skip to Main Content

ফিচার I সৌন্দর্যসামগ্রীর বিশুদ্ধকরণ

যেকোনো সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ব্যবহার্য সৌন্দর্য উপকরণের স্যানিটাইজেশন জরুরি। এই নিউ নরমালে উপাদান ও উপায়টাও গেছে বদলে

অনেকেই মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করে থাকেন। কিন্তু করোনাকালে কেবল এটিই নয়, সব সরঞ্জামসহ বক্সটিও স্যানিটাইজ করা জরুরি। ৭০ শতাংশ অ্যালকোহল এবং ৩০ শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল (আইপিএ) হতে পারে মেকআপ প্রোডাক্ট স্যানিটাইজ করার ক্ষেত্রে ভালো একটি উপায়।
অন্যের ব্যবহার্য মেকআপ সামগ্রী যেমন ব্যবহার করা ঠিক নয়, তেমনি নিজেরটাও অন্যদের দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। সরঞ্জামগুলো নিরাপদ রাখতে আরও যেসব পদ্ধতি মেনে চলতে হবে, সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
পেনসিল
প্রতিবার ব্যবহারের আগে পেনসিলটি (আইলাইনার, লিপ পেনসিল) তীক্ষ্ন করে নিন। এতে উপরের অংশে কোনো ব্যাকটেরিয়া লেগে থাকলেও সেটি চোখ বা ঠোঁট পর্যন্ত পৌঁছাবে না। টিস্যুতে অল্প ডিসইনফেকট্যান্ট স্প্রে করে পেনসিলের চোখা দিকটি আলতো করে মুছে নিতে হবে।
ক্রিম
ক্রিম মেকআপের প্রোডাক্টের (ক্রিম বা স্টিক ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক, ক্রিম হাইলাইটার, ক্রিম কনটুর, জেল আইলাইনার, লিপস্টিক) উপরিভাগ আর চারপাশ স্যানিটাইজিং ওয়াইপ দিয়ে মুছে ফেলুন। এরপর স্যানিটাইজার দিয়ে একই জায়গা আবার মুছে তারপর সেটি ব্যবহার করুন।
পাউডার প্রোডাক্ট
টেবিলের ওপর আইশ্যাডো প্যালেট, ব্লাশার, ফেস পাউডার, পাউডার হাইলাইটার, পাউডার কনটুর- এসব প্রোডাক্ট পাশাপাশি রাখুন। প্রতিটি উপকরণের বক্স বা প্যাকেজিং আলাদা স্যানিটাইজিং ওয়াইপ দিয়ে ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার করে নিন। এরপর ১৫ সেন্টিমিটার দূর থেকে ডিসইনফেকট্যান্ট দিয়ে স্প্রে করুন।
মাশকারা
এটি স্যানিটাইজ করাটা সহজ নয়! একবার চোখে ব্যবহার করে আবার বোতলে ঢুকিয়ে ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই সেটা দূষিত হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দুটি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। প্রথমত ডিসপোজেবল ওয়ান টাইম মাশকারা ওয়ান্ড ব্যবহার। দ্বিতীয়ত, প্রতি মাসে মাশকারা বদলানো।
লিপ গ্লস
লিপ গ্লসেরও একবার ব্যবহারের পরপরই দূষিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এটি এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো হাত স্যানিটাইজ করা। হাতের চেটোয় লিপ গ্লস লাগিয়ে সেটার ওপর ব্রাশ বা আঙুল দিয়ে ঠোঁটে গ্লসটা লাগিয়ে নিতে হবে।
স্পঞ্জ
রিইউজেবল স্পঞ্জ শতভাগ স্যানিটাইজ করা যায় না। এতে ব্যাকটেরিয়ার বসতি গড়ার আশঙ্কা সব সময়ই থাকে। তাই ডিসপোজেবল স্পঞ্জ ব্যবহার করাই ভালো। যদি একান্তই পরিষ্কার করতে হয়, তাহলে কুসুম গরম পানিতে একটু লিকুইড ডিশ সোপ দিয়ে স্পঞ্জটা ভিজিয়ে নিতে হবে। পরিষ্কার হয়ে গেলে একটি পানিযুক্ত পাত্রে স্পঞ্জটি ভিজিয়ে মাইক্রোওয়েভে দুই মিনিট রাখলে ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস এবং ভাইরাস থেকে অনেকটাই নিস্তার পাওয়া যাবে। প্রতিবার ব্যবহার করার সময় এই উপায় অবলম্বন করা যায়।
ব্রাশ
প্রতিবার ব্যবহারের পরেই কুসুম গরম পানিতে বাজারে লভ্য বিশেষ ব্রাশ সোপ কিংবা বেবি শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। সেটা অন্তত সপ্তাহে একবার অবশ্যই করা প্রয়োজন। খেয়াল রাখা দরকার, ব্রাশের কোনো ব্রিসেল যেন পরিষ্কার করার সময় নষ্ট না হয় বা ভেঙে না যায়। বাড়তি পানি ঝরানোর জন্য ব্রাশটি একটি টিস্যু দিয়ে মুড়ে এর মূল ডিরেকশনের দিকে স্কুইজ করতে হবে। এরপর ব্রাশটি ২০ মিনিট ডিসইনফেকট্যান্টে ভিজিয়ে রাখা জরুরি। আবারও আরেকটি পাত্রে পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে একইভাবে ব্রিসেল থেকে পানি ঝরিয়ে ফেলতে হবে। টিস্যুর ওপর সারা রাত রেখে দিতে হবে, যাতে পুরোপুরি শুকিয়ে যায়।
আই ল্যাশ কার্লার
একটা স্যানিটাইজিং ওয়াইপ দিয়ে কার্লারটি পরিষ্কার করতে হবে, যাতে একটুও মাশকারা বা ব্যাকটেরিয়া ওটার গায়ে লেগে না যায়। এরপর ডিসইনফেকট্যান্ট দিয়ে স্প্রে করে নিতে হবে।
মেকআপ ব্যাগ
ব্যবহৃত মেকআপ ব্যাগটি যেন ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে নেওয়া যায়। ধোয়া হয়ে গেলে ডিসইনফেকট্যান্ট দিয়ে ব্যাগটি স্প্রে করে শুকাতে হবে। যদি সেটি চামড়ার তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে স্যানিটাইজিং ওয়াইপ দিয়ে বারবার মুছে স্যানিটাইজিং মিস্ট স্প্রে করা জরুরি।
মনে রাখতে হবে, মেকআপ স্যানিটাইজ করা কখনোই প্রোডাক্ট রিপ্লেসমেন্টের বিকল্প হতে পারে না। মেকআপ পণ্য পুরোনো বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলে অবশ্যই সেটি আর ব্যবহার করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।

 সুরবি প্রত্যয়ী
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top