শনিবার ( ৪ নভেম্বর ২০২৩) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল টেড-এক্স গুলশান-এর দ্বিতীয় আসর। ‘ইনোভেশন ফর ইক্যুয়ালিটি’ বা সমতার জন্য উদ্ভাবন– এই প্রতিপাদ্য নিয়ে তাতে বক্তব্য রাখেন দেশি-বিদেশি ১৬ জন বক্তা। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং সাবেক প্রধান সচিব আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানটি অসাধারণ বক্তাদের একত্রিত করার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করেছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ড. শিরীন শারমিন তার বক্তব্যে দেশের প্রথম নারী স্পিকার হওয়ার গল্প তুলে ধরেন। কীভাবে উদ্ভাবন ও সমতা পাবলিক সেক্টরে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা-ও উঠে আসে তাতে। তিনি বলেন, উদ্ভাবন শুধুমাত্র প্রাইভেট সেক্টরেই সীমাবন্ধ নয়; বরং এটি পাবলিক সেক্টরের পরিবর্তনের চালিকাশক্তি এবং নারীদের নেতৃত্বকে ক্ষমতায়িত করে।
সাবেক মুখ্যসচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সমতার অর্জনের জন্য উদ্ভাবনই আমাদের চালিকাশক্তি হওয়া উচিত এবং টেড-এক্স গুলশান এই বার্তা ছড়াতে আবারও তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।
বোয়িং ইন্ডিয়ার চিফ অব স্টাফ প্রাভিনা ইয়াগনামভাত বলেন, উদ্ভাবনই সমতার চাবি; আমার জার্নিই প্রমাণ করে, একজনই পরিবর্তন আনতে পারে।
বিবিসি স্টোরিওয়ার্ক্স-এর কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট অঙ্কিতা বকশী তার বক্তব্যে স্টোরিটেলিংয়ের ক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের গল্পের মাধ্যমে আমরা বাধা অতিক্রম এবং সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষকে একত্রিত করতে পারি।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের হেড অব কমিউনিকেশন মো. আবুল কাইয়ুম তার বক্তব্যে সমতা রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা এবং তার ব্যক্তিগত জার্নির কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, টেড-এক্স গুলশান পরিবর্তনমূলক আলোচনায় প্রভাবক হিসবে কাজ করেছ এবং আমি এতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত।
এ ছাড়াও বক্তা হিসেবে ছিলেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর ভাইস চ্যান্সেলর ড. রুবানা হক; বাংলাদেশি গায়ক ও গীতিকার শায়ান চৌধুরী অর্ণব; কোকা-কোলা কোম্পানি, বাংলাদেশ-এর হেড অব মার্কেটিং আবীর রাজবীন; এটুআই-এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট অ্যাক্সেসিবিলিটি ভাস্কর ভট্টাচার্য; বাংলাদেশি রেডিও জকি ও টেলিভিশন উপস্থাপক কিবরিয়া সরকার; বাংলাদেশি ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান; প্রাক্তন সেনা কমান্ডো ও ট্রায়াথলিট ইমতিয়াজ ইলাহী; এবং ব্র্যাক-এর পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস সিনিয়র ডিরেক্ট মৌটুসী কবির।
টেড-এক্স গুলশান-এর আয়োজনে বক্তব্যের পাশাপাশি ছিল গান ও বিনোদনের ব্যবস্থা। শায়ান চৌধুরী অর্ণবের অ্যাকোস্টিক স্টোরিটেলিং এবং ঋতু রাজের গান মাতিয়ে রাখে অংশগ্রহণকারীদের।
টেড-এক্স গুলশান-এর আয়ােজনে অন্যতম বিশেষ দিক ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক নানাবিধ ব্যবস্থা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অংশগ্রহণের ছিল সুব্যবস্থা; আরও ছিল সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটর।
টেড-এক্স গুলশান-এর কিউরেটর আশফাক জামান বলেন, আমাদের আয়োজনের সফলতার মূল কৃতিত্ব বক্তাদের। বক্তারা তাদের বক্তব্যে তাদের অভিজ্ঞতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে দর্শকদের অনুপ্রাণিত করেছেন। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের সংস্কৃতি, উদ্ভাবন এবং সামাজিক মেলবন্ধন বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে পারি।
এ আয়োজনের নলেজ পার্টনার ছিল লিড একাডেমি। এটি একটি বিশ্বমানের অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম, যারা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টেম ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতির দক্ষতা দিয়ে দেশ নির্মাতাদের ক্ষমতায়ন করে।
টেড-এক্স ভিডিওগুলো টেড-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে পাওয়া যাবে। এদের মাধ্যমে ৫৩ মিলিয়ন মানুষের কাছে এ বক্তব্যগুলো পৌঁছে যাবে। টেড-এক্স গুলশান-এর স্ট্রাজেটিক পার্টনার হিসেবে ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গোল্ড পার্টনার কোকা-কোলা। সিলভার পার্টনার ডেল্টা গ্রিন লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ড্যান ফুড লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিডেট। আইসক্রিম পার্টনার পোলার আইসক্রিম; পিআর পার্টনার ব্যাকপেইজ পিআর; টিকেটিং পার্টনার টিকেটিফাই এবং ইয়ুথ এঙ্গেইজমেন্ট পার্টনার ওয়াইএসএসই।
ফুয়াদ/ ক্যানভাস অনলাইন