skip to Main Content

কভারস্টোরি I বিশ্ববিমোহী

শনিবারে শিয়া বাটার, রোববার রাইস ওয়াটার আর সোমবারের জন্য তুলে রাখা স্নেইলের এক্সট্রাক্ট। বাদ যায় না সপ্তাহের বাকি দিনগুলোও। বিউটি রুটিনে কোনো না কোনোভাবে উপস্থিত বহিরাগত ভিনদেশি সব উপকরণ। আর জনপ্রিয়তা, সে তো তুঙ্গে! বিশ্ব সৌন্দর্যের দরবার থেকে উঠে আসা এমনই সব সুপরিচিত উপকরণের ইতিবৃত্তচর্চায় জাহেরা শিরীন

এই যে বিশ্বের অতশত দেশ, প্রতিটি দেশেই তো কিছু না কিছু বিশেষ ব্যাপার রয়েছে। খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-আশাক, সাজগোজ থেকে রূপচর্চা—সবেতেই মিলবে আলাদা বিশেষত্ব। তাই তো দেশি-বিদেশি ম্যাগাজিনের পাতা ওলটাতে গিয়ে কিংবা টিভি পর্দায় ভিনদেশিদের জেল্লাদার ত্বক আর চুল দেখে অনেকেরই আফসোস, ইশ্! যদি অমুক দেশের মহিলাদের মতো চকচকে ত্বক পাওয়া যেত, কিংবা তমুক দেশের মহিলাদের মতো একরাশ ঘন চুল! যেন নিজের দেশের সবকিছুই ফেলনা, আর বিদেশি সবকিছুই ভালো। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, হয়তো অমুক আর তমুক দেশের মহিলাদের মনেরও একই অবস্থা। হয়তো তারাও ভিনদেশের প্রতি একই রকম মনোভাব পোষণ করছেন। অনেকটা ‘নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস’ উক্তির মতো ব্যাপারটা। নিজের দেশের পণ্য ছেড়ে বিদেশি প্রকরণ নিয়ে মাতামাতির প্রবণতা বরাবরই বেশি। তাই তো দেশি আমলকীকে পাশ কাটিয়ে ভিনদেশি অ্যাভোকাডো আর শসার বদলে শিয়া বাটারে তৈরি পণ্যের কাটতি বেশি। দোকানিরা বেশি দাম হাঁকানোর পরও। আর ক্লে-তে তৈরি প্রডাক্ট নিয়ে তো পুরো বিশ্ব পাগল। কিন্তু এই ক্লে-এর উৎস ঠিক কোথায়? মজার ব্যাপার হচ্ছে, গোলাপজলের মতো পরিচিত উপাদানটাও যে আমাদের দেশি নয়, তা-ও হয়তো অনেকেরই অজানা। সৌন্দর্যচর্চায় বহুল ব্যবহৃত চেনাজানা এসব উপাদান সম্পর্কে নতুন করে জানালে ক্ষতি তো কিছু নেই, বরং লাভটাই বেশি। অজানা তথ্য জানা হবে, সেই সঙ্গে উপাদানগুলো ব্যবহারের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিরও সন্ধান মিলবে।
রাইস ওয়াটার (জাপান)
গেল কয়েক বছর ধরে বহুল চর্চিত সৌন্দর্যচর্চায়। ভিনদেশি উপাদানগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার তালিকাতেও শীর্ষে। বিগত এক দশকে পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ বিশ্ব সৌন্দর্যচর্চায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে। সেই সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এসব দেশ থেকে প্রাপ্ত সৌন্দর্য উপাদানগুলোও। যেগুলোর মধ্যে জাপানি এই উপাদান নিঃসন্দেহে প্রথম স্থানাধিকারী। শুধু জাপান নয়, চীন, কোরিয়া প্রভৃতি দেশেও এর পরিব্যাপ্তির ছাপ সুস্পষ্ট। এর প্রচলন মূলত হিয়ান যুগে। যা জনপ্রিয় আজ অব্দি। চীনের হুয়ানলু গ্রামে তো এখনো মহিলারা চালের পানি দিয়ে চুল ধুয়ে থাকেন। ফলাফল- তাদের কারও মাথায় আশি বছরের আগে একটা পাকা চুলও চোখে পড়ে না। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক যুক্তিও রয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, চালের পানিতে এমন কিছু উপাদান আছে, যা চুলের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সহায়ক; পাশাপাশি চুলের কালো ভাবও ধরে রাখতে সাহায্য করে। একইভাবে এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং বি ত্বকের বার্ধক্য রোধে অব্যর্থ। চালের পানির প্রাকৃতিক স্টার্চ ত্বকের অস্বস্তি ভাব থেকে মুক্তি দেয়। সারায় সানবার্নজনিত সমস্যা। এ ছাড়া এতে থাকা ফিরুলিক এবং ফাইটিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়ক। জাপানিস রাইস ব্রান যা কোমেনুকা নামেও পরিচিত, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে। এ ছাড়া এতে আরও মিলবে ভিটামিন এ, বি২, বি১২ এবং ই, যার প্রতিটিই দারুণ ত্বকবান্ধব। সৌন্দর্যচর্চার জন্য এটি তৈরি করে নেওয়াও বেশ সহজ। যেকোনো ধরনের চাল একবার ধুয়ে নিয়ে বেশি করে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সেদ্ধও করে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে সেদ্ধ করার পর অবশিষ্ট পানিটুকু ব্যবহার করা যায়। আর চাল ভিজিয়ে রাখা হলে আধা ঘণ্টা পর ছেঁকে নিতে হবে। এই চালের পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নেওয়া যায়। এতে চুল কোমল ও মজবুত হবে। এ ছাড়া চাল ছাঁকা পানি নিয়ে তাতে কয়েকটা শিকাকাই ভিজিয়ে রেখে পরদিন সামান্য অ্যালোভেরা জেল আর মাইল্ড শ্যাম্পু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে, যা শ্যাম্পুর মতোই ব্যবহার করা যাবে। নিয়মিত ব্যবহারে চুল ভালো থাকবে, খুশকির সমস্যাও মিটবে। টোনার কিংবা স্ক্রাব হিসেবেও রাইস ওয়াটার চমৎকার। এমনকি ত্বকের দাগ হালকা করতেও রাইস ওয়াটার ম্যাজিকের মতো কাজ করে। আধা চা-চামচ রাইস ওয়াটারের সঙ্গে ২ ফোঁটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে দাগের ওপর মাখিয়ে রাখতে হবে শুধু। নিয়মিত ব্যবহারে ফল নিশ্চিত।
শিয়া বাটার (ঘানা)
বিউটি প্রডাক্টে বহুল ব্যবহৃত, তাই ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক যে এটা আমাদের দেশি উপাদান নয়। ক্যারিটে গাছের বাদাম থেকে উৎপন্ন হয় এই শিয়া বাটার। পূর্ব থেকে পশ্চিম আফ্রিকার সাহিল অঞ্চলে জন্ম হয় গাছটির। এর তীব্র ময়শ্চারাইজিং প্রোপার্টি শুষ্ক মরুভূমিতেও একে টিকিয়ে রাখে অনায়াসে। এর নিরাময় ক্ষমতাও চমৎকার। ফলে শিয়া বাটার ব্যবহার করা যায় ত্বকে এবং চুলে, উভয় জায়গাতেই। সাহিল অঞ্চলে শিয়া বাটারকে ‘ওমেনস গোল্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কারণ, এই অঞ্চলের নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার পাশাপাশি আয়ের উৎস তৈরি করে দিয়েছে জাদুকরী এ উপকরণ। এখনো প্রাচীন পদ্ধতি মেনেই শিয়া বাটার সংগ্রহ করা হয়। পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয় প্রায় ১৮টি ধাপে। সব ধরনের ত্বকের জন্য দারুণ উপযোগী শিয়া বাটার। দেশীয় সৌন্দর্যসচেতনদের মাঝে বেশ অনেক বছর ধরেই জনপ্রিয় এটি। শীতের রুক্ষতা বশে আনতে নানা ধরনের পণ্য হার মানার পরই সুদূর আফ্রিকা থেকে দেশে নিয়ে আসা হয় এই উপাদান। ছোট ছোট আমন্ডের মতো দেখতে বীজ থেকে যে এত উপকারী উপাদান তৈরি হতে পারে, সে আবিষ্কার প্রথম কার? ইতিহাস বলে, রানি ক্লিওপেট্রার আবিষ্কার শিয়া বাটার। আফ্রিকা থেকে প্রথমে ইউরোপ এবং তারপর এশিয়ায় অনুপ্রবেশ ঘটে এর। ভিটামিন এ, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস এবং প্রাকৃতিক অয়েল সমৃদ্ধ এ উপাদান নানান গুণসম্পন্ন। সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার উপযোগী। কারণ, এর ফ্যাটি অ্যাসিড ময়শ্চার ত্বককে তেলতেলে না করেই জরুরি আর্দ্রতার জোগান দেয়। ফলে শুষ্ক ত্বক কিংবা স্ট্রেচমার্কের জন্য শিয়া বাটার যেমন ব্যবহার উপযোগী, তেমনি বলিরেখা কমাতে, ফাটা ঠোঁট কিংবা গোড়ালিতে, এমনকি সানবার্নের উপশমেও ব্যবহার করা যায় অনায়াসে। এ ছাড়া এতে আছে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ালের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ। এ ছাড়া আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন হওয়ায় সেল রিজেনারেশনেও এর জুড়ি নেই। চুলের রুক্ষতাকে কাবু করতে এবং সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে চুলকে সুরক্ষা দিতেও শিয়া বাটার দুর্দান্ত। সাধারণত জমাট বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় এটি। ডাবল বয়লারে সামান্য গরম করে গলিয়ে নিলেই ব্যবহার করা যায়।
গোলাপজল (বুলগেরিয়া)
অবাক হওয়ার মতোই ব্যাপার, কিন্তু ঘটনা সত্য। একদমই দেশি নয় এই উপাদান। মূলত যে ধরনের গোলাপ প্রথম দিককার রূপচর্চায় ব্যবহৃত হতো, তার নাম ডামাসকাস রোজ। মধ্যপ্রাচ্যে এই বিশেষ প্রজাতির গোলাপ পাওয়া যেত বলে কথিত আছে। আর ইতিহাস বলে, তৎকালীন পারসিয়া বর্তমানে যা ইরান নামে পরিচিত, সেখানেই গোলাপজলের উৎপত্তি। দশম শতাব্দীতে পারসিয়ান কেমিস্ট আভিসানাই এর প্রথম আবিষ্কারক। ইসলামিক গোল্ডেন এইজে যিনি একাধারে চিকিৎসক, চিন্তাবিদ ও জ্যোতিষবিদ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। প্রথম তিনিই ডিস্টিলেশন প্রক্রিয়ায় ফুল থেকে আতর তৈরির কাজ শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে রোজ অয়েল তৈরির সময় বাই প্রডাক্ট হিসেবে তৈরি করে ফেলেন রোজ ওয়াটার। এরপর ইরান থেকে পাড়ি জমিয়ে গোলাপজল তার সুবাস ছড়িয়ে দেয় ইউরোপে। একে একে গ্রিস হয়ে বুলগেরিয়ায় এর প্রচলন বাড়তে শুরু করে। অন্য মতানুসারে, মধ্যপ্রাচ্যে ডামাসকাস রোজ মূলত সুগন্ধি তেল তৈরির কাজেই ব্যবহৃত হতো। তবে তা তৈরির কাজ বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। যেখানে-সেখানে বানানোও যেত না। ফলে ধীরে ধীরে গোলাপ তেলের প্রচলন কমে বাড়তে শুরু করে গোলাপজলের ব্যবহার। বুলগেরিয়াসহ ইউরোপের একাধিক জায়গায় রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যেমন সুন্দর গন্ধ, তেমনি গুণে ভরপুর। বর্তমানে টোনার হিসেবে বহুল ব্যবহৃত এ উপাদান। তবে অনায়াসেই ব্যবহার করা যায় সৌন্দর্যচর্চার অন্য কাজেও। ত্বকের নির্জীবতা দূরে এটি মিনিটেই কাজ করে। শুধু ঠান্ডা গোলাপজল মুখে স্প্রে করে নিতে হবে, ব্যস। নিমেষেই ত্বক তরতাজা হয়ে উঠবে। সানবার্ন থাকলে তা থেকেও আরাম মিলবে। বিশুদ্ধ গোলাপজল ক্লিনজার হিসেবেও দারুণ। বাইরে থেকে বাসায় ফিরে তুলার বল কিংবা ক্লিনজিং প্যাডে গোলাপজল নিয়ে মুখ মুছে নিতে হবে। ত্বক পরিষ্কার হবে, সেই সঙ্গে র‌্যাশ আর অ্যাকনের সমস্যাও কমবে।
কেওলিন ক্লে (চীন)
প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফুড পয়জনিং, পেটব্যথা, ইনফেকশন, মিনারেল ডেফিশিয়েন্সি ইত্যাদি নানা সমস্যায় ক্লে ছিল মহৌষধের মতো। এ ছাড়া ক্লে-র সঙ্গে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে তা মাখানো হতো ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতের ওপর। যা সেরেও যেত জাদুর মতো করে। ইতিহাসবিদদের ধারণা, এভাবেই রূপচর্চায় এর আবির্ভাব। কেওলিন ক্লে যার মধ্যে অন্যতম। হোয়াইট ক্লে বা চায়না ক্লে হিসেবেও এটি বহুল প্রচলিত। প্রাথমিক পর্যায়ে মিনারেল কেওলিনাইট থেকে তৈরি করা হয় ক্লে। কেওলিন শব্দটা এসেছে গাওলিং থেকে। চীনের জিয়ানশির দক্ষিণ-পূর্ব প্রদেশে অবস্থিত ছোট একটি গ্রাম এটি। পোরসেলিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এই ক্লে, তাই বোঝাই যাচ্ছে ত্বককে মসৃণ ও জেল্লাদার করে তুলতে