বিশেষ ফিচার I টিকটক ফ্যাশন ট্রেন্ড #ফ্যাশনটক
ফ্যাশনের নতুন ট্রেন্ড, আর ফ্যাশন নিয়ে নানান পরামর্শ জানতে মানুষ এখন বেছে নিচ্ছেন টিকটক। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা ব্যক্তিগত স্টাইলকে তুলে ধরছেন এখানে #FashionTok-এর মাধ্যমে। বলা যায়, ফ্যাশনকে কেন্দ্র করে টিকটক একটি হাব হয়ে উঠেছে অনেকের কাছে।
বাংলাদেশি আট তরুণ ফ্যাশন আইকন টিকটকে নিজস্ব ফ্যাশনকে তুলে ধরে নজর কাড়ছেন অসংখ্য ফলোয়ারের। টিকটকের স্টাইলিশ এই আটজন ফ্যাশন আইকন কথা বলেছেন আমাদের আজকের আয়োজনে
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সালেক বিন তাহের
আয়মান সাদিক
যদিও আয়মান একজন এডুকেটর হিসেবে সবার কাছে পরিচিত, তবু মানুষ তার ফ্যাশনের ধরনের জন্য তাকে একজন ফ্যাশন আইকন হিসেবে অনুসরণ করেন। পাঞ্জাবি ও কুর্তির মতো ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরার কারণে তার অনুসারীরা তাকে পছন্দ করেন। অন্য ধাঁচের পোশাক পরতেও তাকে দেখা যায়, তবে দেশি পোশাকেই বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেন। গরম আবহাওয়ার কারণে তিনি পছন্দ করেন সুতি আর লিনেন কাপড়। যেহেতু ঈদ ঘনিয়ে আসছে, তাই দেখে নেওয়া যাক টিকটকে তার ঐতিহ্যবাহী ফ্যাশন স্টাইল।
কনটেন্টের প্ল্যাটফর্মে কাজ করার শুরু থেকেই আয়মান সাদিক পোশাক হিসেবে পাঞ্জাবি পরে আসছেন। তার মতে, এ পোশাকের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, অফিস, ফটোশুট, বিয়ে, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান—সকল ক্ষেত্রেই সহজে মানিয়ে যায়। ছোটবেলায় কালো রং খুব পছন্দের হলেও বর্তমানে মাইল্ড ও নুড কালারে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করেন আয়মান। তবে ক্ষেত্রবিশেষে কালারফুল পাঞ্জাবিও পরেন। এবারের ঈদে পোশাক ভাবনা সম্পর্কে জানালেন, লাক্সারি নয়, সব সময়ের মতো সিম্পল, মিনিমালিস্টিক পাঞ্জাবিতেই নিজেকে সাজাবেন।
আয়মান সাদিকের বিশ্বাস, কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নির্দিষ্ট কোনো প্ল্যাটফর্মে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। ভবিষ্যতে টিকটকে ফ্যাশনের পাশাপাশি এডুকেশন কনটেন্ট বা এডুটেইনমেন্টের একটি বিশাল লাইব্রেরি তুলে ধরার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। আয়মান সাদিকের ফ্যাশন স্টাইল সম্পর্কে আরও জানতে তাকে ফলো করুন টিকটকে: www.tiktok.com/@aymansadiq10।
হৃদি শেখ
ফলোয়ারদের প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন নাচের মুদ্রায় মুগ্ধ করেন হৃদি শেখ। এই নৃত্যশিল্পী একসময় টিকটকে ঢুঁ মেরেছিলেন নতুনকে জানার উদ্দেশ্যে। আর এখন তিনি নিজেই দেশের প্রফেশনাল ড্যান্সার জগতে পরিচিত নাম। ফ্যাশনসচেতন হিসেবেও কুড়িয়েছেন সুনাম। বাংলাদেশের বাইরে বেড়ে ওঠার সুবাদে নিজের দেশের পাশাপাশি অন্যদের পোশাকসংস্কৃতি সম্পর্কেও জেনেছেন। ফিরে এসে আগ্রহী হয়েছেন ফিউশনে। সমৃদ্ধ ফ্যাশন সেন্সে হাজির হয়েছেন টিকটকের ফলোয়ারদের সামনে।
ফিউশন হলো আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী স্টাইলের মিশ্রণ। হৃদি শেখ এটিকে তার নাচের ক্ষেত্রে এবং নিজের ফ্যাশনের ধরনে তুলে ধরেছেন। তার পরিধান করা কোট ও প্যান্ট ফিউশন তৈরি করার পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্যগত দিককেও তুলে ধরে। সাধারণত স্থানীয় জায়গা থেকেই তিনি তার সাজপোশাকের সামগ্রী কিনে থাকেন। তার জ্যাকেটের পোশাকের মধ্যে ডিজাইন করা আমাদের জাতীয় ফুল শাপলার মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে পোশাকে দেশীয় ছাপ, যেটি তিনি তুলে ধরেছেন আধুনিক স্টাইলে।
হৃদির দর্শকেরা পরিচিত হয়েছেন ওয়েস্টার্ন আর ট্র্যাডিশনালকে ব্লেন্ড করে কীভাবে ট্রেন্ড সেট করতে হয়। তিনি ফ্যাশন ফরোয়ার্ড। তাই এগিয়ে থাকেন ফ্যাশনের চলমান ধারার গতি থেকে। তার কনটেন্ট তৈরিতে ফ্যাশনও পায় গুরুত্ব। কোন পোশাকে হাজির হবেন, কেমন হবে অ্যাকসেসরিজ, মেকআপে কোন লুক—এসবের পরিকল্পনা আগেই করেন। মূল চিন্তার সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করেন নিজেকে। করেন বিভিন্ন ধরনের নিরীক্ষা।
হৃদি শেখ পোশাক ও মেকআপ—দুই ক্ষেত্রেই এক্সপেরিমেন্টে বিশ্বাসী। ঈদে বিশেষ কনটেন্ট প্ল্যান করেছেন। সেখানে দর্শকেরা তাকে পাবেন আনকোরা লুকে। টিকটক ফলোয়ারদের উদ্দেশে হৃদি বলেন, ‘নতুনের সঙ্গে পরিচয়ে আগ্রহী হলে ক্ষতি নেই; বরং এগিয়ে যাওয়া যায়। নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন এবং কাজে মনোযোগী হওয়া জরুরি। তাহলেই পাওয়া সম্ভব যোগ্য মর্যাদা।’ হৃদি শেখের মতো মেকআপ লুক বা পোশাকের ডিজাইন তৈরি করতে তাকে ফলো করুন টিকটকে:www.tiktok.com/@ridysheikh।
টুইংক কেরল
টিকটকে টুইংক কেরলের কনটেন্টে রয়েছে নানা রকমের ভিডিও। এর মধ্যে ড্যান্স, আউটফিট ট্রানজিশন ও ফ্যাশন রিলেটেড কনটেন্ট এখন বেশি। কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে ইন্দো-ওয়েস্টার্ন স্টাইল ফলো করেন টুইংক, যেটাকে বাংলা-ওয়েস্টার্ন পোশাক বা ফিউশন বলা যেতে পারে। পছন্দ করেন মেড কালার পরতে। ব্রাইট কালার তেমন পছন্দ না করলেও কনটেন্টের চাহিদা অনুযায়ী অনেক সময় কালারফুল রঙে আস্থা রাখেন। বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরির জন্য কিংবা নাচের প্রয়োজনে তিনি কালারফুল কাপড় পরে থাকেন। তবে লাল, কালো, সাদা তার সবচেয়ে প্রিয় রং। কনটেন্টে নিজের ভালো লাগার বিষয়বস্তুকে প্রাধান্য দেন। কমেন্ট সেকশনে চেষ্টা করেন ফলোয়ারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার। এ ছাড়া লাইভে আসেন অথবা প্রশ্ন-উত্তর গেম খেলেন, ফলোয়ারদের চাহিদা মাথায় রেখে।
টিকটকে টুইংককে দেখে যারা অনুপ্রাণিত, তাদের প্রতি তার পরামর্শ হচ্ছে, ‘ওয়েস্টার্ন বা দেশি—যেকোনো ঘরানার ফ্যাশনকে নিজের মতো করে উপস্থাপন করা যায়। তবে সেটি হতে হবে মানানসই। আর পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সময় ও স্থান বিবেচনা করা সবচেয়ে জরুরি।’ নাচের ভিডিও বেশি করেন বলে ট্রানজিশন ভিডিও করার সময়েও তিনি চেষ্টা করেন নাচকে প্রাধান্য দেওয়ার।
আসন্ন ঈদ মাথায় রেখে বিশেষ কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তার। ঈদে ইন্সপো মেকআপ লুক ট্রাই করবেন। সেখানে নিজের পছন্দের ব্যাপারও যোগ করবেন কিছুটা। ঈদে অন্য সবার চেয়ে ভিন্নধর্মী ড্রেস সিলেকশনের চেষ্টা করবেন বরাবরের মতো। প্রতিদিনের ফ্যাশনে আর বিশেষ সময়ে টুইংকের স্টাইল কেমন হয়ে থাকে, সেটি জানতে তাকে ফলো করুন টিকটকে: www.tiktok.com/@twinoo0।
হামজা খান শায়ান
নেটিজেনরা ফ্যাশন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবেই হামজাকে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু এখন তিনি তরুণ থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী পর্যন্ত সবার কাছে ফ্যাশন আইকন হয়ে উঠেছেন। তার ফ্যাশন সেন্স গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে সবার কাছে। আর এ ধরনের কনটেন্ট বানানোতেই স্বচ্ছন্দবোধ করেন তিনি। কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রায় প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব ফ্যাশন স্টাইল। সে ক্ষেত্রে হামজার ফ্যাশন স্টাইল কেমন?
হামজা বেশির ভাগ সময় আউটফিটে ফোকাস করেন। আগে ট্রানজিশন ভিডিও করলেও, সেটিকে কীভাবে স্টাইলিং করা যায়, তা নিয়ে যথেষ্ট মেধা খাটান। জুতা, অ্যাকসেসরিজ থেকে শুরু করে ফুল আউটফিটের প্রতিটি ডিটেইল নিয়ে ভাবতে হয় তাকে। কনটেন্টের চাহিদা অনুযায়ী ক্যাজুয়াল কিংবা ফরমাল যেকোনো আউটফিট বেছে নেন। সাদা-কালো পছন্দের কালার হলেও কনটেন্ট বানাতে কালারফুল ব্যাপারটাতেই তার আস্থা। এ ছাড়া ঋতুভেদে রঙে আনেন বৈচিত্র্য। গ্রীষ্মে কালারফুল, আর শীতে বেছে নেন ডার্ক কালার। টিকটকে ওয়ান-টু-ওয়ান কমিউনিকেশন করার প্রচেষ্টা থাকে হামজার। কমেন্টে নিজের কনটেন্ট সম্পর্কে নানা তথ্যের পাশাপাশি রাখেন ব্যক্তিগত প্রশ্নও। ফলে টিকটকে তার জার্নি বা স্ট্রাগল স্টোরি সম্পর্কে ফলোয়াররা জানতে পারেন।
হামজার যেসব ফলোয়ার তাকে দেখে টিকটক করতে আগ্রহী, তাদের প্রতি তার পরামর্শ হচ্ছে, এখানে স্বতন্ত্র হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। এবারে ঈদে তীব্র গরম থাকার একধরনের শঙ্কা রয়েছে, সেই অনুযায়ী আউটফিট নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তার মতে, সম্প্রতি কাবলি পাঞ্জাবির ট্রেন্ড আবার ফিরে এসেছে। তাই কাবলি পাঞ্জাবি পরবেন নিজেও। কাবলি নিয়ে ঈদে কনটেন্ট বানানোর পরিকল্পনার কথা জানালেন, যা দেখে তার ঈদ ফ্যাশন ও স্টাইল সম্পর্কে ফলোয়াররা একটি সম্যক ধারণা পাবেন বলে বিশ্বাস করেন। ঈদে হামজার ফ্যাশন নিয়ে আরও জানতে ঘুরে আসতে পারেন তার টিকটক অ্যাকাউন্টে। হামজা তার ফ্যাশনে কখন এবং কী ধরনের নতুন পরিবর্তন নিয়ে আসছেন, তা জানতে তাকে ফলো করুন:www.tiktok.com/@hamzakhanshayan।
সৌমিক আহমেদ
টিকটকে সৌমিকের যাত্রা শুরু মূলত বিভিন্ন গানের সঙ্গে লিপসিং করা দিয়ে। অন্য আন্তর্জাতিক ও দেশীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দেখে নিজেকে এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিষ্ঠা করার প্রেরণা লাভ করেন। তার কনটেন্টের টপিক মূলত লাইফস্টাইল ঘিরে। বন্ধুদের সঙ্গে সময় যাপন, ভ্রমণের মুহূর্ত, প্র্যাঙ্ক ভিডিও, ট্রেন্ডি—নানা বিষয় উঠে আসে তার কনটেন্টে।
সৌমিক এখন ফ্যাশন আইকন হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। টিকটকের বাইরে তিনি অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও জনপ্রিয়। কনটেন্ট নির্মাণের সময় ফ্যাশন ফলো করার ক্ষেত্রে কমফোর্টকে অগ্রাধিকার দেন। অন্য কারও স্টাইল বা ট্রেন্ড ফলো করার পক্ষপাতী একদম নন। নিজেকে সুন্দর ও প্রেজেন্টেবল লাগানোই মুখ্য এখানে। ঘড়ি ও জুতা সংগ্রহ করা তার শখ। জুতার ক্ষেত্রে পছন্দের ব্র্যান্ড অ্যাডিডাস। হলুদ, লাল ও সবুজের মতো লাইভলি কালার পছন্দ; তবে সাদা-কালোর প্রতি রয়েছে অন্য রকম ভালো লাগা। তিনি প্রায়শই ঢিলেঢালা শার্ট পরে থাকেন। কখনো কখনো শার্টের ধরনের ওপর নির্ভর করে শার্টের ভেতরে আরও কিছু পরবেন কি না। রঙিন ও প্লেন এক রং—দুই রকম শার্টই তিনি পরে থাকেন। আর সঙ্গে পরতে পছন্দ করেন মানানসই বিভিন্ন জুতা। আবার ভ্রমণের সময় তার পোশাক হয় ভিন্নধারার, যা পরতে আরামদায়ক হয়ে থাকে।
টিকটকে ফলোয়ারদের সাইকোলজি বুঝতে পারাটা সৌমিকের কাছে বেশ গুরুত্ববহ; পাশাপাশি নিজ থেকে টার্গেট অডিয়েন্স ঠিক করাটাও। তাই ফিল্টার করে নিজের টার্গেট ফলোয়ার ঠিক করেন তিনি। আর হ্যাঁ, নিশ কনটেন্ট পছন্দ তার। টিকটকে কেউ কাজ করতে চাইলে, তার প্রতি সৌমিকের পরামর্শ, ‘ফলো ইয়ুর ইন্সটিঙ্কট’। তার মতে, অন্যকে ফলো করে দীর্ঘ মেয়াদে সফল হওয়া সম্ভব নয়।
সৌমিক একজন উদ্যোক্তাও। ঈদের পরিকল্পনায় রয়েছে নিজের পাঞ্জাবি ব্র্যান্ডের কাজকে বেগবান করা। মূলত ঈদে তিনি যে ধরনের পাঞ্জাবি পরেন, সেগুলো তার নিজস্ব ব্র্যান্ড থেকে বানানোর চেষ্টা করছেন। সিম্পল ও মিনিমালিস্টিক কাজের পাঞ্জাবি তার পছন্দ। এবারের ঈদে সম্পূর্ণ কাপড় জুড়ে কাজ করা পাঞ্জাবি ও শেরওয়ানি পরার ইচ্ছে রয়েছে বলে জানান তিনি। ঈদের মতো বিশেষ দিনে সৌমিক কেমন স্টাইল পছন্দ করেন, তা নিয়ে আরও জানতে তাকে ফলো করুন টিকটকে: www.tiktok.com/@shoumikahmed।
রথি আহমেদ
বন্ধুদের সঙ্গে এক আনন্দঘন মুহূর্তে নিজের প্রথম টিকটক কনটেন্ট তৈরি করেছিলেন রথি। তখন অবশ্য ভাবেননি, এখানে নিয়মিত হবেন। অথচ এখন তুমুল জনপ্রিয়। কনটেন্টের টপিক হিসেবে বেছে নেন ফ্যাশন ও বিউটি, পাশাপাশি লিপসিং ভিডিও করেন। ফ্যাশন নিয়ে কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন হিজাবের স্টাইলিং। মডেস্ট ফ্যাশন নিয়ে আগ্রহী এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর চেষ্টা করেন সময় উপযোগী হিজাব স্টাইল তৈরি করতে।
বর্তমান ফ্যাশনের একটি অংশ হয়ে উঠেছে হিজাব। পশ্চিমা, ফরমাল কিংবা দেশি—যেকোনো ধরনের পোশাকের সঙ্গেই মেয়েরা হিজাব পরছেন। হিজাবের ক্ষেত্রে রথি কনট্রাস্ট রং অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। এতে সম্পূর্ণ পোশাকটি নজর কাড়ে। তিনি পছন্দ করেন একরঙা হিজাব এবং মনে করেন বিভিন্ন পোশাকের সঙ্গে পরার জন্য পিচ, বাদামি, নীল, ছাই, কালোর মতো অন্তত পাঁচটি রঙের হিজাব থাকা দরকার। হিজাবের ব্রোচ বা পিনের ক্ষেত্রেও তিনি পছন্দ করেন ভিন্নতা, যেখানে ব্যবহার থাকে পাথর বা মুক্তার।
আসছে ঈদের আবহাওয়ায় রোদ ও তাপের দাপট থাকবে। তাই তিনি সামার ফ্রেন্ডলি লুক নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন। ফুল কাভারেজ, উইদ অ্যাকসেসরিজ, পার্টি হিজাব নিয়ে কনটেন্ট পাওয়া যাবে রথির টিকটক হ্যান্ডেলে। ফলোয়ার হিসেবে বিশেষত স্কুল গোয়িং গ্রুপ পেয়েছেন তিনি। কনটেন্ট তৈরির সময় তাদের কথা বিশেষভাবে মাথায় রাখেন। ফলোয়ারদের প্রতি তার পরামর্শ ঈদের সময়ে আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আরামদায়ক ফ্যাব্রিক বেছে নেওয়ার। ইনার ক্যাপ ও হিজাব—উভয় ক্ষেত্রেই কাজ করবে এই টিপস। রঙের ক্ষেত্রে লাইট শেডগুলো বেশ মানাবে। বেছে নেওয়া ভালো ইজি মেকআপ টিউটরিয়াল। যেন ব্যস্ততার মধ্যেও সহজে মনমতো সাজা যেতে পারে। রথি নিজেও কুইক মেকআপে আগ্রহী। রথি আহমেদ ফ্যাশন-স্টাইল নিয়ে আরও কী ভাবছেন, সেটি জানতে ঘুরে আসতে পারেন তার টিকটক প্রোফাইলে: www.tiktok.com/@rotheyahmed।
রাজিক
ম্যাজিক নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন রাজিক। জাদু দেখিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন ফলোয়ারদের। প্রোফাইলে তার ফলোয়ার ৫৯৮ দশমিক ৫ হাজার। করোনা অতিমারির সময়ে টিকটকে যাত্রা শুরু। ঘরবন্দি দর্শকদের হাজারো দুশ্চিন্তার মাঝে বিনোদন দেওয়ার উদ্দেশ্যে। তাকে যারা অনুসরণ করেন, তাদের একমুহূর্তের হাসি উপহার দিতে কাজ শুরু করেছিলেন রাজিক।
বিদেশে থাকাকালে তিনি স্যুট, ওয়েস্টার্ন আর ফরমাল পোশাক বেশি পরতেন। দেশে ফিরেও এই স্টাইল ধরে রেখেছেন। অনেকে সাধারণত স্যুটের সঙ্গে টাই পরে থাকেন; কিন্তু রাজিক সাধারণ টাইয়ের পরিবর্তে বো-টাই আর সঙ্গে মাথায় হ্যাট যোগ করে তার পোশাকে পার্থক্য দেখিয়েছেন বিশেষভাবে, যা প্রাত্যহিক কাজে বা অফিসেও পরিধান করা যায়। তিনি স্যুট ছাড়াই শার্ট ও প্যান্ট ফরমাল স্টাইল হিসেবে পরে থাকেন। তার ফ্যাশন এটি দেখায় যে, কীভাবে শুধু একটি টাই এবং সঙ্গে ঘড়ি পুরো পোশাককে কোনো ডিনার পার্টির জন্য উপযুক্ত করতে পারে। আবার অভিনব প্রোগ্রামের জন্য ভিন্নতা আনতে সঙ্গে থাকতে পারে বো-টাই ও টুপি।
রাজিকের ম্যাজিক দেখানোর শুরু অবশ্য ছেলেবেলায়। দর্শকেরা চমকে যেতেন তার ম্যাজিকে। ট্র্যাডিশনাল ম্যাজিশিয়ানদের মতো জাদুকরের জোব্বাতে নয়, তিনি দর্শকের সামনে আসেন সাধারণ বেশে। ক্ল্যাসিকের কমফোর্ট নিয়ে। স্মার্ট ক্যাজুয়ালে খুঁজে পান নিজেকে। ফুটওয়্যারে বুট রাজিককে দেয় আত্মবিশ্বাস। তার প্রিয় রং সাদা আর কালো। রেগুলার ওয়ার্কআউট করেন। হেলথ কনশাসনেসের পাশাপাশি ফ্যাশন নিয়েও ভাবেন। বিশ্বাস করেন ফার্স্ট ইমপ্রেশনের গুরুত্বে। প্রথমবারের দেখায় নিজেকে তুলে ধরার বিষয়ে মনোযোগী হতে পরামর্শ দিলেন ফলোয়ারদের। ট্রেন্ডের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলা রাজিক মিক্স অ্যান্ড ম্যাচে আগ্রহী। তাই শপিং করেন ভেবেচিন্তে। একের সঙ্গে আরেককে মিলিয়ে তৈরি করে নেন নিজের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। রাজিক তার দৈনন্দিন জীবনে আরও কী ধরনের স্টাইল ফলো করছেন, সেটি দেখতে ফলো করুন তার টিকটক অ্যাকাউন্ট: www.tiktok.com/@magic.razik।
নওরীন আফরোজ পিয়া
৭ দশমিক ১ মিলিয়ন ফলোয়ার নিয়মিত টিকটকে অপেক্ষায় থাকেন নওরীনের ভিডিও দেখার জন্য। নিজের অনুসারীদের ফলোয়ার নয়, ফ্যামিলি মনে করেন নওরীন। ২০১৮ সালে প্রতিদিনের জীবনযাপনের চেনা বিষয়গুলো নিয়ে মজার ছলে কনটেন্ট বানানো শুরু করেছিলেন। মূলত দুই ধরনের বিষয় নিয়ে টিকটকে যাত্রা শুরু তার। ডেইলি ভ্লগ ও লিপসিং। বর্তমানে তিনি ফুড, কুকিং আর লাইফস্টাইল রিলেটেড টপিক যোগ করছেন।
কিন্তু মানুষ নওরীনের ফ্যাশন সেন্সের জন্যও তাকে টিকটকে ফলো করেন। শাড়ি, কুর্তি, কামিজের মতো দেশি পোশাক পরায় তাকে পছন্দ করেন তার অনুসারীরা। তার দারুণ লম্বা চুলে তিনি খোঁপা আর বেণির মতো নানান হেয়ারস্টাইল করে থাকেন। কামিজ ও কুর্তির মতো পোশাকের সঙ্গে পরতে পছন্দ করেন কানে বড় দুল। আর শুধু কামিজের ক্ষেত্রে গলায় কোনো অলংকার না পরাটাই ভালো মনে করেন তিনি।
নওরীন টিকটকে বেশির ভাগ সময়ে শাড়ি পরে হাজির থাকেন। পাশাপাশি সালোয়ার, কামিজ, ওড়নাতেও দেখা যায় তাকে। তবে এককথায় শাড়িপ্রেমীই বলা যেতে পারে তাকে। দেশি তাঁতে বোনা শাড়ি, হাতভর্তি চুড়ি আর কানে স্টেটমেন্ট ইয়াররিংস। সরল সৌন্দর্যে বিশ্বাসী তিনি। তাকে দেখে উৎসাহিত যারা, তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি দর্শকের সামনে সব সময় মার্জিত পোশাকে আসি। কারণ, আমি মনে করি, আমাকে যারা পছন্দ করবেন, তারা আমার স্টাইলিং দেখে সেভাবে নিজেকে সাজাতে আগ্রহী হতে পারেন। তাদের সাজসজ্জার দায় তাই আমার ওপরেও খানিকটা বর্তায়। পোশাকে সবার আগে শাড়ি বেছে নিই। বেসিক কালার শাড়ির পাড়ের অলংকরণ আমাকে মুগ্ধ করে। সঙ্গে ব্লাউজের ক্ষেত্রে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচে আগ্রহী। অতিরঞ্জনে অনাগ্রহ।’
আসন্ন ঈদে টাটকা তাঁতের শাড়ি, মিনিমালিস্ট সাজ আর নিজের সৌন্দর্যের উচ্ছলতায় মেতে ওঠার পরামর্শ নওরীনের। অচিরেই ঈদ উপলক্ষে বিশেষ কনটেন্ট নিয়ে টিকটকে হাজির হবেন। ঈদের সাজ, বিশেষ রান্না—সবই থাকবে সেখানে। হেয়ারস্টাইল বা পোশাকের ক্ষেত্রে নওরীনের সাজের ধরন নিয়ে আরও জানতে তাকে ফলো করতে পারেন টিকটকে: www.tiktok.com/@noureenafrosepiya22।
এই ইনফ্লুয়েন্সাররা আমাদের ফ্যাশন সেন্সকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে! তাদের স্টাইল দেখে আমিও অনুপ্রাণিত হয়ে পড়লাম।
ওহ্, এই ইনফ্লুয়েন্সাররা আমাদের ফ্যাশন সেন্সকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে! তাদের স্টাইল দেখে আমিও অনুপ্রাণিত হয়ে পড়লাম।