ফিচার I ব্লাশ বুলিয়ে
হবে কনট্যুরের কাজ। সত্তর প্রাণিত এ সৌন্দর্য কৌশল, সম্প্রতি টিকটকে হয়ে উঠেছে ট্রেন্ডিং। চিসলড চিকবোনের জন্য
ওয়ে ব্যান্ডি। সত্তরের দশকের জনপ্রিয় সেলিব্রিটি মেকআপ আর্টিস্ট। সে সময় ব্লাশ কনট্যুর করে সৌন্দর্যবিশ্ব মাত করে দিয়েছিলেন। তবে সত্তরে এ কৌশল পরিচিতি পায় ব্লাশ ড্রেপিং নামে। ব্লোন আউট ব্লাশ নামেও জনপ্রিয়তা কম ছিল না এর। অবশ্য ব্যান্ডি এর নাম দেন ‘কালার গ্লো’, যা সত্তর পেরিয়ে আশিতেও টিকে থাকে সদর্পে। মূলত চিকবোনে ব্লাশ দিয়ে তা কপালের টেম্পল অব্দি টেনে নেওয়া হতো এই টেকনিকে। ফলাফল—স্কাল্পটেড ফেশিয়াল ফিচার। পরে ২০০০ এ এসে জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়লেও টিকটকের কল্যাণে ফের ট্রেন্ডে ফিরে এসেছে ব্লাশ কনট্যুরিং।
ব্রোঞ্জারের মতো কনট্যুর প্রডাক্টের বদলে ব্লাশ দিয়ে কনট্যুর করে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ব্লাশ কনট্যুরিং। এ ক্ষেত্রে যেকোনো ফর্মুলার ব্লাশই ব্যবহার উপযোগী। হতে পারে তা ক্রিম, স্টিক, লিকুইড অথবা পাউডার। তবে বিশেষজ্ঞদের মতো পাউডার দিয়ে ন্যাচারাল লুক পাওয়াটা যেমন সহজ, পছন্দ অনুসারে ড্রামাটিকও করে নেওয়া যায় লুক। অনেক বেশি খাটুনি না করেই।
শেড বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও হতে হবে যত্নশীল। অনেক বেশি স্কাল্পটেড মেকআপ লুকের জন্য কুল অথবা নিউট্রাল টোনের ব্লাশন বেছে নেওয়ার পরামর্শ মেকআপ আর্টিস্টদের। যাদের ত্বক ফর্সা, তাদের জন্য ওয়ার্ম পিঙ্ক অথবা অরেঞ্জের মতো নিউট্রাল শেডের ব্লাশনগুলো বেশ জুতসই হলেও ডার্কার স্কিন টোনের ক্ষেত্রে বেরি শেডের ব্লাশন এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।
ব্লাশ কনট্যুরিংয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট জায়গায় ব্লাশ অ্যাপ্লাই করা খুব জরুরি। এ ক্ষেত্রে ছোট কিন্তু সামান্য ফোলা ব্লাশ ব্রাশ ব্যবহার বেশি সুবিধাজনক। চেহারার কোন জায়গাতে ব্লাশ মাখানো হবে, সেটা বের করার জন্য বেশ কিছু কৌশল আছে। গাল ভেতরের দিকে টেনে ধরে ফিস ফেসের মতো করে নেওয়া যায় চেহারা। এতে চিকবোনের অবস্থান বুঝে নেওয়া সহজ হয়। তারপর আঙুল কিংবা ব্রাশের সাহায্যে দ্রুত ও হালকা স্ট্রোকে কানের পাশ থেকে মিড চিক অব্দি (চিকবোনের নিচের অংশ) বুলিয়ে নিতে হবে ব্লাশ। ততক্ষণ অব্দি ব্লেন্ড করতে হবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে চিকবোন। ব্লেন্ডিংয়ের সময় খেয়াল করে চিকবোনের নিচেই ব্লেন্ড করতে হবে, যা আপওয়ার্ড স্ট্রোকে ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে মিশে যাবে চেহারায়। চিকবোনে ব্লাশন ব্লেন্ড করার পর হাফ মুন শেপে সামান্য ব্লাশ বুলিয়ে নিতে হবে গালের চারপাশজুড়ে। ব্লেন্ড করে নিতে হবে ভালোভাবে। সাধারণত গোলাকার, চারকোনা অথবা ডিম্বাকার চেহারায় এ কৌশলে ব্লাশ মাখানোর নির্দিষ্ট অবস্থান নির্ধারণ করা যায়। তবে চেহারা যে আকারেরই হোক না কেন, ব্লাশ কোথায় অ্যাপ্লাই করা হবে তা বের করার সহজ উপায় আছে। রোদে যাওয়ার পর ত্বকের যেসব অংশ একটু লালচে দেখাবে, সেসব জায়গাতেই অ্যাপ্লাই করতে হবে ব্লাশ। নাকের উঁচু অংশ ছাড়াও গালের ওপরের অংশ এ ক্ষেত্রে লালচে বর্ণ ধারণ করে সবার আগে। তারপর ব্লাশ বুলিয়ে নিতে হবে চিকবোনের ওপরে, মূলত চোখের দুপাশের অংশে। এ ক্ষেত্রে শুরুটা হেয়ারলাইন আর কপালের টেম্পল থেকে শুরু করে শেষ করতে হবে চিকবোনের ওপরে এসে। ব্রাশে থাকা অবশিষ্ট ব্লাশটুকু বুলিয়ে নিতে হবে নাকের উঁচু অংশে। অ্যাঙ্গেল করে ব্রাশ ধরে অ্যাপ্লাই করতে হবে ব্লাশ।
ডিউয়ি মেকআপ লুকে ব্লাশ কনট্যুর করতে চাইলে ক্রিম ব্লাশ ব্যবহারই ভালো। আর ম্যাট লুকের জন্য পাউডার ব্লাশ বেশি কার্যকর। তবে দুটো ফর্মুলা একসঙ্গেও ব্যবহার করা যাবে। সে ক্ষেত্রে ব্লাশ কনট্যুর টিকে থাকবে দিনভর। প্রথমে ক্রিম ব্রাশ মাখিয়ে নিয়ে এর ওপর ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নিতে হবে। এর ওপর পাউডার ব্লাশ বুলিয়ে নিলেই চলবে। পুরো দিনের জন্য সেট ব্লাশ। এ ছাড়া পুরো মেকআপ সেরে নেওয়ার পর সেটিং স্প্রেং দিয়ে নিলেও দিনভর টিকে থাকবে ব্লাশ কনট্যুর।
বিউটি ডেস্ক
মডেল: আনিকা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস