skip to Main Content

ইভেন্ট I ফ্যাশন আর্টের মেলবন্ধন

২৭ অক্টোবর ২০২২। রাজধানীর আমেরিকান এম্বাসি এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনে বসেছিল ফ্যাশন আর্টের তৃতীয় সিজন। আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ডিজাইনার এবং ফ্যাশন আর্টের প্রতিষ্ঠাতা আকাউ ডেলাকুরের সঙ্গে দেশীয় ফ্যাশন ডিজাইনার নাশরা আলম, রাবাব রহমান ও সাফিয়া সাথীর শৈল্পিক প্রতিভা প্রদর্শিত হয় সেই আয়োজনে।
আয়োজনের সন্ধ্যায় সেলিস্ট রাজেফ খান বাড়তি প্রাণ যোগ করেন সেলো বাজিয়ে। এতে ফ্যাশন আর্ট শোর জন্য নিখুঁত মেজাজ আপনা-আপনি তৈরি হয়ে যায়। মূল শো শুরুর আগে ডিজাইনার ও স্পন্সরদের করা হয় পুরস্কৃত।
সাফিয়া সাথীর নজরকাড়া সব পোশাক প্রদর্শনীর মাধ্যমে শুরু হয় শো। সমসাময়িক ও ঐতিহ্যগত থিমের সুস্পষ্টতা ছিল পুরো কালেকশনে। সিক্যুইন, ফ্লোয়ি টাসেল, রাজকীয় মখমল, পালক, ঝালর এবং মুক্তা দিয়ে অলংকৃত পশম ব্যবহার করা হয় পোশাকের এমবেলিশমেন্টে। প্রতিশ্রুতিশীল এই ডিজাইনার তার ডিজাইনে বিভিন্ন টেক্সচার নিয়ে নিরীক্ষা করেছেন; পাশাপাশি বিয়ের পোশাককে দিয়েছেন নতুন রূপ।
সেগমেন্টের শেষে একটি হাই-স্ট্রিট রয়্যাল ব্লু ভেলভেট গাউনে মঞ্চে হাজির হন ডিজাইনার সাফিয়া সাথী। সাবেক মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর সঙ্গে মঞ্চে হাঁটেন। ঐশীর পরনে ছিল চকচকে স্বর্ণালি রঙের একটি জমকালো ব্রাইডাল গাউন।
এর পরপরই তারকা মডেল জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া মঞ্চে উঠে আসেন। পরনে ছিল ডিজাইনার সেলিনা নুসরাতের মাস্টারপিস চ্যান্টিলি ব্র্যান্ডের পোশাক। স্ট্র্যাপলেস গোলাপি টপ, মখমলের অ্যাসিমেট্রিক স্কার্ট আর কোমরে চকচকে সবুজ বেল্টে মারমেইডের মতো দেখাচ্ছিল তাকে।
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে এক দশকের বেশি সময়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাবাব রহমান শো-তে প্রদর্শন করেন তার এক্সক্লুসিভ রাস্টিক, আর্দি সব পোশাকের কালেকশন। পরে আরও প্রদর্শিত হয় কোয়ার্কি ডিজাইনের একটি লাইন। আউট অব দ্য বক্স সব রং ও বিভিন্ন থিম নিয়ে যে তিনি খেলতে ভালোবাসেন, তাই ফুটে ওঠে তার ডিজাইনে। সেগমেন্টের সমাপ্তি টানেন সাবেক মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ তানজিয়া জামান মিথিলা। চোখধাঁধানো ইরিডিসেন্ট কালো শাড়ি পরে মঞ্চে হাঁটেন তিনি।
ডিজাইনার নাশরা আলমের ইন্দো-ওয়েস্টার্ন কাটগুলো রানওয়েতে যোগ করে ভিন্নমাত্রা। প্রতিটি আউটফিটে প্রাধান্য পায় পদ্মের প্যাটার্ন আর আরামদায়ক কোমল সব রং। স্নিগ্ধতা আর সরলতা প্রকাশে। কালেকশনে আরও নজর কাড়ে হট পিঙ্কের মতো উজ্জ্বল সব রং। অল হোয়াইট হাই কলারড বডিস্যুটের সঙ্গে রাফলড কেপের জোড়ও নজর কাড়ে উপস্থিত দর্শকদের।
একটি গুরুত্বপূর্ণ নোটে আয়োজনের সমাপ্তি টানেন আকাউ ডেলাকোর। তার মেইসন ডেলাকোরের উপস্থাপনায় ছিল আভাঁ-গার্দের স্বাক্ষর। আউসমাউল কবিরের উন্মত্ত বিটের সঙ্গে আকাউ ডেলাকোরের পোশাকের কোয়ার্কি শেপ, আউট অব দ্য ওয়ার্ল্ড থিম এবং ক্যাম্প ইন্সপায়ারড নকশা সবাইকে অবাক করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিউ শেষে ডিজাইনার মঞ্চে উঠে আসেন একটি অল-গ্রিন স্যুটে। সঙ্গে ছিলেন তানজিয়া জামান মিথিলা। তার পরনে ছিল হাই স্লিট দেওয়া গ্লিটারি ট্রেইনের মিডনাইট সিক্যুইনড স্ট্র্যাপলেস ব্লু গাউন।

ফ্যাশন আর্টের এই সিজনের থিমে স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি প্রাধান্য পায় ইন ক্লু সিভিটিও। বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা ডিজাইনারদের কালেকশনে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল সয়সেভেন্টিওয়ান, মেইসন ডেলাকোর, কে আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি, জিবিইএল এবং বোনানজা ট্রাভেলস লিমিটেড। ইভেন্ট ডেকরের দায়িত্ব সামলেছেন সানজিদা হক আরেফিন লুনা। কোরিওগ্রাফি করেন ইমরান আলী শিকদার। মেকওভার পার্টনার ছিল পারসোনা। ইভেন্ট পার্টনার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকা, সিকিউরএক্স এবং ড্যাজল বাই সোনিয়া। মিডিয়া পার্টনার ছিল ক্যানভাস ও ঢাকা ট্রিবিউন।
আকাউ ডেলাকোর এই বছর ফ্যাশন আর্ট ইভেন্টের আয়োজন করতে সারজিল আহমেদ কাজী মুত্তাকিকে পার্টনার হিসেবে বেছে নেন। ব্যক্তিগতভাবে আকাউ ডেলাকোর হলেন ইএসএমওডির একজন প্রাক্তন ছাত্র, যিনি আকাউ ফ্যাশন লেবেলের অধীনে ব্রুকলিন ফ্যাশন উইক, হাওয়ার্ড হোমকামিং ফ্যাশন শোসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের বেশ কিছু ফ্যাশন শোতে অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে, লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে ডিগ্রিধারী সারজিল আহমেদ কাজী মুত্তাকি একজন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং উদ্যোক্তা। বর্তমানে টেক্সটাইল বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে তৈরি সাসটেইনেবল ফ্যাশন নামের একটি কোম্পানি পরিচালনা করছেন; পাশাপাশি কে আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টরও তিনি।

 ফুয়াদ রূহানী খান
ছবি: মাল্টিপ্লাই ডিজিটাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top