হট স্পট I গাউছিয়া ঘেঁষে
শুরু শ দেড়েক টাকা থেকে। ওঠে হাজার অব্দি। এই অল্প কিছু টাকার মধ্যে মিলবে হরেক রকম শাড়ি। গাউছিয়ায়। তবে মার্কেটের ভেতর নয়। ঠিক সামনের ফুটপাতে। যেগুলো ঝাঁ-চকচকে দোকানে চার-পাঁচ শ টাকার নিচে দরদাম শুরুই করা যাবে না। ঢাকা নিউমার্কেট-সংলগ্ন গাউছিয়া গড়ে ওঠে ষাটের দশকে। প্রায় বিশ হাজার বর্গফুটের এ মার্কেট রাজধানী তো বটেই, দেশজুড়ে জনপ্রিয়। নামডাক রয়েছে সীমানা পেরিয়েও।
ফ্যাশনের এমন কোনো অনুষঙ্গ নেই, যা এখানে মিলবে না। তা-ও আবার সুলভে। তবে যারা আরও সস্তার খোঁজ করেন, তাদের জন্য গাউছিয়ার সামনের ফুটপাত সেরা ডিল। কী নেই এখানে? কিন্তু শাড়ির কালেকশন সবচেয়ে আলাদা। ফুটপাতে প্লাস্টিক পেতে তার ওপর পাটে পাটে শাড়ি সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। তবে শাড়ির জন্য মিলবে দুটি দোকান। গাউছিয়ার মূল ফটকের উল্টো পাশে। আর চাঁদনী চক পেরিয়ে নীলক্ষেতের দিকে এগোলে বলাকা সিনেমা হলের সামনে বসেন একজন।
সব সুতি শাড়ি নিয়ে। আরেকজনকে পাওয়া যাবে গাউছিয়া থেকে বাটা সিগন্যালের দিকে এগোতে থাকলে, রাস্তার ডান বা বাম পাশে। তবে তিনি শুধু মঙ্গলবার বসেন। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা অব্দি। কিন্তু গাউছিয়ার ফুটপাতে বসা দুই দোকানি থাকেন মঙ্গলবার বাদে সপ্তাহজুড়ে। সঙ্গে থাকেন তাদের একজন করে সহকর্মী। এদের কাছে শাড়ির সংগ্রহটাও বেশি। শুধু সুতিতেই মিলবে হরেক রকম ভিন্নতা। একদম সলিড যেমন পাওয়া যাবে, থাকবে প্রিন্টেড আর সেলফ মোটিফের কাজ। দাম ১৫০ টাকা থেকে শুরু। পাওয়া যাবে সিল্ক। ছাপানো রাজশাহী সিল্ক কিংবা হাতের নকশা করা তসর অথবা মটকা সিল্ক। ৩০০ থেকে ৫০০ অব্দি দাম। শাড়ির মানের ওপর নির্ভর করে। কাতান শাড়িও মেলে এখানে। একদম ট্র্যাডিশনাল থেকে ট্রেন্ডি, যা দোকানে সাজিয়ে রাখা কাতানকেও টক্কর দিতে সক্ষম। জামদানি শাড়িও কিছু পাওয়া যাবে এখানে। কোনোটার পুরো জমিনে কাজ তো কোনোটার পাড় আর আঁচলজুড়ে নকশা। দামটাও সাধ্যের ভেতর। ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যেই। কিন্তু দোকানেই এগুলোর দাম হাঁকানো হয় হাজার তিনেক। সুতির জমিনে সুইসুতার নকশি ফোঁড় তোলা শাড়িও পাওয়া যায় এখানে।
আছে শিফন, জর্জেট, অরগ্যাঞ্জা আর টিস্যু শাড়িও। ভারী কাজের শাড়িও থাকে এখানকার দোকানিদের সংগ্রহে। তবে একটু চড়া দামে। হাজার থেকে পনেরো শর মধ্যে। এখানে যে শাড়িগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো কিন্তু পুরোনো নয়। বড় বড় শপিং মলের শাড়ির দোকানে জমে থাকা শাড়ি। যেগুলো বহু সময় ধরে বিকানো ছাড়াই পড়ে ছিল, সেগুলোই লট ধরে সংগ্রহ করা হয়। অনেক সময় তাঁতিবাড়িতে জমে থাকা শাড়িগুলোও কিনে আনেন এখানকার দোকানিরা। তবে কেনার আগে মাথায় রাখতে হবে—
শাড়িগুলোর ইতিউতি খুঁত থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটা শাড়ি উল্টেপাল্টে দেখে নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
এক ডিজাইনের শাড়ি একটির বেশি দুটি কিন্তু পাওয়া যায় না ফুটপাতের এসব শাড়ির দোকানিদের কাছে।
দরদাম করার ব্যাপারে পাকা না হলেই বিপদ।
ফ্যাশন ডেস্ক
মডেল: তাসনিন
ওয়্যারড্রোব: গাউছিয়া স্ট্রিট শপ
ছবি: হাদী উদ্দীন