এর জুড়ি নেই। এর ডিটক্সিফায়িং এবং স্টিমুলেটিং ইফেক্ট ত্বকযত্নেও দারুণ কার্যকর। এই ক্লে কোমল ক্লিনজার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু বছর। যার ব্যবহারে ত্বকের দূষণ গভীর থেকে পরিষ্কার হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত তেলও শুষে নেয় ত্বক থেকে। কোনো ধরনের লালচে বা অস্বস্তিকর ভাব তৈরি না করেই। এ ছাড়া ব্রণ আর অ্যাকনে দূর করতেও অনেকে ব্যবহার করেন এই ক্লে। যাদের ত্বকে ঘন ঘন ব্রেক আউটের সমস্যা হয়, তাদের জন্য মাস্ট হ্যাভ আইটেম এটি। যাদের তেলে ত্বকের সমস্যা, নিয়মিত ক্লে ব্যবহারে উপকার মিলবেই। শুধু কি তাই! ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল আর টান টান। কারণ, ফাইন লাইন আর বলিরেখা দূরেও অব্যর্থ এটি। চীনে উৎপাদিত হলেও বাজারে মিলবে ব্রাজিলিয়ান রেড আর ক্রুড ক্লে। ক্লিনিক্যালি যার ব্যবহার ত্বকের ইলাস্টিসিটি আর ফার্মনেসকে প্রভাবিত করে। তারুণ্যোজ্জ্বল দেখায় ত্বক। র‌্যাশের উপশম হিসেবেও এর ব্যবহার বেশ পুরোনো। শুধু ত্বক নয়, চুলের পরিচর্যাতেও ব্যবহার করা যায় অনায়াসে। প্রক্রিয়াটাও একদম সহজ। সাধারণ শ্যাম্পুর সঙ্গে সামান্য কেওলিন ক্লে মিশিয়ে ব্যবহৃত হতে পারে। এতে চুলের পাশাপাশি স্ক্যাল্পও পরিষ্কার হবে। ফ্রেশ থাকবে অনেক দিন। প্রায় তিন ধরনের কেওলিন ক্লে সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত হয়। রোজ বা পিঙ্ক রঙা ক্লে-তে থাকে কপার, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম আর জিঙ্কের উপস্থিতি। মানবত্বকের কাছাকাছি পিএইচ লেভেল থাকায় এই ক্লে স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার উপযোগী। রেড ক্লে-তে মিলবে উচ্চ মাত্রার আয়রন অক্সাইড, যা চটজলদি ত্বককে কোমল করে তোলে। বুড়িয়ে যাওয়া কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের জন্য এটি বেশি ভালো। ক্লিনিক্যাল স্টাডিজগুলোতে দেখা গেছে, রেড কেওলিনের ব্যবহার ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়; করে তোলে পরিপুষ্ট। আর গ্রিন ক্লে-তে মিলবে প্রাচীন সব গাছের অবশিষ্টাংশ। সঙ্গে আয়রন অক্সাইড। এর শোষণক্ষমতা উচ্চমাত্রার। তাই যাদের ত্বক অতিরিক্ত তেলে এবং ব্রণের সমস্যা আছে, তাদের জন্য সেরা।
অ্যাভোকাডো (মেক্সিকো)
প্রাচীন অ্যাজটেক, মায়া এবং ইনকা সভ্যতার মানুষের ধারণা ছিল, এই ফলের দৈবিক ক্ষমতা রয়েছে। ফলাফল—এর ক্বাথ বের করে শরীরে আর মুখে ব্যবহারের প্রচলন জনপ্রিয় হতে থাকে। দৈবিক ক্ষমতার জেরেই হোক বা পুষ্টিগুণে—ত্বকের সমস্যা সমাধানে এর আশ্চর্য শক্তির চর্চা ছড়াতে শুরু করে চতুর্দিকে। এরপর ১৮৭১ সাল নাগাদ অ্যাভোকাডো সীমানা ছাড়িয়ে পাড়ি জমায় আমেরিকায়। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। শুষ্ক ত্বকের যত্নে এর ব্যবহার যেমন অব্যর্থ, তেমনি স্ক্রাব থেকে শেভিং ক্রিম—সব হিসেবেই আশানুরূপ ফল মেলে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকেও এটি ব্যবহার উপযোগী। এ ক্ষেত্রে লেবুর রস আর ডিমের সাদা অংশ সহযোগে ব্যবহার করতে হবে অ্যাভোকাডো। তেলে ভাব কেটে যাবে, অতিরিক্ত শুষ্কতাও তৈরি হবে না। চুলের যত্নেও কম যায় না এটি। প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি চুলকে করে তোলে মজবুত। ফলে বেড়ে ওঠে দ্রুত। সেই সঙ্গে মাথার ত্বকের অস্বস্তি, চুলকানি আর খুশকি দূর করতেও এর জুড়ি মেলা ভার।

মডেল: বর্ণ
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top