skip to Main Content

ত্বকচর্চা I কিউটিকল কেয়ার

নখের তো বটেই, কিউটিকলেরও দরকার আলাদা যত্নআত্তি। চাই নিয়মিত পরিচর্যা

নখের নিচের দিকে ঘিরে থাকা যে সূক্ষ্ম, পাতলা ও চিকন রেখার মতো চামড়া, তাই কিউটিকল। সামান্য অংশজুড়ে থাকলেও নখের সুস্থতার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এটি নেইল বেডকে ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে। বাঁচায় নানা রকম সংক্রমণ থেকে। তাই এর নিয়মিত যত্ন নেয়া জরুরি। তবে তা হতে হবে সঠিক উপায়ে। নইলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। পেশাদার মেনিকিউরিস্ট কিংবা স্যালনের শরণাপন্ন হওয়াই এ ক্ষেত্রে বুদ্ধিমানের কাজ। তবে বাসায় বসেও কিউটিকলের যত্ন নেয়া সম্ভব।

ঘরোয়া উপায়ে

ঘরে বসে সহজ উপায়ে কিউটিকলের যত্ন নেয়া যায়। তবে সচেতনভাবে, সাবধানতার সঙ্গে। দরকার সঠিক সামগ্রী। নেইলপলিশ রিমুভার, হেয়ার কন্ডিশনার, এক বাটি উষ্ণ পানি, ময়শ্চারাইজিং লোশন, অলিভ অয়েল, টাওয়েল আর নরম কাপড়।
প্রথমে নখে থাকা পুরোনো নেইলপলিশ তুলে ফেলা চাই। তারপর কিউটিকলে হেয়ার কন্ডিশনার মেখে অপেক্ষা করতে হবে খানিকটা সময়। এতে কিউটিকল নরম হবে। তারপর কন্ডিশনার মাখা নখ উষ্ণ পানির বাটিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে মিনিট পাঁচেকের জন্য। হাত পানি থেকে উঠিয়ে টাওয়েল দিয়ে চেপে মুছে নিতে হবে। নরম একটা কাপড় দিয়ে সাবধানে কিউটিকল পেছনের দিকে ঠেলে দিতে হবে। এ কাজে পারদর্শী হলে কাপড়ের বদলে অরেঞ্জ স্টিকও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সাবধান! কোনোভাবেই কিউটিকল কাটা যাবে না। কারণ, এতে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। নখের বেড়ে ওঠাও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তারপর তিন টেবিল চামচ ময়শ্চারাইজিং লোশনের সঙ্গে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে ত্রিশ সেকেন্ডের জন্য গরম করে নিতে হবে। এই মিশ্রণ কিউটিকল আর নেইল বেডে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। তারপর পরিষ্কার হাতমোজা কিংবা গ্লাভস পরে নিতে হবে হাতে। এভাবেই শেষ হবে কিউটিকলের পরিপূর্ণ যত্ন।
এ ছাড়া একদম প্রফেশনাল কিউটিকল কেয়ারের জন্য বেশ কিছু পণ্য রয়েছে বাজারে। সেগুলো থাকলে তো সোনায় সোহাগা।

অয়েল
শুষ্ক কিউটিকলে জরুরি আর্দ্রতা জোগানোর জন্য দারুণ অপশন কিউটিকল অয়েল। নখ এবং চারপাশের ত্বকের যত্নেও তা কার্যকর। বিশেষভাবে তৈরি এ তেল কিউটিকলকে সুরক্ষিত রাখে, সঙ্গে ক্ষতি সারাইয়ে কাজ করে চমৎকারভাবে। অতিরিক্ত রোদ, ঠান্ডা ছাড়াও বেশি বেশি লবণাক্ত আর সাবান পানি হাতানো কিংবা প্রাকৃতিক দূষণের কারণে কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুষ্ক ও অমসৃণ হয়ে যায়। অয়েল আর্দ্রতার জোগান দিয়ে নেইল বেডের রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। ফলে নখও বাড়ে সুন্দরভাবে। খুব বেশি ঘন নয়, পাতলা কিউটিকল অয়েল যা নখ সহজে শুষে নেয়, এমন তেলই কিউটিকল অয়েল হিসেবে জুতসই। ফ্লাক্সসিড, হুইটগ্রাম, অ্যাপ্রিকট, স্যাফফ্লাওয়ার, ল্যাভেন্ডার কিংবা জোজোবা অয়েলে তৈরি কিউটিকল অয়েল সবচেয়ে ভালো। সঙ্গে থাকতে পারে ভিটামিন ই-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ছোট বোতল ছাড়াও কলমের আকারে পাওয়া যায় কিউটিকল অয়েল।

ক্রিম
কিউটিকল অয়েলের মতোই কাজ করে এটা। কিন্তু ফর্মুলা আলাদা। লিকুইড নয় বরং ক্রিমি ফর্মুলায় তৈরি হয় বলে এটি ব্যবহার আরও সহজ। এগুলোও কিউটিকলকে আর্দ্র রাখে। জোগায় জরুরি পুষ্টি। প্রাকৃতিক বাদাম তেল, ফল আর বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল, যেমন- অ্যাভোকাডো, অ্যাপ্রিকট আর হুইটগ্রাম এসেনশিয়াল অয়েলে তৈরি কিউটিকল ক্রিমগুলো নখের যত্নে সবচেয়ে উপযোগী। সপ্তাহে অন্তত দুবার ব্যবহার করা উচিত কিউটিকল ক্রিম। তবে অবশ্যই নেইলপলিশ উঠিয়ে নিয়ে। তারপর সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করে ব্যবহার করতে হবে নখে এবং চারপাশের অংশে। যেকোনো সময় ব্যবহারের উপযোগী হলেও এই ক্রিম ব্যবহারের জন্য রাতই উপযুক্ত সময়।

কিউটিকল রিমুভার
এটি পটাশিয়াম হাইড্রোক্সাইড যুক্ত। বাড়তি বেড়ে ওঠা কিউটিকলের সমস্যায় দারুণ সমাধান। কিউটিকলের ত্বককে নরম করতে ব্যবহৃত হয় এটি। ফলে একে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে সহজ হয়। কিউটিকল ছিঁড়ে যাওয়া কিংবা ফাটা ভাব রোধে চমৎকার এই রিমুভার। এর দুটি ধরন রয়েছে। একটি উচ্চ পিএইচ লেভেলযুক্ত, যা নেইল বেডের উপরে থাকা কিউটিকলকে নরম করে এবং মৃত কোষগুলো সরাতে সাহায্য করে। অন্যটি আলফা হাইড্রোক্সিল অ্যাসিড বেসড। এটা কিউটিকলকে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে সাহায্য করে। ক্রিম আর লিকুইড- দুই ধরনের ফর্মুলায় পাওয়া যাবে কিউটিকল রিমুভার।

ট্রিটমেন্ট
নখের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখতে কিউটিকল ট্রিটমেন্টও এখন জনপ্রিয়। কোটাবন্দি এ ট্রিটমেন্ট জেল আর ক্রিমগুলোতে থাকে প্রোটিন, পেপটাইড আর কেরাটিনের মতো নখবান্ধব উপাদান। হায়ালুরনিক অ্যাসিড ভিটামিন ই কিংবা শিয়া বাটার সমৃদ্ধও হতে পারে এগুলো। যা শুধু আর্দ্রতার জোগানই দেবে না কিউটিকলে, তা ধরেও রাখে দীর্ঘ সময়ের জন্য।

জাহেরা শিরীন
মডেল: ইন্দ্রাণী
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top