জন্য দারুণ, যা শুধু মাথার ত্বকের জন্য নয়, এটি ব্যবহার করে পরিষ্কার করে নেওয়া যাবে একদম পায়ের পাতা অবধি।
লুফা আর ওয়াশ ক্লথ
দুটোকেই বলা হয় ব্যাকটেরিয়া ব্রিডিং গ্রাউন্ড। কারণ, স্যাঁতস্যাতে পরিবেশ এগুলোতে জীবাণু জন্মানোর জন্য সহায়ক। তাই এগুলো ব্যবহারে গোসল ত্বকের জন্য তো উপকারী নয়ই, বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনের ব্যবহারের লুফা আর ওয়াশ ক্লথ বাথরুমে না রাখাই ভালো; বরং বাড়তি যত্নে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে নিয়ম করে এই পণ্য দুটির খেয়াল রাখতে হবে। এক দিন পর পর ব্যবহৃত লুফা এবং ওয়াশ ক্লথ ভালো করে ধুয়ে উজ্জ্বল রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। সপ্তাহান্তে প্রয়োজনে পরিবর্তন করে নিয়ে নতুন ব্যবহার করতে হবে।
স্ক্রাবিং
শাওয়ারে ত্বক ঘষে নেওয়ার ব্যাপারটা বরাবরই প্রচলিত। সঙ্গে যদি বাড়তি কিছু উপাদান যোগ করে নেওয়া যায়, এর কার্যকারিতা আরও বাড়বে। লুফার সঙ্গে সুগার স্ক্রাব ব্যবহার করা যেতে পারে এ ক্ষেত্রে; যা ত্বককে পরিষ্কার রাখবে আর্দ্রতা বজায় রেখে। মুখের ত্বকেও দরকার স্ক্রাবিং। এ ক্ষেত্রে জেন্টল স্ক্রাব ব্যবহার করতে হবে। স্ক্রাবিং হবে সময় নিয়ে, ত্বকের প্রতি যত্ন শীল হয়ে। এ ক্ষেত্রে ত্বকের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে আগেভাগেই। জেনে নিতে হবে ত্বকের কেমন যত্ন প্রয়োজন। সে অনুযায়ী ত্বকবান্ধব সব উপকরণ আছে এমন স্ক্রাবার ত্বকের জন্য বেছে নেওয়া জরুরি।
স্বল্প সময়ে সারা
দীর্ঘ সময় নিয়ে গোসল করলে ত্বক পানির সংস্পর্শে বেশি থাকে। এতে ত্বক নিজস্ব আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হতে শুরু করে। প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞদের মত, কম সময়ে শেষ করতে হবে গোসল। এতে ত্বক থাকবে সুস্থ, পানির অধিক অপচয় রোধ হবে। ৫ থেকে ১০ মিনিট শাওয়ারের জন্য উপযুক্ত সময় বলে ধারণা করা হয়। শাওয়ারের সময় ডেডিকেটেড প্লে লিস্ট তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। পছন্দের সুরের মূর্ছনায় গোসল সারলে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনটাও প্রশান্ত হবে।
রেজরের টান
লোমশ ত্বক যাদের পছন্দ নয়, স্কিন শেভিং তাদের নিয়মিত প্রয়োজন। শাওয়ার এই কাজের জন্য উপযুক্ত সময়। রেজর ত্বকের সংস্পর্শে আনার আগে ত্বককে প্রস্তুত করে নিতে হবে। পানিতে ভেজাতে হবে ভালো করে। তারপরে শেভিং ক্রিম, জেল অথবা তেল; যা-ই ব্যবহার করা হোক না কেন, ত্বকের পুরোটা জুড়ে মাখতে হবে, কোনো অংশ যেন বাদ না যায়। এরপরে ধীরে ধীরে রেজর টানতে হবে। পাঁচ-সাতবারের বেশি একই ব্লেড ব্যবহার না করাই শ্রেয়। নিয়মিত রেজর বদলে নিতে হবে পারফেক্ট শেভিংয়ের জন্য। এতে স্কিন ইরিটেশনও এড়ানো সম্ভব।
ময়শ্চারাইজেশন মাস্ট
গোসল শেষে মসৃণ তোয়ালে কিংবা কাপড় দিয়ে মুছতে হবে চেপে চেপে। বেশি ঘষে ত্বকের বারোটা বাজানো যাবে না। কটন কাপড় কিংবা মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করা চাই। তারপর ত্বকে ময়শ্চারাইজার বুলিয়ে নিতে হবে। আর্দ্র থাকা অবস্থাতেই। এতে ময়শ্চারাইজার ভালো করে শুষে নেবে ত্বক। অ্যালোভেরা এবং তেলসমৃদ্ধ ময়শ্চারাইজার ত্বককে রুক্ষতা থেকে বাঁচিয়ে রাখবে।
শেষে সুগন্ধি
স্নান শেষে সুগন্ধির ছোঁয়া সতেজ রাখবে অনেকক্ষণ। হালকা সুবাসের সুগন্ধি রাখা যেতে পারে শাওয়ার রুমের স্টোরেজে। এটা সুবাসে সুরভিত রাখার পাশাপাশি মনকেও ফুরফুরে রাখবে দীর্ঘ সময়।
 সারাহ্ রুশমিতা
মডেল: মোহিনী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: হাদী উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top