ফিচার I পোরসেলিনা
দেশি বাজার যখন সাধারণ সিরামিক টেবিলওয়্যারে সয়লাব, তখন সিরামিকপ্রেমী রুচিশীল ক্রেতাদের মননের খোরাক জোগাতে একেবারে ভিন্ন রং ও নকশায় মডার্ন ডাইনিংয়ে ঠাঁই করে নিয়েছে পোরসেলিনা। এই ব্র্যান্ডের সিরামিক তৈজসগুলো তৈরি করা হয়েছে পপ কালচারের মিশেলে। শুধু রঙিন করে যাওয়াই নয়, তাদের বাসনপত্রের রংগুলোতে শিল্পের ছোঁয়াও স্পষ্ট। বিমূর্ত কিংবা মডার্ন ন্যারেটিভ—উভয় আর্টই সযত্নে স্থান পেয়েছে তাদের তৈজসগুলোতে। গৎবাঁধা ডিজাইনের বাইরে গিয়ে প্রকৃতি, সিনেমা, কার্টুন, গেমস, গান, এমনকি অন্তর্জালের মিমগুলোকে থিম হিসেবে নিয়ে নকশা করা হয়েছে পোরসেলিনার পণ্যসম্ভার। এ কারণে কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠদের পছন্দের সিরামিক ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে পোরসেলিনা। ট্রেন্ডের বিবেচনায় এ ধরনের থিম নিয়ে সবার আগে হাজির হয়েছে এটি।
পোরসেলিনা পণ্যগুলোর রং ও নকশা—সবকিছুতেই ক্রেতাদের তুষ্ট করতে সক্ষম। টপ, বটম কিংবা সাইড—সব অ্যাঙ্গেলে রয়েছে সৌন্দর্যের সুষম উপস্থিতি; যা ক্রেতাদের দৃষ্টি-ইন্দ্রিয়কে মুহূর্তেই এক বিশুদ্ধ শিল্পের আবহে মোহিত করে তোলে।
গতানুগতিক ধারার সিরামিক পণ্য থেকে বেরিয়ে বাসনকেও যে ‘আর্ট ক্যানভাস’ করে তোলা যায়, এই ভিন্নধারার চিন্তার অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ মি. সালমান মোর্শেদ আকাশ। বর্তমানে তিনিই প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর। তরুণ ও উদ্যমী এই উদ্যোক্তা কোয়ালিটির ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ। চেনা চৌহদ্দির বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পেরেছেন বলেই আজ দেশের ঘরে ঘরে পোরসেলিনার উপস্থিতি ও কদর। তবে এই শিল্পমনের পরিচর্যা করতে হয়েছে মি. আকাশকে। প্রায় অর্ধপৃথিবী ঘুরে বেরিয়েছেন শিল্পের সমঝদার এই ব্যক্তি। দেশ-বিদেশের মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের উপলব্ধি, রুচি ও অভিজ্ঞতাকে নিজের ঝাঁপিতে বয়ে বেরিয়েছেন। সেই অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণটাই ঢেলে দিয়েছেন পোরসেলিনায়। অবশ্যই সর্বোচ্চ মেধা ও পরিশ্রমের মিশেলে।
পোরসেলিনা ক্রেতার কাছে শুধু পণ্য বিক্রয় করে না; পণ্য ব্যবহার-পরবর্তী ভোক্তাদের সন্তুষ্টির দিকেও সূক্ষ্ম নজর রাখে। ফলে এটি এখন ক্রেতাদের আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে। নিজেরা ব্যবহারের পাশাপাশি আজকাল অন্যদেরকেও পোরসেলিনার সিরামিক পণ্য ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন এর সম্মানিত কাস্টমাররা।
পোরসেলিনার পণ্য তৈরির কাঁচামাল হলো সর্বোৎকৃষ্ট পোরসেলিন। পণ্য তৈরিতে পরিবেশের নিরাপত্তাকে শতভাগ গুরুত্ব দেয় এ প্রতিষ্ঠান। ফলে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও রং এড়িয়ে চলে। পরিবেশে কার্বন নিঃসরণে একেবারেই নারাজ পোরসেলিনা। তা ছাড়া কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়েও সজাগ কর্তৃপক্ষ।
পোরসেলিনার একটি প্রজেক্ট ‘গুলশান ২ প্রজেক্ট’। এখানে বাহারি রঙের টেবিলওয়্যার এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। পোরসেলিনা মূলত প্রকৃতির রংকেই তাদের পণ্যসম্ভারে ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগী। এ ধরনের রঙের বিষয়ে ব্র্যান্ড ম্যানেজার মি. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মানুষ এর আগে পোরসেলিনার পণ্যের মায়াময় রং ও নকশার মতো আর কোনো টেবিলওয়্যার দেখেনি।’
নান্দনিকতার সঙ্গে তৈজসের শিল্পসম্মত মিশেলের সিরামিক পণ্য পোরসেলিনার হদিস মিলবে গুলশান ২-এ। এখানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি বিশাল এক ডিসপ্লে সেন্টার। গ্রাহকদের সহজ যোগাযোগের কথা বিবেচনা করেই শোরুমের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে স্থানটি। স্থাপত্যশিল্পী মিস আনিকা তাবাসসুম অত্যন্ত কৌশলী নকশা করেছেন এই আউটলেটের। ফলে ক্রেতারা সেখানে সময় কাটাতে অস্বস্তিবোধ করেন না। পণ্যগুলো ডিসপ্লে করার ক্ষেত্রেও ক্রেতাদের আরামদায়ক কেনাকাটার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
গুলশান ২, বনানী ১১, এলিফ্যান্ট রোড, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পোরসেলিনার শোরুম রয়েছে। তা ছাড়া খুব শিগগির উত্তরা, মোহাম্মদপুর, ওয়ারী, ধানমন্ডিসহ আরও কিছু স্থানে আউটলেট ওপেন করা হবে। মূলত দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শোরুমের পরিকল্পনা রয়েছে পোরসেলিনার।
ছবি: তানভীর খান