সোমবার (১৪ জুলাই ২০২৫) ঢাকাস্থ ইন্দোনেশিয়া দূতাবাস ‘স্পাইস জার্নি অব ইন্দোনেশিয়ান টেস্ট’ নামক একটি কর্মসূচীর আয়োজন করে, যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের জনগণকে ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবারের অনন্য স্বাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। এই আয়োজনে সহযোগিতা করে ইন্দোনেশিয়ান কূটনীতিকদের স্ত্রীদের সংস্থা এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে আগত পেশাদার শেফরা, যারা সরাসরি রান্না প্রদর্শন করেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রন্ধনশিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, শেফ এবং ব্লগাররা।

সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইন্দোনেশিয়ার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আরিফ সুয়োকো। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিভাবান ইন্দোনেশিয়ান শেফদের সরাসরি রান্নার প্রদর্শনী দেখে আমরা আনন্দিত। তারা এখানে এসেছেন তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে এবং ইন্দোনেশিয়ান রান্নার শিল্প– যেখানে উপকরণ, কৌশল ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলা গল্পের এক অনন্য মিশ্রণ– সেটি উপস্থাপন করতে।’
ইন্দোনেশিয়া থেকে আগত তিন বিশেষজ্ঞ শেফ প্রাপ্ত সুমার্তো, যোগা আন্দ্রিয়ান ও ওয়াহিদিন প্রদর্শন করেন মুখরোচক প্রধান খাবার পিনডাং ইকান পাতিন (পালেম্বাং-এর টক ও ঝাল ফিশ স্যুপ) এবং দুটি মিষ্টান্ন– ক্লেপন (পান্ডান চালের বলের ভেতরে গুঁড়) ও লাপিস সুরাবায়া (সুরাবায়া স্তরিত কেক)। দর্শনার্থীরা রান্নার ধাপগুলো সরাসরি দেখতে পেরেছেন এবং পরবর্তীকালে তা নিজেরাও বাড়িতে তৈরি কিংবা নিজেদের রেস্টুরেন্টের মেনুতে যুক্ত করতে পারবেন।

প্রথমে রান্না করা হয় পিনডাং ইকান পাতিন, যা দক্ষিণ সুমাত্রার পালেম্বাং শহরের একটি জনপ্রিয় টক, ঝাল ও ঝোলযুক্ত মাছের স্যুপ। এই খাবারের জন্য ব্যবহৃত পাঙ্গাস মাছ বাংলাদেশে সহজলভ্য হওয়ায় এটি বেছে নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, বাংলাদেশের বর্ষার আবহাওয়ায় এই উষ্ণ মাছের স্যুপ বেশ উপযোগী।
এরপর তৈরি করা হয় লাপিস সুরাবায়া, একটি তিন স্তরের হলুদ-বাদামি রঙের নরম ও স্যাঁতসেঁতে কেক, যার প্রতিটি স্তরে জ্যাম বা স্প্রেড দেওয়া থাকে। জন্মদিন বা বিশেষ দিনগুলোতে ইন্দোনেশিয়ানদের জন্য এটি একটি জনপ্রিয় ডেজার্ট। শেষে বানানো হয় ক্লেপন, একটি সবুজ রঙের চালের কেক যা ভেতরে তরল গুঁড় এবং বাইরে নারকেলের কোরায় মোড়ানো। এর মিষ্টি ও হালকা ঝাল স্বাদ দর্শকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়তা পায়; কারণ এটি সহজেই বাড়িতে রান্না করা সম্ভব।

রান্না প্রদর্শনীর পর অতিথিদের জন্য প্রস্তুতকৃত খাবার পরিবেশন করা হয়। এই আয়োজন ইন্দোনেশিয়ান গ্যাস্ট্রোনোমি (রন্ধনশিল্প) প্রচারের সপ্তাহব্যাপী প্রোগ্রামের অংশ, যা বাংলাদেশের ঢাকা এবং নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগের দিন (১৩ জুলাই ২০২৫) ঢাকায় ইন্দোনেশিয়ান ডায়াস্পোরাদের জন্য একটি রান্না প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়, যাতে তারা বাংলাদেশি পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ান খাবার জনপ্রিয় করতে পারেন। এই প্রচারাভিযানটি আগামী ১৭-১৮ জুলাই ২০২৫ নেপালের কাঠমান্ডুতে শেফ ও রন্ধনশিল্প শিক্ষার্থীদের জন্য আরও একটি রান্না কর্মশালার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
- ক্যানভাস অনলাইন
ছবি: ঢাকাস্থ ইন্দোনেশিয়া দূতাবাস-এর সৌজন্যে

