ফিচার I দ্য নাইট বিফোর
নানান ঝক্কি আর মানসিক চাপ পেরিয়ে কাক্সিক্ষত দিন আসন্ন। কিন্তু দিনের শুরুতে ত্বকে চাই প্রাণময়তা আর চুলে উচ্ছলতা। সেই প্রস্তুতিটুকু তো নিতে হবে!
বিয়ের দিন কনেকে সুন্দর এবং সবার থেকে আলাদা দেখানোর জন্য শরীর ও মন সতেজ থাকা এবং ত্বক ও চুল সুন্দর রাখা জরুরি। আগের রাতেই তা নিশ্চিত হওয়া দরকার। সে জন্য রয়েছে কিছু কৌশল।
চোখের পরিচর্যায়: বিয়ের উদ্বেগজনিত চাপ ও অনিদ্রায় চোখের চারপাশে ফোলা ভাব দেখা দেয়। এ থেকে বের হওয়ার উপায় হচ্ছে আগের রাতে একটা বালিশ বেশি ব্যবহার করে চিত হয়ে শুয়ে থাকা। এটি করলে মাথাটা একটু উঁচু হয়ে থাকবে আর চোখের চারপাশের তরল অংশটুকু শুষে নিয়ে ফোলা অংশটা অনেকখানি কমে যাবে।
উজ্জ্বল ত্বক পেতে: আগের রাতে নাইট ক্রিম বা সিরামের মধ্যে ভিটামিন সি ট্যাবলেটের অর্ধেকটা মিশিয়ে সেটা মুখ মাখা যেতে পারে। পরদিনের ত্বক উজ্জ্বল দেখানোর জন্য। তবে এর নেতিবাচক কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না, সেটা একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে আগে জেনে নেওয়া ভালো। কেননা, সব ধরনের ত্বকে একই রকম পরিচর্যা জুতসই না-ও হতে পারে।
সুন্দর পদযুগল: পায়ে লাগানো মেহেদি উঠিয়ে উপরে ভেসলিন মাখতে হবে। শোবার আগে মোজা পরা চাই। সকাল অব্দি। দেখা যাবে পায়ের ত্বক নরম হয়ে দেখাচ্ছে পেলবমসৃণ।
ঝকঝকে সাদা দাঁত: ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে তার উপর বেকিং সোডা ছড়িয়ে দিতে হবে। দাঁত পরিষ্কারের জন্য। ব্রাশ করে মুখ পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুতে হবে। বেকিং সোডার শুভ্রকরণ উপাদানে দাঁত হয়ে উঠবে মুক্তার মতো সাদা।
তরঙ্গিত চুল: ঘুমের মধ্যে নড়াচড়ার প্রবণতা যাদের বেশি, তারা ঘুমানোর আগে চুল ঝুঁটি করে নিতে পারেন। বালিশের কাভার হিসেবে স্যাটিনই ভালো। এটি চুল সোজা রাখতে সাহায্য করে। ফলে পরের দিন চুলের টেক্সচারের কোনো বদল ঘটে না।
তেলে সতেজ: টি ট্রি অয়েল আর আমন্ড অয়েলে তৈরি ফেস মাস্ক এ ক্ষেত্রে কার্যকর। আগের রাতে মুখে লাগিয়ে ঘুমাতে হবে। এই মাস্ক ত্বকে নতুন করে আর্দ্রতা জোগাবে। কমাবে ডার্ক সার্কেল। তেলে চুল তো সব সময় তাজা। তাই বিয়ের আগের রাতে নারকেল, অলিভ কিংবা আমন্ডের মতো ভারী তেলগুলো এড়িয়ে বেছে নেওয়া যায় জোজোবার মতো হালকা অর্গানিক অয়েল। এতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেবে। চুলে তৈরি করবে মসৃণ ও হালকা একটি স্তর, যা সুরক্ষার পাশাপাশি দেবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চকচকে ভাব। অনেক কনেই চুলে হালকা মিষ্টি গন্ধ পছন্দ করেন। সে ক্ষেত্রে জোজোবা অয়েলের জুড়ি নেই। চুলে মাখার পর মৃদু সতেজ সুবাসে ভরিয়ে রাখে চারপাশ। আর এতে স্বচ্ছন্দ না হলে ধুয়েও নেওয়া যায় অনায়াসে। চুলে বাড়তি কোনো গন্ধের ছিটেফোঁটাও থাকবে না ধোয়ার পর।
রিংকেল কমাতে: এর সবচেয়ে সহজ উপায় স্লিপিং মাস্ক ব্যবহার করা। ভালো মানের হলে এগুলোয় স্কিন প্লাম্পিং এজেন্ট থাকে, যা ত্বককে নমনীয় করে তোলে। ময়শ্চারাইজার মাখা চোখে স্লিপিং মাস্ক পরে ঘুমালে তা এই ময়শ্চার ধরে রাখে। গাল ও কপালে ভাঁজ পড়তে দেয় না।
সহনীয় গ্লাইকোলিক অ্যাসিড: এটি কেবল আর্দ্রতাই ধরে রাখে না, বরং শুষ্কতাও কমায়। তবে মনে রাখতে হবে, গ্লাইকোলিক অ্যাসিডে অ্যাসিডের মাত্রা একটু বেশি। তাই এমন ক্রিম খুঁজে বের করতে হবে, যেটাতে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড থাকে সহনীয় মাত্রায়।
জিঙ্কযুক্ত ক্রিম: বিয়ের দিনেই পিম্পেলের শঙ্কা? এটা ঠেকাতে পারে জিঙ্ক। কেননা, এটি ব্যাকটেরিয়ারোধী পিম্পল তাড়াতে এক্সপার্ট। জিঙ্কযুক্ত এমন একটি সিবাম কন্ট্রোলার কেনা চাই, যা এক রাতেই পিম্পল সারাবে। ত্বককে করে তুলবে নিখুঁত।
সুরবি প্রত্যয়ী
মডেল: নাজ
ওয়্যারড্রোব: রিলা’স
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন