skip to Main Content

টেকসহি I বিউটি উইদ বেনিফিটস

একের মধ্যে দুই—সুন্দরতা আর যত্ন। আকর্ষণীয়ই বটে। কিন্তু আদতে কতটা কার্যকরী, সেই প্রশ্নও আসে। সারাহ্ দীনা খুঁজেছেন উত্তর

মেকআপ। খুব চেনা, খুব জানা একটি বিউটি প্রোডাক্ট লাইন। ব্যবহার করা হয় ত্বককে আরও পলিশড দেখাবার আকাঙ্ক্ষায়। সত্তরের দশকে এলিজাবেথ আরডেন আর এস্টে লডারের হাত ধরে বাজারে আসে হাইব্রিড ক্যাটাগরি বিউটি প্রোডাক্ট, মেকআপ উইদ স্কিন কেয়ার বেনিফিট। টিনটেড ময়শ্চারাইজার আর এসপিএফ সমৃদ্ধ লিপ বাম নিয়ে শুরু পথচলা। কলেবরে বেড়েছে এত বছরে। হরহামেশা বাজারে বিকোচ্ছে। নতুন নতুন ব্র্যান্ড নাম লেখাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলাফল—ক্রেতা এখন মেকআপ ফাউন্ডেশনের ফিচারে গুণাগুণ খুঁজতে গিয়ে জানতে পারছেন, বেইজ তৈরির পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও এটি ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আবার অনেক কনসিলারের দাবি, নিয়মিত ব্যবহারে দাগছোপ শুধু ঢাকা পড়ে যাবে তা নয়; মুছেও যাবে। মুহূর্তেই লুফে নেওয়ার মতো বিষয়, তাই না!
একাধিক যত্নের প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন প্রসাধনে এখন বিউটি বিশ্ব সয়লাব। এই লাইনের পাকা খেলোয়াড় ব্লেমিশ বাম। ডাকনাম বিবি ক্রিম। ক্রেতাপ্রিয়তার চূড়ান্তে এর অবস্থান সেই ২০১০ সাল থেকে। স্কিন কেয়ার বেনিফিটেড মেকআপের আধুনিক অধ্যায়ের শুরুয়াত এই প্রোডাক্টের হাত ধরে; যা চলছে এখনো। কোরিয়ান বিউটির দর্শনের প্রভাবও এখানে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে। তাদের ক্লিন বিউটি মুভমেন্ট এবং জুম এরা মিনিমালিজমের উত্থানকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। লাইটওয়েট ও মাল্টিটাস্কিং প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহের পারদের মাত্রা বেড়েছে দিন দিন।
বেনিফিট ব্যাখ্যা
প্রচলিত মেকআপে যেসব উপাদানের উপস্থিতি সেটিকে ত্বকযত্নের জন্যও উপযুক্ত করে তোলে, সেই তালিকা বেশ লম্বা। হায়ালুরনিক অ্যাসিড, ল্যাকটিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড, রেটিনল, সিরামাইড, গ্রিন টি, প্যারাবেন, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, ভিটামিন ই, গ্লিসারিন, ল্যাভেন্ডার অয়েল, মিনারেল অয়েল, ভিটামিন সি, ময়শ্চারাইজার, জোজোবা অয়েল এবং বহুশ্রুত এসপিএফ। প্রতিটির রয়েছে ভিন্ন গুণকাব্য। আছে ব্যবহার করার আলাদা ব্যাকরণ। সেসবের বাইরে গিয়ে এসব উপাদান মিলেমিশে একত্র হচ্ছে মেকআপ প্রোডাক্ট আর স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট উপাদানে।
সেলিব্রিটি ডারমাটোলজিস্ট ডা. হারসনা বিজলানিও কথা বলেছেন এই প্রোডাক্ট লাইন সম্পর্কে। ইন্টারনেটের কল্যাণে তার বক্তব্য থেকে জানা যায়, বেশির ভাগ মানুষ ত্বকে প্রসাধন প্রয়োগের বেলায় প্রথম লেয়ারে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন। কারণ, দীর্ঘ সময় চেহারায় সাজের আস্তরণ। সরাসরি ত্বকে বিউটি প্রোডাক্টের স্পর্শ না হোক, সেটাই এখানে উদ্দেশ্য। জনপ্রিয় প্রোডাক্ট লাইন হাইব্রিড বিউটিতে স্কিন কেয়ার ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, তা যেন ত্বকে শুধু সুন্দরতা বাড়িয়েই সমাপ্তি না টানে। কোনো ক্ষতির কারণ না হয়ে ত্বকে যেন ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে।
