বুলেটিন
লার্ন লেয়ারিং
সেরাম, ময়শ্চারাইজার, সানস্ক্রিন- সব একসঙ্গে মুখে মেখে নিলেন আর ভাবলেন হয়ে গেল ত্বকের পরিচর্যা- ভুল! ত্বকযত্নের পণ্যগুলো ব্যবহারের যেমন আলাদা নিয়ম থাকে, তেমনি কোনটার পর কোনটা ব্যবহার করবেন, তা-ও চাই ম্যানুয়াল মেনে। তবেই ত্বকযত্ন হবে পরিপূর্ণ। শুরুটা করা চাই হালকা পণ্য দিয়ে। সেরামই সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে জুতসই। ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন মেনে সেরাম প্রয়োগের পর ব্যবহার করা চাই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, সূর্যের উপদ্রব সারায়, কোলাজেনের উৎপাদনমাত্রা বাড়ায়। তারপর ব্যবহার করা চাই ময়শ্চারাইজার। এটা ত্বকে ব্যবহৃত অন্য পণ্যগুলোকে আটকে দেয়। ফলে সেরাম আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আরও ভালো কাজ করে। তবে ত্বক যদি স্পর্শকাতর হয়, সে ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটা উল্টে নেওয়া যেতে পারে। প্রথমে ময়শ্চারাইজার মেখে এর উপর সেরাম দিন। এতে সেরামে থাকা কেমিক্যাল ত্বকে যে অস্বস্তি তৈরি করবে, তা কমে আসবে। ময়শ্চারাইজার প্রয়োগের পরও ত্বকের শুষ্কতা না কাটলে এরপর ব্যবহার করা যেতে পারে ফেস অয়েল। সবশেষে চাই সানস্ক্রিন। এতে ত্বক সূর্যরশ্মি থেকে শুধু সুরক্ষিত থাকবে না, বাইরের ধুলাবালি আর ময়লাও ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। আর রাতে সানস্ক্রিন ব্যবহারের বদলে তালিকায় রাখুন রেনিটল। ময়শ্চারাইজারের পর রেনিটলের ব্যবহার একে কম অস্বস্তিকর করে। আর ত্বকের একদম গভীরে প্রবেশের পথ তৈরি করে দেয়। এভাবে নিয়ম মেনে বিউটি রুটিনে বদল এনেই দেখুন! পরিবর্তন টের পাবেন।
এএইচএ এবং বিএইচএর পর
এসেছে পিএইচএ। আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড এবং বিটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিডের জ্ঞাতিভাই পলিহাইড্রোক্সি অ্যাসিড। মূলত কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্ট এটি, যাকে বলা হচ্ছে সেকেন্ড জেনারেশন এএইচএ। স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য দারুণ কার্যকর এটি। প্রচলিত পিএইচএগুলোর মধ্যে আছে গ্লুকোনোল্যাকটোন, গ্যালাকটোস ও ল্যাকটোবায়োনিক অ্যাসিড। যা ত্বকের মৃতকোষ সারাইয়ে সাহায্য করে। দেয় নিখুঁত টেক্সচারের ত্বক। এ ছাড়া অন্য উপাদানগুলোকে সহজে ত্বকের গভীরে প্রবেশের পথ করে দেয় পিএইচএ। ফলে আরও কার্যকর হতে পারে এগুলো। এ ছাড়া ত্বকের গ্লাইকেশন প্রতিরোধেও দারুণ পিএইচএ। যা কোলাজেনের কার্যকারিতা নষ্ট হতে দেয় না। বাড়ায় ইলাস্টিসিটি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ পিএইচএ ত্বকের এপিডারমালকে উজ্জীবিত রাখে, করে পুনরুদ্ধার। তবে পিএইচএ ব্যবহারের আগে ত্বকের ধরন সম্পর্কে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এএইচএ সাধারণত স্বাভাবিক থেকে শুষ্ক ত্বকের যত্নে উপযোগী। অন্যদিকে বিএইচএ প্রয়োজন হয় তৈলাক্ততায়। সে ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য অনায়াসে ব্যবহৃত হতে পারে পিএইচএ।
ট্রিপল ক্লিনজিং
কে বিউটি অনুপ্রাণিত ডাবল ক্লিনজিংয়ের রমরমা শেষ। সময় এখন ট্রিপল ক্লিনজিংয়ের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিন ধাপের ত্বক পরিষ্কারক এ পদ্ধতি আরও কার্যকর। কারণ, ট্রাইড অ্যান্ড টেস্টেড ডাবল ক্লিনজিংয়ের সঙ্গে যোগ হওয়া বাড়তি একটি ধাপ ত্বককে আরও সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে তুলতে সাহায্য করে। জনপ্রিয় সব বিউটি ভ্লগার, ব্লগার আর বিশেষজ্ঞরাও শামিল হচ্ছেন ক্লিনজিংয়ের নতুন এ ধারায়। ডাবল ক্লিনজিংয়ে সাধারণত অয়েল বেসড ক্লিনজার অথবা মাইসেলার ওয়াটার দিয়ে প্রথমে ত্বক পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। এতে করে ত্বকের একদম উপরিভাগে থাকা ধুলা, ময়লা আর মেকআপ দূর হয়। তারপর ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে শেষ করা হয় ক্লিনজিং। কিন্তু ট্রিপল ক্লিনজিংয়ে যুক্ত হয় বাড়তি একটি ধাপ। কয়েক ধরনের উপায় প্রচলিত রয়েছে এতে। একটি পদ্ধতিতে প্রথমে অয়েল বেসড ক্লিনজার, তারপর ক্রিম ক্লিনজার এবং সবশেষে ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে সারা হয় পুরো প্রক্রিয়া। অন্য উপায় প্রথমে ক্লিনজিং ওয়াইপ দিয়ে মুছে নেওয়া হয় মুখ, তারপর ব্যবহার করা হয় ক্লিনজিং অয়েল এবং ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে শেষ করা হয় পুরো প্রক্রিয়া। তবে ট্রিপল ক্লিনজিং নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেকের মধ্যে। কারণ, বেশি ঘষামাজা করলে ত্বকের প্রাকৃতিক গঠন ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেলের স্তর। ত্বক হারায় স্বাভাবিক সৌন্দর্য। তাই সাবধান হওয়া চাই এ ক্ষেত্রে।