এই শহর এই সময় I মূকে শোকে
২২ মার্চ ছিল বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এদিন ছিল বিশেষ আয়োজন। তাতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ রঙ্গন এবং বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম। সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি ও নাট্যব্যক্তিত্ব জাহিদ রিপন। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে প্রদর্শিত হয় সম্মিলিত দলীয় মূকাভিনয়। পারফর্ম করেন রঙ্গন মাইম একাডেমি, মিরর মাইম থিয়েটার, দ্য মামারস, শ্রুতি মাইম একাডেমি, মাইম ফেস, গোল্লাছুট নাট্যদল, সাইলেন্ট থিয়েটার ও নাট্যতরীর শিল্পীরা। সবশেষে প্রদর্শিত হয় উইলিয়াম শেকসপিয়ারের নাটক অবলম্বনে স্বপ্নদল নাট্যদলের মূকনাট্য ‘ম্যাকবেথ’।
একই দিন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হয় পটুয়া নাজির হোসেনের একক পটচিত্র প্রদর্শনী। ‘বাঘের দেশে বৈশাখ’ শিরোনামে। আবহমান বাংলার সর্বজনীন উৎসব পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে। ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও কানাডার সম্মিলিত আয়োজন ফ্রঁকোফোনি উৎসব ২০২৪ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে। চলে ২ এপ্রিল পর্যন্ত; প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা অবধি। শিল্পকর্ম পটচিত্রে ছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিভিন্ন রূপ, যা বাংলা পৌরাণিক কাহিনির নানাবিধ লোকজ উপাদান ধারণ করেছে। বলা হয়, বাংলার বাঘ হলো বাংলাদেশের অদম্য চেতনার প্রতীক। তবে এই শিল্পীর ছবিতে প্রাণীটি কেবল একক আইকন হিসেবে চিত্রিত হয়নি, সব ছবিতেই ছিল এর নানা গল্প ছড়ানো। ছবিগুলোতে বাঘের প্রতি শিল্পীর মমত্বের দেখা মিলেছে। বলে রাখা ভালো, পটুয়া নাজির তার পটচিত্রে সব সময় বাঘকে কল্পনার মিশেলে বিবিধ রূপে ও বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করেন। এর সঙ্গে হাস্যরসও সম্পর্কিত। তাই তার বাঘ জমিনে হাল চাষ করে, একতারা ও ঢাকঢোল বাজায়, ট্রেন ও অ্যারোপ্লেন চালায়, সুখ-দুঃখ আর আনন্দ-ভালোবাসায় পাশে থাকে বন্ধুর মতো। শিল্পীর পটচিত্রে আরও স্থান পায় কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, বাউল, ফকির, মাঝিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনচিত্র।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ সূচনার প্রাক্কালে, ২৫ মার্চ কালরাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ভয়ানক গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী। সেই নারকীয় কাণ্ডকে পৃথিবীর ইতিহাসে ‘গণহত্যা’ হিসেবে লিপিবদ্ধ করার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে এবারের ২৫ মার্চ ব্যতিক্রমধর্মী এক পদযাত্রার আয়োজন করে নাট্য সংগঠন প্রাচ্যনাট। ‘লালযাত্রা’ শিরোনামে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে ফুলার রোড পর্যন্ত এ পদযাত্রায় প্রাচ্যনাট্যের কর্মীদের পাশাপাশি আরও অনেকে অংশ নেন। তাদের পরনে ছিল কালো পোশাক। কপালে লাল তিলক ও লাল ফোঁটা। লালযাত্রা চলাকালে ঢাকঢোল, তবলা, বাঁশি, গিটারসহ বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে গাওয়া হয় দেশাত্মবোধক গান। শহীদদের প্রতি সম্মানার্থে প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই বিশেষ আয়োজন।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