কসমেটিক কেমিস্ট জিঞ্জার কিংয়ের ভাষ্যও যোগ করা যেতে পারে এখানে। তিনি বলেন, অনেক ক্রেতা মেকআপ ব্যবহার করতে ভয় পান। কারণ হিসেবে তারা বলেন পোরস বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা। এমন ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আশ্বাস হিসেবে কাজ করে অ্যান্টি অ্যাকনে মেকআপ।
কার্যকারিতার প্রশ্নে
মেকআপে উপস্থিত স্কিন কেয়ার উপাদান কি কাজের? এই প্রশ্নের উত্তর এক শব্দে দিতে চাইলে বলতে হবে, ‘হ্যাঁ’। কারণ, এই উপকরণগুলো ক্ষতিকর নয়; উপকারী। তবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন এটিও মনে রাখতে, শুধু মেকআপেই সমাধান পাওয়া যাবে, বিষয়টি এমন নয়। তাই আলাদা করে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়ার বিষয়টি খেয়াল রাখলে পাওয়া যেতে পারে সুস্থ ত্বক। একই সঙ্গে কোন উপাদান ত্বককে কেমনভাবে সাহায্য করতে পারে, সে বিষয়েও ধারণা রাখা প্রয়োজন। তবেই চাহিদা বুঝে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
গুণীজন কহেন
দিল্লির চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গীতিকা শ্রীবাস্তবের এ বিষয়ে বয়ান পাওয়া যায় অন্তর্জালে। তিনি বলেছেন, যেকোনো স্কিন কেয়ার উপাদানের গুণপনার বিস্তরণ ঘটতে অন্তত একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়মিত ব্যবহার করা চাই। মেকআপ প্রোডাক্টের ক্ষেত্রেও এই সূত্র। তাই সৌন্দর্য প্রসাধন ব্যবহারে ত্বকের অবস্থার উন্নতি করতে চাইলে নিয়মিত হওয়া জরুরি। হুট করে একদিন ত্বকে প্রলেপ দেওয়া হলে তাতে ত্বক উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি নয়। আবার এই তথ্যও সত্য, মেকআপ দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা ক্ষতিকর। পোরস বন্ধ করার অপরাধে অপরাধী এই মেকআপ! তাই রোজ মেকআপ ব্যবহার করতে চাইলে প্রথমে সচেতন হতে হবে ত্বকের ধরন সম্পর্কে। তারপরে পণ্যমান, উপকরণের উপযোগিতা—এসব আসবে আলোচনায়। সেখান থেকে অ্যাকনে ও অনুজ্জ্বলতার সূত্রপাত।
শ্রীবাস্তব আরও যোগ করেন, মেকআপের বোতল খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রসাধনটি বাইরের পরিবেশের সংস্পর্শে আসে। সেখান থেকে শুরু দূষিত হওয়ার আশঙ্কা। আবার ব্রাশ এবং বিউটি ব্লেন্ডারে আশ্রয় করে নিতে পারে জীবাণু। আর কোনোভাবে সেই জীবাণু যদি পৌঁছে যায় ত্বকের সারফেসে, তাহলে ব্রেকআউট তো মাস্ট।
একই পণ্যে একাধিক গুণের সম্মিলন ক্রেতা আগ্রহের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া ত্বকের বাহ্যিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে তার সুস্থতাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সময়ে। ক্রেতার চাহিদা বুঝে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে আগ্রহী হচ্ছে বিউটি ব্র্যান্ডগুলো। চাহিদার সঙ্গে মিলমিশ না হলে সেখান থেকে বিমুখ হচ্ছেন ক্রেতা। চটজলদি নিচ্ছেন সিদ্ধান্ত। বিকিকিনিতে তাই দিন দিন আরও বেশি মনোযোগ পাচ্ছে ডুয়াল পারপাস প্রোডাক্ট। ২০২৩ থেকে এর বাজারের বিপুল ব্যাপ্তি দেখা গেছে। মার্কেট সাইজ ছিল ১৯ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩৩ সালে তা বেড়ে ৩৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top