skip to Main Content

ফিচার I পেইনফুল প্লেজার

ক্রিশ্চিয়ান ডিওর থেকে কোকো শ্যানেল—বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ডিজাইনারের মত একই এই ফুটওয়্যারের ব্যাপারে। তবে কষ্ট কমানোরও উপায় আছে

ব্যথা, ব্লিস্টার কিংবা হঠাৎ হোঁচট খাওয়া—হিল জুতা পরলে এর সব কটিই স্বাভাবিক। তাই বলে কি নব্বইয়ের বিখ্যাত টিভি সিরিজ সেক্স ইন দ্য সিটির ক্যারি ব্র্যাডশর মতো শহরজুড়ে হিলে হনহনিয়ে হেঁটে বেড়ানোর স্বপ্নটা অধরাই থেকে যাবে? একদমই না। বরং হিলে হাঁটার আর্ট ফর্মটা যদি একবার আয়ত্তে আনা যায়, তাহলেই কেল্লা ফতে। স্টাইলিশ তো দেখাবেই, পায়ের শেপটাও ফুটে উঠবে চমৎকারভাবে। লম্বায় কম হলে হিল পরলে সে খেদটাও মিটবে। এ ছাড়া তুলনামূলকভাবে চিকনও দেখাবে এটি পরার পর। ফল—আত্মবিশ্বাসের পারদটাও পৌঁছে যাবে তুঙ্গে। প্রয়োজন প্রাথমিক প্রস্তুতি আর খানিকটা প্র্যাকটিস। ব্যস!
সেরাটা বাছাই
সব ধরনের জুতা পায়ের জন্য মানানসই নয়। হাই হিলের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। পায়ের বাঁক কিংবা ভাঁজ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া পা ফ্ল্যাট কি না কিংবা চিকন না চওড়া, এ ব্যাপারগুলোও সঠিক হিল নির্বাচনের ক্ষেত্রে সহায়ক। তবে স্টাইলিস্টদের মত, প্রথমবার কেনার সময় তুলনামূলকভাবে নিচু, ওয়েজ স্টাইল হিল বেছে নেওয়া সুবিধাজনক। এই হিলগুলো শরীরের ওজন সমানভাবে পায়ের পাতার ওপর ডিস্ট্রিবিউট করে দেয়। ফলে শুধু পায়ের গোড়ালি কিংবা আঙুলে প্রেশার পড়ে না; হাঁটার সময় ভারসাম্য রক্ষা করা যায় সহজে।
অ্যাঙ্কল স্ট্রেচিং
স্নিকার বা ফ্ল্যাট পরে অভ্যস্ত? তাহলে হিলে হাঁটার ব্যাপারটা খানিকটা চ্যালেঞ্জিংই বটে। সে ক্ষেত্রে অ্যাঙ্কেল স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ খুব কাজের হতে পারে। মাসল ফ্লেক্সিবল করতে সহায়ক এসব কৌশল হিলে হাঁটার অভিজ্ঞতাকে আরামদায়ক করে তুলবে। এ ক্ষেত্রে ইউটিউবার গ্র্যান্ট দ্য ফুট ডকের দেখানো প্রক্রিয়াগুলো বেশ জনপ্রিয়। তিনটি প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন তিনি। প্রথমটি কাফ অ্যান্ড হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ। একটা সমান জায়গায় সমান্তরাল হয়ে বসে পড়তে হবে প্রথমে। খেয়াল রাখতে হবে হাঁটু যেন সোজা থাকে। তারপর হাত দিয়ে পায়ের আঙুলগুলো ধরার চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পায়ের আঙুলগুলো নিজের দিকে বাঁকিয়ে নিতে হবে। আঙুল ধরে ১৫ সেকেন্ড থাকতে হবে, তারপর ১০ সেকেন্ডের বিরতি। এভাবে প্রতিটি পায়ে চারবার করে স্ট্রেচ করতে হবে। এ সময় শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা চাই। দ্বিতীয়টি ফুট আর্চ রোল আউট। এ জন্য দরকার হবে একটা ছোট ক্যান অথবা স্পাইকি মাসাজ বল। বসে পায়ের পাতার নিচে এর যেকোনোটি নিয়ে ব্যাকওয়ার্ড আর ফরওয়ার্ড মোশনে রোল করে নিতে হবে। মাসাজ করে নিতে হবে সার্কুলার মোশনেও। ক্লকওয়াইজ, তারপর অ্যান্টিক্লকওয়াইজ। তৃতীয় এক্সারসাইজটি পরিচিত টো স্প্রেডারস নামে। একটা ইলাস্টিক ব্যান্ড বা হেয়ার টাই নিয়ে পায়ের আঙুলে পেঁচিয়ে নিতে হবে। তারপর আঙুলগুলো ছড়িয়ে নিয়ে ধরে রাখতে হবে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড। এভাবে ১০ বার করে নিতে হবে। হিল পরার ইচ্ছা থাকলে নিয়মিত এই এক্সারসাইজগুলো করে নিলে হাঁটতে যেমন আরাম হবে, তেমনি দীর্ঘ সময় হাঁটার পরও পায়ে স্বস্তি মিলবে।
এক্সট্রা এসেনশিয়াল
শুধু হিল থাকলেই তা পরে দিন থেকে রাত পার করে দেওয়া যাবে, ব্যাপারটা একদমই তেমন নয়। প্রস্তুতির পাশাপাশি কিছু বাড়তি জিনিস হাতের নাগালে থাকলে পুরো অভিজ্ঞতাটা আরামদায়ক হবে। যেমন জেল ইনসোল, ব্লিস্টার প্যাড, অ্যান্টিফ্রিকশন স্টিক।
লো টু হাই
প্রথমে স্বস্তিদায়ক উচ্চতার হিল দিয়ে শুরু করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ট্রায়াল এবং এরর এ ক্ষেত্রে খুবই স্বাভাবিক। একবার কম উচ্চতার হিলে হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে পরে স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
প্র্যাকটিস
টেস্ট রান জরুরি হিল জুতারও। বিভিন্ন সারফেসে হেঁটে অনুশীলনটা সেরে নিতে হবে। কার্পেট থেকে কংক্রিট কিংবা উডেন সারফেসে আগে থেকে হেঁটে নেওয়া চাই এ ক্ষেত্রে। ঘর পরিষ্কারের সময় হিলে হেঁটে কাজটা সারার পরামর্শ দেন অনেক স্টাইলিস্ট। এ ছাড়া শুধু ঘরেই নয়, সামনে রাস্তাতেও যদি একটু হেঁটে নেওয়া যায়, মন্দ হবে না। সঙ্গে সিঁড়িতে উঠে নেমেও পরীক্ষা করে নেওয়া যায় ব্যালেন্স। এতে প্র্যাকটিসটাও হবে, বোঝাও যাবে পায়ের কোথায় বিঁধছে হিল।
প্রাইস পয়েন্ট
ডিজাইনার শু দেখতেই শুধু চমৎকার নয়, পরতেও আরামদায়ক—এ ধারণা সব সময় ঠিক নয়। যেকোনো দামেই ভালো মানের হিল পাওয়া সম্ভব। তাই ট্রায়াল দিয়ে জুতার ফিটিং ভালো করে বুঝে নেওয়া প্রয়োজন আগে থেকেই। ম্যাটেরিয়াল, হিলের ফ্লেক্সিবিলিটি, বাঁক—সব বুঝে তবেই বেছে নিতে হবে। অনলাইন রিভিউও পড়ে নেওয়া যায় কেনার আগে। দাম কম হোক বা বেশি, হিল কেনার ক্ষেত্রে আরামটাই মুখ্য।
চলতে চলতে
হিলে হাঁটার সময় পুরো পায়ের পাতা নয়, প্রথমে গোড়ালির অংশ ফেলতে হবে মাটিতে। তারপর ভর দিতে হবে আঙুলে। এতে হাঁটাটা স্বাভাবিক দেখাবে। হিল পরে ছোট ছোট কদম ফেলতে হবে। তাড়াহুড়া করে নয়, ধীরে ধীরে। এতে আত্মবিশ্বাসীও দেখাবে। হাঁটার সময় একটা সমান্তরাল রেখা চিন্তা করে পা ফেলা যায়। এতে গ্রেসফুল দেখাবে। কুঁজো হয়ে নয়, হাঁটার সময় বডি পশ্চার যেন একদম সোজা থাকে। হিলে হাঁটা ছাড়াও এতে দাঁড়ানোর সময় সতর্ক থাকা জরুরি। এ ক্ষেত্রে দেহের ভর গোড়ালির ওপর থাকলেই ভালো।

 অর্চনা সাহা
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top