skip to Main Content

ফিচার I অ্যাডজাস্টিং ফাউন্ডেশন

মেকআপের জন্য ত্বক বুঝেই যোগ করতে হয় ফাউন্ডেশন। বুঝতে হয় উপকরণটিকেও। কারণ, মানিয়ে নেওয়াই আসল কথা

ত্বকের সঙ্গে মানানসই পারফেক্ট শেডের ফাউন্ডেশন খুঁজে বের করা খুব সহজ নয়। অনেক ব্র্যান্ডেরই বেশি শেডের বিকল্প থাকে না, আবার কিছু ব্র্যান্ডে এতগুলো শেড থাকে যে বুঝে ওঠা যায় না কোনটা আপনার ত্বকে জুতসই। আবার সব ফাউন্ডেশনের ফর্মুলাও ত্বকের ধরনের সঙ্গে মিলবে না। এই সবকিছু মাথায় রেখে যখন একটা যথাযথ ফাউন্ডেশন খুঁজে পাওয়া যাবে, তখন চেষ্টা করতে হবে ওই ফাউন্ডেশনটাকেই সব সময় নিজের সঙ্গী করে নেওয়ার জন্য। তবে অনেক সময়ই ভাবা হয় না, আমাদের ত্বকের কমপ্লেকশন আবহাওয়ার কারণে বদলাতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আবারও এত্ত ঝক্কি নিয়ে ফাউন্ডেশনের শেড খুঁজে বের করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না।
গ্রীষ্মের প্রখর রোদ কিংবা শীতে ভিটামিন ডি-এর অভাব— এ সবকিছুই আমাদের ত্বকে প্রভাব ফেলে। আবার কেউ কেউ মিশ্র ত্বকের অধিকারী। শীতে তাদের ত্বক শুষ্ক এবং গরমে তৈলাক্ত থাকে। তাই ত্বকে ফাউন্ডেশনের যেই শেড ফেব্রুয়ারিতে মিশে যাবে, ডিসেম্বরে সেটি না-ও মিশতে পারে। সুতরাং সারা বছর ধরে একই ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে চাইলে ছোটখাটো কিছু ট্রিক খাটাতে হবে।
ময়শ্চারাইজার
এটি ফাউন্ডেশনকে পাতলা করে, পিগমেন্টেশন হালকা করতেও কাজে লাগে। এটি আসল স্কিন টোনকে সামনে নিয়ে আসবে এবং চেহারায় একটা ডিউয়ি ফিনিশ দেবে। ত্বক যদি শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে থাকে, তবে এই ট্রিক যথেষ্ট উপকারী। এ ছাড়া ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে ফাউন্ডেশনের মিশ্রণ তৈরির মাধ্যমে স্কিনকেয়ার এবং মেকআপ একত্র করা যায়। গ্রীষ্মকালে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ময়শ্চারাইজারের জায়গায় এসপিএফ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে, আর শীতকালে ময়শ্চারাইজার। এতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে এবং মেকআপও কেকি হয়ে যাবে না। তাই স্কিনটোন অনুযায়ী ফাউন্ডেশনের পিগমেন্টেশন গাঢ় কিংবা হালকা করার আগে ত্বকের যত্নে খেয়াল করতে হবে। গ্রীষ্মে সুরক্ষিত এবং শীতে হাইড্রেটেড—এটাই হতে হবে মূলমন্ত্র।
ব্রোঞ্জিং
গ্রীষ্মে রোদে পোড়া ত্বকের সঙ্গে নিজের পছন্দের ফাউন্ডেশন মানিয়ে নিতে ব্যবহার করা যায় ব্রোঞ্জার। শুনতে যতটা সহজ মনে হয়, প্রক্রিয়াটা এত সহজ নয়। ব্রোঞ্জার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক সচেতন হতে হবে। কেননা কিছুটা বেশি-কম হলেই এটা ভালো দেখাবে না। আবার ফাউন্ডেশনে ব্রোঞ্জার মিশিয়ে পুরো মুখে মেখে নিলেই হলো না। ফাউন্ডেশনে ব্রোঞ্জার মিশিয়ে আলাদাভাবে ব্যবহার করতে হবে। ত্বকের কমপ্লেকশন মাথায় রেখে যেসব অংশে রোদে পোড়া বেশি, সেসব জায়গায় ব্রোঞ্জার আর অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকে অল্প ব্রোঞ্জার সাবধানতার সঙ্গে চেপে চেপে লাগিয়ে নিতে হবে। এতে কমপ্লেকশন খুবই স্বাভাবিক দেখা যাবে। আবার একেবারেই ট্যানড লুক চাইলে ফাউন্ডেশন বাদ দিয়ে শুধু ব্রোঞ্জারও ব্যবহার করা যায়। সঠিক উপায়ে ব্যবহার করতে পারলে এটা ‘গো-টু সামার লুক’ হতে পারে।
প্রাইমার
অনেক সময় ময়শ্চারাইজার ফাউন্ডেশনের সঙ্গে মিশে একে ভারী করে তুলতে পারে। তাই বিউটি এক্সপার্টরা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে প্রাইমার মেশানোর পরামর্শ দেন। শুধু এক থেকে দুই ফোঁটা মিশিয়ে নিলেই চলবে। এটা ফাউন্ডেশনকে পাতলা করার পাশাপাশি মেকআপ অনেক সময় ধরে রাখবে। বাজারে অনেক ভালো ব্র্যান্ডের প্রাইমার রয়েছে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিতে হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন হাইড্রেটিং প্রাইমার হয়।
মিক্স থিংগস আপ
অনেক সময় মনে হতে পারে যে নিয়মিত ব্যবহারের ফাউন্ডেশন থেকে বিভিন্ন ঋতু অনুযায়ী এক শেড কমিয়ে-বাড়িয়ে নিলেই হয়। তবে ব্যাপারটা এতটাও সহজ নয়। ব্র্যান্ড সম্পর্কে এবং এর শেডগুলো নিয়ে খুব ভালো করে পড়াশোনা করে নিতে হবে। আবার ঠিক পরের শেডটা যে কমপ্লেকশনে মানিয়ে যাবে, তা-ও বলা যায় না। অন্য কোনো ব্র্যান্ডের ফাউন্ডেশন নেওয়ার আগে সেটার ফর্মুলা যাচাই করা দরকার। এসব হিসাব-নিকাশ না কষে ফাউন্ডেশনের দুটো শেড মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। অনেক বিউটি এক্সপার্ট মনে করেন, গ্রীষ্মের ট্যানড ত্বকের সঙ্গে ফাউন্ডেশন মেলাতে এর সঙ্গে ত্বক রঙের চেয়ে দুই শেড গাঢ় ফাউন্ডেশন মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। ফাউন্ডেশনের রং হালকা করতে চাইলেও এমনটি করা যায়। তখন আরও হালকা শেডের সঙ্গে মেশাতে হবে ফাউন্ডেশন। তাই পছন্দের ব্র্যান্ড এবং শেড পেয়ে গেলেই কাছাকাছি ২ থেকে ৩টি শেড কিনে রাখা দরকার।
ট্রাই ইট ডিফারেন্টলি
ফাউন্ডেশনের শেড হালকা করার জন্য ময়শ্চারাইজার মেশানোর মানে ত্বকে একসঙ্গে বেশি পরিমাণে বিউটি প্রডাক্ট যোগ করা, যা অনেক সময় অস্বস্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী হয়ে থাকলে। গরমে এটা অস্বস্তিকর। তাই অনেক বিউটিশিয়ান ফাউন্ডেশন লাগানোর পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পরামর্শ দেন। ফাউন্ডেশন লাগানোর জন্য ডুও ফাইবার ব্রাশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই মেকআপ ব্রাশে ডুয়েল এন্ডেড ফাইবার ব্রিসল থাকে, যা দিয়ে খুব সহজেই ত্বকে ক্রিম বা লিকুইড ফাউন্ডেশন লাগানো যেতে পারে। এটি ফাউন্ডেশনের পিগমেন্ট কমাতেও কার্যকর। এ ছাড়া বিউটি ব্লেন্ডার ভিজিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা খুব সহজেই ফাউন্ডেশনকে পাতলা করবে এবং শেডটাও এতে হালকা দেখাবে।

শিরীন অন্যা
মডেল: শর্মি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top