সঙ্গানুষঙ্গ I অফবিট অন পয়েন্ট
কোনো রুলবুক মেনে নয়, স্টেটমেন্ট তৈরিতে এখন কদর বেড়েছে অপ্রচলিতের। কখনো ব্যাকওয়ার্ড, কখনো সাইডওয়ে, তো কখনো আপসাইড ডাউন। চেনা অনুষঙ্গের এমন অজানা রূপ যেন অভিব্যক্তি প্রকাশের ভঙ্গিই পাল্টে দিয়েছে আপাদমস্তক
কারণ, সংগতিতে সহমত কমেছে ফ্যাশনিস্তাদের। ব্যক্তিত্বের প্রকাশক হিসেবে ফ্যাশনকে ব্যবহারে বরং বেশি পছন্দ করা হচ্ছে ইদানীং। তাই স্টাইলিংয়ে ‘কী সঠিক’, সেটা নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাচ্ছেন না ফ্যাশন-সচেতনেরা। তাদের কাছে কোনটা ঠিক মনে হচ্ছে, সেটাই প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি। তাই তো নিরীক্ষার সহজাত অনুশীলন দেখা যাচ্ছে ফ্যাশনের প্রতিটি স্তরে। লোকলজ্জা আর ‘পাছে কিছু ভুল হয়’—এমন সব ভয়ডর উপেক্ষা করে।
ব্রোচ রিবুট
আভিজাত্য আর ঐতিহ্যের প্রতীক! সেদিন গেছে নানি-দাদিদের আমলেই। ফ্যাশনে ব্রোচ ফিরেছে বোল্ড অবতার নিয়ে। পাল্টে গেছে বাঁধার ধরন। প্লেসমেন্টেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। অভাবনীয় সব উপায়ে, অপ্রত্যাশিত সব স্থানে। শাড়ির আঁচল আর ওড়নার কোণ আটকে রাখাতে সীমাবদ্ধ ব্রোচ এখন অনায়াসে চাপিয়ে দিচ্ছে ওভারসাইজড বক্সি টপের কোমল। কখনো সাজিয়ে দিচ্ছে ব্লেজারের কাঁধ, কখনো প্যান্টের পায়ের হেমে জুড়ে উচ্চতা কমিয়ে দিচ্ছে অনায়াসে। সঙ্গে বাড়াচ্ছে স্টাইট কোশেন্ট। এতেই প্রমাণ মেলে, স্ক্রিপ্ট মেনে ফ্যাশনের সময় ফুরিয়েছে। তাই তো ভিনটেজে এয়ারলুম পিস পরিণত হয়েছে হালের পাওয়ার স্টেটমেন্টে। ক্যাজুয়াল পোশাককে গ্লামআপ করে তোলা কিংবা স্ট্রিট স্টাইল লুকের আইকনিক টুইস্ট—সবই সম্ভব এই একটিমাত্র পিস দিয়ে।
ব্যাকওয়ার্ড নেকলেস ভাইব
ফ্যাশনে ফুল অন মেইন ক্যারেক্টার এনার্জি যারা চান, তাদের জন্য এই ট্রেন্ড। নেকলেস কলার বোন আঁকড়ে থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু একটু বোরিং নয় কি। তাই তো এই পিলে চমকানো ট্রেন্ডের উৎপত্তি। ব্যাকওয়ার্ড নেকলেসের এই ট্রেন্ডে গয়নার সঙ্গে জুড়ে থাকা পেনডেন্টকে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় পিঠের ওপর। পিঠ খোলা বা লো-কাট ব্লাউজের সঙ্গে এর জুটি তাই যে কারও নজর কাড়তে বাধ্য। আর হয়েছেও ঠিক সেটাই। রিল থেকে রেড কার্পেট অ্যাপ্রুভড হয়ে গেছে এই ট্রেন্ড আলোতে আসার কিছুদিনের মধ্যে। অনেকে তো লেয়ারও করেছেন এই স্টাইলে। শর্ট চোকারের সঙ্গে লং পেনডেন্ট পরে তৈরি হচ্ছে টু সাইডেড গ্ল্যাম। মিক্স মেটাল ট্রেন্ডও এ ক্ষেত্রে খুব ভালো মানায়। যেমন গোল্ড চেইনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া পার্ল অথবা ক্রিস্টাল পেনডেন্টে মন্দ দেখাবে না কিন্তু। ভেলভেটের রিবন টাই নেকলেসও এ ক্ষেত্রে বেছে নেন অনেকে। দৈর্ঘ্য সহজে ছোট-বড় করে নেওয়া যায়। শাড়ি ব্লাউজের মতো এথনিক লুকের স্টাইলিংয়ে যেমন মানায় এই ব্যাকওয়ার্ড নেকলেস ট্রেন্ড, তেমনি ওপেন ব্যাক কিংবা ব্যাকলেস সেক্সি ড্রেসের সঙ্গেও দেখায় দুর্দান্ত। আর হেয়ারস্টাইলটা কিন্তু এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। বান, ব্রেইড বা স্লিক ব্যাক পনিটেইলে বেঁধে রাখাই সমীচীন হবে।
নট জাস্ট আ ক্যাপ
কারণ বেসিক বেসবল ক্যাপে এখন জুড়ে দেওয়া হচ্ছে বো। এমন বো-অন-ক্যাপ মোমেন্ট প্রথম নজরে আসে টিকটক গার্লিদের বরাতে। তারপর কে-পপ স্টাইলিস্টরা দেখান তাদের মুনশিয়ানা। পরবর্তীকালে স্ট্রিট স্টাইল স্টারদের হাতে যাওয়ার পর পুরো ট্রেন্ডের ভোলই পাল্টে যায়। একটা বেসিক হেড গিয়ারের এমন অন্যতর রূপ দেখে গোটা ফ্যাশন বিশ্বও বিস্মিত হয়ে পড়ে। কিন্তু লুফে নিতে দেরি করেনি। একই সঙ্গে টমবয় ও ফেমিনিন ভাইব দেওয়া এই ট্রেন্ডের পুরোটাই কনট্রাস্টের খেলা; যা তৈরি করা যায় বেসবল ক্যাপের পেছনে স্যাটিন রিবন বা শিফন স্কার্ফের লুপে। ডেনিম বাকেট হ্যাটের চূড়ায় বো স্টিচ করে দিলেও মন্দ দেখাবে না। ঠিক তেমনি ভাইজা ক্যাপের পেছনে বড়সড় স্টেটমেন্ট বো ক্লিপেও কিন্তু অ্যাথলেটিক স্টাইল তৈরি হবে; তবে শতভাগ ইনস্টাগ্রামেবল। দারুণ ব্যাপার হচ্ছে, একদম ডিআইওয়াই ফ্রেন্ডলি এই ট্রেন্ড। মুডের সঙ্গে ম্যাচ করে বেঁধে নেওয়া যাবে যেকোনো জায়গায়—সাইড, টপ কিংবা লো ব্যাকে।
লেসড আপ লাউড
যারা ট্রেন্ড ফলো নয় বরং তৈরি করেন, তাদের জন্য এই কাস্টম ডিআইওয়াই ট্রেন্ড। বিডেড ডিজাইন থেকে, প্রিন্টেড উক্তি আর মিসম্যাচড কালারের হ্যান্ড পেইন্টেড ডুডল করা এসব শু লেস ফুটওয়্যারকে করে তুলছে অভিব্যক্তি প্রকাশের মাধ্যম। শু লেসের ম্যাটেরিয়াল আর রঙেও নিয়ে আসা হচ্ছে নতুনত্ব। স্ট্রিটওয়্যার কিড, স্কেটার গার্ল আর স্নিকারহেড ট্রেন্ডকে আরও উসকে দিতে। কারও কারও সৃজনশীলতা তো আরও গণ্ডি পেরোচ্ছে। ফলাফল—শু লেসে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে চার্ম, ইনিশিয়াল সমেত লেস লক আর নিওন গ্রাফিকের আঁকিবুঁকি। লেস বাঁধাও হচ্ছে ভিন্নভাবে। ডায়াগনালি, বার-লেসিং আর ওপেন ক্রিস-ক্রস প্যাটার্নে। মুড বুঝে, ভাইব চেক করে।
ফ্যাশন ডেস্ক
মডেল: ফাবলিহা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল
