ফরহিম I ফেস ম্যাপিং
ফেশিয়াল হেয়ারের বৈশিষ্ট্য বুঝে শেভিং। মুখমন্ডল মসৃণ রাখার জন্য। সাহায্য করবে গ্যাজেটে নেওয়া ছবি
ছেলেদের শেভিং নিরাপদ ও মসৃণ রাখতে বাজারে আসছে নিত্যনতুন গ্যাজেট কিংবা প্রডাক্ট। তবে এগুলো কেনার আগে সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো নিজের দাড়ি এবং তা বেড়ে ওঠার ধাঁচ বুঝে নেওয়া। সবার দাড়ি এক অভিমুখে বাড়ে না। প্রয়োজন নিজের দাড়ির বৈশিষ্ট্য বুঝে শেভ করা। ফেস ম্যাপিং কাজটি সহজ করে দেয়।
ছেলেরা যতটা মনোযোগ দেয় নিজের রেজর আর ব্লেড কিংবা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গ্যাজেটের ওপর, ফেশিয়াল হেয়ারে ততটা খেয়াল করলে শেভিং সহজ হয়ে যায়। তবে এটা বুঝে ওঠা কঠিন। কারণ, একজন থেকে অন্যজনের বৃদ্ধির ধাঁচ ভিন্ন। তবে কিছু ধরন সবার ক্ষেত্রে একই। ফেশিয়াল হেয়ার বাড়ে ডাউনওয়ার্ড প্যাটার্নে, গলা কিংবা কণ্ঠনালির আশপাশের অংশের চুল বেড়ে ওঠে উচ্চাভিমুখভাবে বা আপওয়ার্ড প্যাটার্নে। এটা বুঝে রেজর ব্যবহার করলে ইনগ্রোন হেয়ার কমে আসে, পাশাপাশি শেভিংয়ের পরের লালচে ভাবও থাকে না। শেভের পরেও মসৃণ অনুভূতি মেলে।
দাড়ি বেড়ে ওঠার ডিরেকশন বুঝে নেওয়া খুব কঠিন নয়। প্রথমত ৪-৫ দিনের জন্য নিজের দাড়ি বড় হতে দিন। তারপর নিচ থেকে নিজের দাড়ির ছবি তুলে নিয়ে দেখুন বেড়ে ওঠার প্রবণতা কোথায় কোথায় কেমন। দ্বিতীয়ত, নিজের পুরো মুখে হাত বুলিয়ে বুঝে নেওয়া যেতে পারে, কোন দিকে কোন প্যাটার্নে দাড়ি বাড়ছে। বুঝতে হবে, কোন দিকে দাড়ি হাতে লাগছে আর কোন দিকে হাত চালানো যাচ্ছে মসৃণভাবে।
আরেকটি পদ্ধতির মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে। তা হলো তুলার বলের ব্যবহার। নিজের দাড়ির উপর ধীরে ধীরে তুলার বলটি ঘুরিয়ে নিতে হবে। দাড়ি তুলায় আটকালে বুঝতে হবে, দাড়ি বৃদ্ধির প্যাটার্ন থেকে উল্টো দিকে যাচ্ছেন, আর না আটকালে বুঝে নেবেন ওই স্থানের গ্রোথ প্যাটার্ন ওটাই। আপনার ফেসে একই সঙ্গে নানা ধরন খুঁজে পেতে পারেন। কোনো স্থানে হয়তো ডান দিকে শেভ করতে হবে, আবার কোনো অংশে বাম দিকে। কিছু জায়গায় আবার ক্রিস ক্রস প্যাটার্নও পেতে পারেন।
দাড়ি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার দিককে বলা হয় ‘গ্রেইন’। ফেসম্যাপিংয়ের পর শেভের প্রথম ধাপ হিসেবে মুখে শেভিং ক্রিম মেখে গ্রেইন যেদিকে, সেদিকেই শেভ করতে হবে। এটা সবচেয়ে সহজ ও ঝুঁকিহীন, কারও কারও ক্ষেত্রে এটুকুই যথেষ্ট। কিন্তু আরও বেশি মসৃণ শেভ চাইলে প্রথম ধাপের পর আবার মুখ ধুয়ে নিয়ে শেভিং ক্রিম লাগান। এবার শেভ করতে হবে ক্রিস ক্রস ডিরেকশনে। অর্থাৎ গ্রেইনের দিকে নয়, আবার বিপরীতেও নয়। এবার রেজর চালাতে হবে পাশ থেকে, ছোট ছোট পার্পেন্ডিকুলার স্ট্রোকের সাহায্যে। এই দ্বিতীয় ধাপের ফলে ত্বকের বাড়তি খচখচে কিংবা লালচে ভাব ছাড়াই পাবেন একটা সুন্দর শেভ। চাইলে থেমে যেতে পারেন এখানে। তবে ত্বকে হাত বুলিয়ে দেখে নিন। যদি কোনো স্থানে রুক্ষতা টের পান, তাহলে তৃতীয় ধাপ হিসেবে ওই সব স্থানে আবার শেভিং ক্রিম লাগিয়ে শেভ করে নিন। এবার কিন্তু গ্রেইনের বিপরীতে। এই তিনটি ধাপের মাধ্যমে শেভ করার পরেও পাবেন ‘বেবি স্মুথ’ ত্বক!
ফেস ম্যাপিং করে নিলে কিংবা দু-একবার সেই অনুযায়ী শেভ করলেই যে নিজের বিভিন্ন স্থানের দাড়ি বৃদ্ধির ধাঁচ মনে থাকবে, তা নয়। তাই নিজের দাড়ির তোলা একটা ছবি প্রিন্ট করে তাতে বিভিন্ন স্থানের প্যাটার্ন এঁকে নিতে পারেন। কিংবা নিজের স্মার্টফোনে এডিট করে এঁকে নিতে পারেন কিছু তীরচিহ্ন। ইন্টারনেটে অনেক খালি টেমপ্লেটও পেয়ে যাবেন, যেখানে এঁকে নিতে পারেন নিজের গ্রেইন। কিছুদিন এভাবে শেভ করতে থাকলে আস্তে আস্তে নিজের ফেশিয়াল হেয়ার সম্পর্কিত চিত্র আয়ত্তে চলে আসবে।
শিরীন অন্যা
মডেল: হাসিন
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন