skip to Main Content

বহুরূপী I মাংস মতামত

মাংসের নানান রূপ। কখনো তা ভয়াল রোগব্যাধি তৈরি করে; সেই মাংসই আবার শরীরে প্রোটিন জুগিয়ে নিশ্চিত করে সুস্থতা। ঈদুল আজহায় বাংলাদেশে বিভিন্ন পশু কোরবানি দেওয়ার চল আছে। সাধারণত গরু ও ছাগলই বেশি কোরবানি করা হয়। এরপর মহিষ। কেউ কেউ উট ও ভেড়াও দিয়ে থাকেন। এর বাইরে বাংলাদেশে অন্যান্য পশু কোরবানি দেওয়ার চল খুব একটা নেই। এসব চতুষ্পদীর মাংসের একেকটির দোষ-গুণ একেক রকম।
i গরুর মাংস: এর ১০০ গ্রাম মাংসে মেলে ২১৭ ক্যালরি। প্রোটিন প্রায় ২৭ শতাংশ। ৮ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড ছাড়াও থাকে ১৬ ভাগ চর্বি। গোমাংসের কনজুগেটেড লিনোলেয়িক অ্যাসিড ওজন কমাতে সাহায্য করে। খনিজ লবণের মধ্যে এর মাংস থেকে পাওয়া যায় জিংক, ফসফরাস, সেলেনিয়াম ও আয়রন। মেলে ভিটামিন বি-৩, বি-৬, বি-১২। এ কথা ঠিক, গোমাংসে কোলেস্টেরল থাকে। তবে ফ্যাটি লিভার না থাকলে এই মাংস খেতে সাধারণত বারণ করেন না চিকিৎসকেরা। তা ছাড়া খাবারের মাধ্যমে সেই কোলেস্টেরল শরীরে প্রবেশ করে বলে তা খুব একটা ক্ষতিকর নয় বলে জানা গেছে। অবশ্য কোনো কোনো গবেষণা গরুর মাংসে হৃদ্রোগের ঝুঁকি আছে বলে মত দিয়েছে। এই ঝুঁকি মূলত প্রক্রিয়াজাত মাংসে বেশি; তাজা মাংসে কম। আবার কিছু গবেষণা গরুর মাংসের সঙ্গে হৃদ্রোগের আশঙ্কার সম্পর্ক নাকচ করে দিয়েছে। যাহোক, এ নিয়ে রয়েছে মতভেদ।
i ছাগলের মাংস: গরুর মাংসের তুলনায় ছাগলের মাংস ভালো বলে অভিমত অনেকের। কোলেস্টেরল কম থাকায় এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও কম। আবার এই মাংসে সোডিয়ামের পরিমাণ কম এবং পটাশিয়াম বেশি। ফলে তা উপকারী। ছাগলের ১০০ গ্রাম মাংসে থাকে ২৩ গ্রাম প্রোটিন, ১২২ ক্যালরি এবং ২ দশমিক ৫ গ্রাম চর্বি। তা ছাড়া পর্যাপ্ত লৌহ মেলে, যা রক্তস্বল্পতা দূর করে। তবে প্রক্রিয়াজাত ছাগলের মাংস খেলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা অবশ্য অন্যান্য চতুষ্পদী প্রাণীর প্রক্রিয়াজাত মাংসেও থাকে।
i ভেড়ার মাংস: এতে উচ্চমাত্রার ক্যালরি রয়েছে। এর প্রোটিনও তুলনামূলকভাবে উন্নত। ভেড়ার ১০০ গ্রাম মাংসে ২৫৮ গ্রাম ক্যালরি মেলে। রান্না মাংসে প্রোটিন থাকে প্রায় ২৬ শতাংশ। সম্পৃক্ত চর্বি কম থাকায় ভেড়ার মাংস খেলে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, হাইপারটেনশন ইত্যাদির ঝুঁকি কমে। এ ছাড়া এই মাংসে বিপুল খনিজ লবণ ও ভিটামিন আছে, যা শরীরের নানান বালাই সারাইয়ে উপযোগী।
i উটের মাংস: শক্ত আঁশের আমিষ থাকে এর টিস্যুতে। সম্পৃক্ত চর্বি কম, অসম্পৃক্ত চর্বি বেশি। ফলে উটের মাংস খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ার কিংবা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা ভিটামিন সি, ডি ও আয়রন শরীরের বিভিন্ন কাজে লাগে।
i মহিষের মাংস: এতে পরিমিত ক্যালরি ও কোলেস্টেরল থাকে। তবে উচ্চমাত্রায় থাকে ভিটামিন ও খনিজ। মহিষের ১০০ গ্রাম মাংসে ক্যালরি মেলে ১৪০ গ্রাম। চর্বি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুবই কম হওয়ায় এ মাংসের কদর দিন দিন বাড়ছে।
তবে কোরবানিতে যে মাংসই খাওয়া হোক, তা ভালোভাবে রান্না হওয়া চাই। নইলে লাভের চেয়ে স্বাস্থ্যগত ক্ষতিই হবে বেশি। তা ছাড়া সবার শরীরের অবস্থা এক নয়। শরীরের রোগের ধরন বুঝে মাংস খাওয়া ভালো। সে ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞই বাতলে দিতে পারবেন কার জন্য কিসের মাংস প্রযোজ্য।

i ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top