ব্লগার’স ডায়েরি I মাতৃত্বে মানানসই
মাতৃত্বে যে শারীরিক পরিবর্তন ঘটে, তা সব পোশাকে মানানসই হয় না। মাকে বেছে নিতে হয় ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক। তাই বলে ফ্যাশন এই সময় পরিত্যাগ করতে হবে, এমন নয়। ঢিলেঢালা পোশাকেও মায়েরা ফ্যাশনেবল হতে পারেন। সাধারণত কর্মজীবী নারীরা এ সময় পোশাক নির্বাচনে সমস্যার মুখোমুখি হন। গর্ভধারণের চার অথবা পাঁচ মাস পর থেকেই দেখা দেয় এ বিপত্তি। গর্ভ স্ফীত হতে থাকলে পরতে হয় ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক। তবে শুরু থেকেই সেটা শ্রেয়। যতটা কমফোর্টেবল থাকা যায়, মা এবং অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য ততটা ভালো। হালকা সুতি, লিনেনের কুর্তি অথবা কামিজ মায়েদের জন্য মানানসই।
এগুলোর প্যাটার্নে প্লিটস এবং কুঁচির প্রাধান্য থাকবে। আজকাল বাজারে সুতির নানান ফ্যাব্রিক পাওয়া যায়। যা কুর্তি অথবা কামিজের ডিজাইনে এনে দিচ্ছে ভিন্ন মাত্রা। আরামদায়ক তো বটেই, সঙ্গে প্রিন্টের নানা বাহার আপনার পোশাকে এনে দেবে স্টাইলিশ লুক। টেইলর মেইড আউটফিট খানিকটা ঝামেলা বটে। তাই বাজারে আজকাল মায়েদের সুবিধার্থে ম্যাটারনিটি পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। আরাম ও স্টাইলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি নানান ডিজাইনের এসব পোশাক এখন বেশ জনপ্রিয়। কুর্তির বাস্ট অথবা ওয়েস্ট লাইনে কুঁচির বেশ কদর রয়েছে। স্লিট দেওয়া বিভিন্ন ডিজাইন দেখা যায় এই পোশাকে। এ ছাড়া প্লিট তো আছেই। কুর্তি অথবা কামিজের পাশাপাশি পরতে পারেন টপস, তবে এর লেন্থ বেশি হাওয়াটা শ্রেয়। ঢিলেঢালা টপসে কুঁচির ডিজাইন থাকতে পারে এবং সঙ্গে ফরমাল প্যান্ট পরতে পারেন। তা কাস্টমস মেইড হলেও ভালো। কারণ, গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তন ও পরিমাপ বুঝে ডিজাইন করা এবং বানানো দরকার। টপসের সঙ্গে পালাজোও পরা যায়। কমফোর্টেবল ফরমাল প্যান্ট থেকে এটি আরামদায়ক এবং সহজলভ্যও। তবে প্যান্ট অথবা পালাজো—যা-ই পরিধান করেন না কেন, স্বাচ্ছন্দ্যকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। বাম্পে যেন কোনো রকম আঁটসাঁট অস্বস্তি অনুভূত না হয় বা চাপ না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
ম্যাটারনিটি লেগিংস মায়েদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। কারণ, এটি সব পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। সঙ্গে স্বস্তি তো আছেই। এ ছাড়া ক্যাজুয়াল লুকের জন্য বেছে নিতে পারেন লং অথবা সেমি লং ড্রেস। এথনিক ড্রেস আরামদায়ক এবং ট্রেন্ডি। এগুলো স্টাইলিংয়ের সুযোগও আছে। র্যাপ, ফ্রিল, ম্যাক্সি, হল্টার নেকের ওভারসাইজড ড্রেস কিংবা ভি নেকের স্লিটেড ড্রেস ম্যাটারনিটি স্টাইলে এনে দিতে পারে ভিন্নমাত্রা। লুজ শার্ট পরা যায় ক্যাজুয়ালি ও ফরমালি। তা এনে দেবে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য। শার্টের ডিজাইনেও অ্যাড করতে পারেন ফ্রিল। লেন্থে দিতে পারেন সিমেট্রিক এবং অ্যাসিমেট্রিক ডিজাইন। শার্ট ড্রেস বেশ ট্রেন্ডি এবং ম্যাটারনিটি স্টাইল হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়। ওভারসাইজড এবং ওয়েস্ট টাই শার্ট আরামদায়ক। এ ছাড়া লং শ্রাগ এবং ফ্রিল শ্রাগ বেছে নেওয়া যেতে পারে। কোনো অনুষ্ঠান অথবা ডিনারে এগুলো সহজে পরিধানযোগ্য এবং মানানসই। শাড়ি গাউন আপনাকে শাড়ি পরার ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখে, ট্রেন্ডিও বটে। এ ছাড়া শাড়ির সঙ্গে পরা যেতে পারে ক্রপ টপ। কাফতান অথবা লং কিমোনো মায়েদের জন্য জুতসই। তবে শীতকালীন পোশাক নির্বাচনে গর্ভবতীরা বেশ মুশকিলেই পড়েন। ওভারসাইজড সোয়েটারই ভালো। সঙ্গে লেগিংস অথবা জিনস। লং সোয়েটার, সোয়েটার শ্রাগ স্টাইলিশ করে তুলবে। ফুটওয়্যারে হিল একেবারেই পরিত্যাজ্য। কেননা গর্ভবতীদের জন্য এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ফ্ল্যাট স্যান্ডেল, ব্যালেরিনা বেছে নিন। স্নিকার, রানিং শু পরুন যতটা সম্ভব।স্নি
আফসানা খান তুরা
ছবি: লেখক
ফেসবুক: afsanakhantura
ইনস্টাগ্রাম: afsanakhan003
ওয়েবসাইট: Afsana Khan Tura