skip to Main Content

ফিচার I স্লিপ ইন

ফাংশনাল থেকেও ফ্যাশনেবল হয়ে ওঠা এ পোশাক বেসিকের বাউন্ডারি পেরিয়েছে সেই নব্বইয়েই। মিলেনিয়ালদের মাতানো শেষ, এবার পালা জেনজিদের

শুরুতে স্লিপ ড্রেস পরা হতো পোশাকের ভেতরে। গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকে এমন সব ড্রেস আর স্কার্টের সঙ্গে। স্বচ্ছ পোশাকে বাড়তি কাভারেজের জন্যও বেছে নেওয়া হতো স্লিপ ড্রেস, শেপওয়্যারের মতো করে। কখনো লঞ্জারে, কখনোবা লাউঞ্জওয়্যার কিংবা কখনো রাতে পরে শোবার পোশাকব্যস, এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিল স্লিপ ড্রেসের ব্যবহার।

তবে নব্বইয়ে এসে ভোল পাল্টাতে শুরু করে। স্লিপ ড্রেসের স্টাইলিং নিয়ে শুরু হয় নানান নিরীক্ষা। স্টাইলিস্ট আর ডিজাইনাররা অনুধাবন করতে শুরু করেন, এ পোশাক একাই পুরোদস্তর আউটফিট হয়ে ওঠার যোগ্য। তাতে তাল মেলান হলিউডের সেলিব্রিটিরা। রেড কার্পেট কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে রাতের পার্টিতাদের দেখা মিলতে শুরু করে স্লিপ ড্রেস পরনে। উয়িননা রাইডার, সারাহ জেসিকা পার্কার, কেট মস আর ইমানের মতো তারকারা রয়েছেন এ তালিকায়। ফলে মেইনস্ট্রিম ফ্যাশনে যুক্ত হয় স্লিপ ড্রেসের নাম। মিডি লেন্থ, ভি নেক, চিকন স্ট্র্যাপের বেসিক সিলুয়েটে জুড়তে থাকে নতুন নতুন নকশা। কাউল নেক, বায়াস কাট ছাড়াও দৈর্ঘ্যের হেরফেরে কখনো মিনি তো কখনো ম্যাক্সি লেন্থের হয়ে ওঠে স্লিপ ড্রেস। লেসের ট্রিমও যোগ হয় এমবেলিশমেন্ট হিসেবে। সিল্ক ও স্যাটিনে তৈরি ক্ল্যাসিক স্লিপ ড্রেসগুলো সাধারণত কালো, আইভরি আর শ্যাম্পেইন রঙা হলেও নব্বইয়ে এতে যোগ হয় জুয়েল টোনের সব শেড আর কালার প্যালেটের উজ্জ্বল সব রং।

আর এ বছরের শুরু থেকেই তো নব্বই তার অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছে ফ্যাশন ট্রেন্ডে। তাতে আইকনিক স্লিপ ড্রেস থাকবে না, তা কী করে হয়? সহজে পরিধানযোগ্য, দেখতে দারুণ আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার সেলিব্রিটি অ্যাপ্রুভড। প্রমাণ, খোদ তারকা সংগীতশিল্পী রিহানা। নিউইয়র্ক সিটি নাইট আউটে তাকে দেখা গিয়েছিল লেইসি ব্ল্যাক স্লিপ ড্রেসে। তার সপ্তাহখানেক বাদেই অভিনেত্রী লরা হ্যারিয়ারকে দেখা গিয়েছিল ক্রিম রঙা স্যাটিন স্লিপ ড্রেসে। জেনিফার ক্লেইনের ডে অব ইনডালজেন্সের পার্টিতে। আর সম্প্রতি সুপার মডেল বেলা হাদিদের বরাতে ফ্যাশনসচেতনদের বোঝা হয়ে গেছে, সিম্পল স্লিপ ড্রেস এখন ওয়্যারড্রোবের মাস্ট হ্যাভ আইটেম। মিনিমালিস্ট ধাঁচের হওয়ায় এ পোশাক দিয়ে ড্রেস আপ বা ডাউনদুইই সম্ভব। নির্দিষ্ট কোনো ঋতুতে নয়, পরা যাবে বছরভর। হোক তা শীতে সোয়েটারের সঙ্গে ক্যাজুয়াল ওয়্যার হিসেবে কিংবা সঠিক গয়নার সঙ্গতে সেক্সি ফরমাল লুকে। স্লিপ ড্রেসের সঙ্গে হিল যেমন জুতসই, মানাবে স্লাইড স্যান্ডেলও। পারফেক্ট ব্রাঞ্চ লুক চাই? টিশার্টের ওপরে স্লিপ ড্রেস গলিয়ে নিলেই চলবে। সঙ্গে পায়ে থাকুক স্নিকার। বিদ্রোহী ব্যক্তিত্বের হলে স্লিপ ড্রেসের সঙ্গে লেদার জ্যাকেটে হবে তার পরিপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ। রোমান্টিক ডেট নাইট লুকের জন্যও স্লিপ ড্রেস চমৎকার অপশন। চোখ ঝলসানো উজ্জ্বল রং কিংবা ক্ল্যাসিক নিউট্রাল শেডদুই ধরনের স্লিপ ড্রেসই চলবে এ ক্ষেত্রে। আরামের সঙ্গে আপোস না করে অনায়াসে স্টাইলিশ লুক তৈরি করা যায় বলে এই পোশাক পরিণত হয়েছে বর্তমান প্রজন্মের ওয়্যারড্রোব এসেনশিয়ালে।

স্লিপ ড্রেস স্টাইলিংয়ে অপশনের কমতি নেই। ব্যক্তিত্ব তো বটেই, এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে ঋতু আর উপলক্ষ। নজর দিতে হবে অনুষঙ্গেও। সবের মিশেলেই তৈরি হবে পারফেক্ট লুক।

মিড লেন্থ অথবা মিনি স্লিপ ড্রেস বছরের গরম দিনগুলোতে আরাম জোগাবে। এর পাতলা, ফ্লোয়ি ফ্যাব্রিক আর খোলামেলা নেকলাইনের কারণে। ক্ল্যাসিক লুকের জন্য সাদা টিশার্টের ওপর চাপিয়ে নেওয়া যায় স্লিপ ড্রেস। সঙ্গে সাদা স্নিকার বা স্ট্র্যাপি স্যান্ডেলদুইই সই। সঙ্গে একটা ডেনিম জ্যাকেট, ব্লেজার বা কার্ডিগান রাখা যায়। চটজলদি লুকে এক্স ফ্যাক্টর যোগে।

ঠান্ডার দিনগুলোতেও স্লিপ ড্রেস কিন্তু পরে নেওয়া যাবে অনায়াসে। শুধু সঙ্গে যোগ করতে হবে পছন্দসই সোয়েটার আর টাইটস। এ ক্ষেত্রে সোয়েটার দুভাবে পরা সম্ভব। লং স্লিভ অথবা টার্টলনেক সোয়েটারের ওপর স্লিপ ড্রেস পরে নেওয়া যায়। অথবা স্লিপ ড্রেসের ওপর কাউল নেক সোয়েটার পরে নেওয়া যায়। তখন স্লিপ স্কার্টের মতো দেখাবে আউটফিট।

অফিস অ্যাপ্রোপ্রিয়েট ক্যাজুয়াল লুকেও স্লিপ ড্রেস মানানসই। সঙ্গে পরার জন্য থাকুক ওভারসাইজড ব্লেজার আর ওয়েস্টার্ন বুট। মোটো বুটও মন্দ দেখাবে না। পায়ে গলিয়ে নেওয়া যেতে পারে হিলড মিউল অথবা চাঙ্কি স্নিকার। আর স্লিপ ড্রেসের ভেতরে শিয়ার টার্টল নেক টপ পরে নিলে অফিসে অস্বস্তি হবে না।

লুকে দেশি টাচ দিতে চাইলে স্লিপ ড্রেস দিয়ে সেটাও সম্ভব। সে ক্ষেত্রে এর সঙ্গে পছন্দসই বটম বেছে নিলেই চলবে। হতে পারে তা শারারা, ঘারারা, পার্টিয়ালা স্টাইল প্যান্ট, পালাজো কিংবা সটান সোজা সিগারেট প্যান্ট। সঙ্গে মানানসই ওড়না। অ্যাকসেসরিজটাও হওয়া চাই মানিয়ে। লেয়ারড নেকলেস, ব্রেসলেট, স্টেটমেন্ট ইয়াররিং থাকতে পারে তালিকায়। সঙ্গে মানানসই হিলে পারফেক্ট ড্রেসিং ফিল মিলবে।

জাহেরা শিরীন

মডেল: তৃণ

মেকওভার: পারসোনা

ওয়্যারড্রোব: সিকোসো

ছবি: ক্যানভাস ও ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top