ফিচার I সন্ধিসময়ের পোশাক
শীতের শেষে ও বসন্তের শুরুতে পরা যায়, এমন আউটফিট। সেগুলোর প্যাটার্ন এবং কালার কেমন? ড্রেস আর ফুটওয়্যার সিলেকশনটাই-বা কেমন করে ঘটে? লিখেছেন তাসমিন আহমেদ
শীত ও বসন্তের সন্ধিসময়ে নজর দেওয়া দরকার পোশাকের দিকে। একবার পরেই বাতিল করে দেওয়ার পরিবর্তে বেছে নিতে হবে টাইমলেস আউটফিট। এমন কোনো ট্রেন্ড তৈরি হতে পারে, যা ক্ল্যাসিক ফ্যাশনকে আধুনিকভাবে উপস্থাপন করবে। তার মানে এই নয় যে বসন্তের জন্য ওয়্যারড্রোব ভরিয়ে ফেলতে হবে। কিছু চমৎকার উপায় রয়েছে শীতের পোশাককে বসন্তের উপযোগী করে নেওয়ার।
প্রাণিত হোন নতুন কোনো স্প্রিং কালারে। শীতের রং পরতে পরতে ক্লান্ত? উদ্বুদ্ধ হতে পারেন ল্যাভেন্ডারের মতো অব দ্য মোমেন্ট কালারে। এই ব্রাইট আউটফিট একঘেয়েমি থেকে কিছুটা নিস্তার দেবে। একটি পেস্টেল টি-শার্ট কন্ট্রাস্ট উইন্টার লুককে কোমল করে তুলতে পারে। এর সঙ্গে একটি প্রিটি অ্যাকসেন্ট কালারের স্কার্ফ পরে নিলে তা লুকে প্রফুল্ল বসন্তের উষ্ণতা এনে দেবে, ঝলমলে করে তুলবে। শীত বিদায় হলে বুটজোড়াও এক বছরের জন্য প্যাক করে নিতে হবে। পরিবর্তে পায়ে গলিয়ে নেওয়া যায় এক জোড়া চটকদার, ক্ল্যাসিক ফ্ল্যাট। এগুলো শর্টস অথবা পছন্দের সাদা জিনিসের সঙ্গে পরা যায় একেবারে গ্রীষ্ম পর্যন্ত।
বছরের এই সময়ে ফ্যাশনওয়্যারের শপগুলো থেকে ফ্রেশ, আনকোরা কিছু খুঁজে নিতে হয়। সব সময় যে পাওয়া যায়, তা-ও নয়। এ ক্ষেত্রে দ্বিধা না রেখে নজর দেওয়া যেতে পারে স্প্রিং প্যাটার্নের কিছু ডার্লিং শর্ট ড্রেসের দিকে। যেহেতু বাইরে এখনো হালকা ঠান্ডা আছে, তাই শীতের লেগিংস তুলে না রেখে এই শর্ট ড্রেসের সঙ্গে পরে নেওয়া যায়। যথেষ্ট উষ্ণতা দেবে। শীতজুড়ে বসন্তের পোশাক পরে নেওয়াটা ওয়্যারড্রোবকে রূপান্তর করা এবং ড্রেসের সর্বাধিক ব্যবহার পাওয়ার ভালো উপায়। যেমন শীতে লেগিংসের সঙ্গে বুট পরে নিলে এবং শর্ট ড্রেসে সুইচ করলে শুধু বুট বদলে কিউট স্প্রিং স্যান্ডেল পরলেই হয়। যদি এই পোশাক না থাকে, তবে অবশ্যই সেটি ওয়্যারড্রোবে রেখে দিতে হবে।
দুই সিজনের মধ্যে সেতু তৈরি করে নেওয়া যায় একটি লাইট, এয়ার প্রিন্ট দিয়ে। শীত হলো মোটা প্যান্ট ও ওভারসাইজ সোয়েটারের মতো ডার্ক কালার, হেভি প্রিন্ট ও রিচ টেক্সারের। অন্যদিকে বসন্ত হালকা, উজ্জ্বল, পরিষ্কার ও ফুরফুরে। ঠান্ডা থেকে উষ্ণ আবহাওয়ার দিকে যাওয়ার একটি সেতু হতে পারে লাইট, এয়ারি প্রিন্ট। এমন কোনো নিয়ম নেই যে শীতে সাদা উজ্জ্বল প্রিন্টের পোশাক পরা যাবে না। তাই এ ধরনের টপসের সঙ্গে উইন্টার লেদার লেগিংস বা উইন্টার স্কার্টের কম্বিনেশনে একটি এয়ারি হোয়াইট প্রিন্ট ব্লাউজ অনায়াসে পরে নেওয়া যায়। সাদা প্রিন্টের টপস চেরি স্প্রিং কালার ও সামান্য ব্ল্যাকের ছোঁয়া- উভয়ই মিড-সিজন লুককে একসঙ্গে বেঁধে রাখতে পারে। এতে শীত ও বসন্তের মধ্যে একটি জুতসই মিষ্টি রঙ পাওয়া সম্ভব। সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে নীলের মতো কিছু ব্রাইট অ্যাকসেন্ট। ব্যতিক্রমী সব আউটফিট তৈরি এবং একই পোশাক বারবার ব্যবহারের উপায় জানা থাকলে বসন্ত উদ্্যাপন উপভোগ্য হতে পারে।
মৌসুমটা টেক্সচার ও কালার নিয়ে প্লেফুল হয়ে ওঠার। তবে শেপ রাখতে হবে সিম্পল ও ট্রেন্ড-ডিফাইন। শীতে যেসব হালকা ট্রাউজার ও ব্লেজার ব্যবহৃত হয়, সেগুলো বসন্তেও পরে নেওয়া যেতে পারে। এর সঙ্গে হালকা, কিছুটা ঢিলেঢালা টপস বা শার্ট বেশ মানিয়ে যাবে। যোগ করা যেতে পারে স্নিকার বা লাইট ওয়েট কালারফুল কোনো জুতা। আর ডেনিম জ্যাকেটের কথা না বললেই নয়। এটি শীত-বসন্তে অনায়াসে পরে নেওয়া যায়। হোক তা ফুল, হাফ কিংবা স্লিভলেস। অ্যাকসেসরিজের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যায় ঝলমলে ও দৃষ্টি-আকর্ষক কালারগুলো, যা শীত ও বসন্তে সমানভাবে পরা যায়। শীতে ক্যাপ, স্কার্ফ বা ব্যাগের কালার হিসেবে নীল, প্যাস্টেল, লাইট ব্রাউন, মনোক্রম গ্রিনের মতো রঙ বেছে নিলে সেসব বসন্তেও ব্যবহার করা যায় সহজে।
শীতের পোশাক কিছুটা ওলট-পালট করে নিলেই ভিন্ন ভিন্ন লুকে নিজেকে উপস্থাপন করা যাবে বসন্তেও।
মডেল: আঁখি ও লিন্ডা
ছবি: ক্যানভাস
মেকওভার: পারসোনা