আড্ডা I গড়ে উঠুক শিল্প
ডাবিং। অর্থাৎ একজনের কণ্ঠে অন্যজনের স্বর বসানো। সারা বিশ্বে এটা চলে আসছে। বিশেষ করে বিদেশি ভাষার ছবিকে বাংলা ভাষায় ডাব করা হয়। বিজ্ঞাপনে তো ছিলই। এই চল বাংলাদেশের সিনেমায় অনেক দিনের। বিদেশি ভাষার সিনেমা এবং ধারাবাহিক সোপও বাংলায় ডাব করা হচ্ছে কয়েক দশক ধরে। কিন্তু কখনোই এই নেপথ্যের মানুষগুলোকে জনসমক্ষে আনার কাজটি হয়নি। হালের সুলতান সুলেমান সিরিজের কারণে ডাবিং আর্টিস্টরা দর্শকদের কাছে বিশেষ পরিচিত। তবে তাদের নেপথ্য কণ্ঠ কারা দিয়েছেন তা অনেকেরই অজানা। সম্প্রতি তিন প্রজন্মের ডাবিং শিল্পীদের নিয়ে এক আড্ডায় মেতে ওঠার উদ্যোগ নেয় ক্যানভাস। এতে অংশ নেন মো. ইকবাল বাবু, কামাল আহসান বিপুল, দীপক সুমন, জয়ীতা মহলানবীশ, সংগীতা চৌধুরী, সোহান চৌধুরী ও মেহবুবা মিনহাজ। ক্যানভাসের পক্ষে ছিলেন শেখ সাইফুর রহমান, নুজহাত খান, জাহিদুল ইসলাম পাভেল ও মুইনুল ইসলাম মুরাদ
এটা আসলেই কোনো ফরমাল রাউন্ড টেবিল বৈঠক নয়। নিছকই আড্ডা। তাই মন খুলে কথা বলেছেন সবাই। সবাই অনুভব করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদের অনুপস্থিতি। মার্কিন মুলুকে থাকায় তিনি যোগ দিতে পারেননি। এই আড্ডায় কোনো প্রশ্ন ছিল না। ছিল না আনুষ্ঠানিকতা। যিনি যখন পেরেছেন খেই ধরিয়ে দিয়েছেন। শুরু করেন দীপক সুমন। থিয়েটার কর্মী ও ডাবিং আর্টিস্ট; সুলতান সুলেমানের গলার জন্য যিনি বর্তমানে সবিশেষ বিখ্যাত।
দীপক: ক্যানভাসের আয়োজনে বাংলাদেশের ডাবিং শিল্প নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা একত্র হয়েছি। বাংলাদেশে বাংলা ভাষার ডাবিং খুব দূরের ঘটনা নয়। নব্বইয়ের দিকে এসে বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় ডাবিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ ভাই, ইকবাল বাবু ভাই, বিপুল ভাইরা। শুরুটা বলতেই হয় ইরানি ছবি দিয়ে। একটা সময় পর্যন্ত কলকাতা থেকে বাংলা ভাষার ডাবিং করে নিয়ে আসা হতো। আসলে দ্ইু বাংলার ভাষা বাংলা হলেও বাচনরীতিতে পার্থক্য রয়েছে। তাই বাংলাদেশেই হওয়া উচিত আমাদের এখানে প্রচারিত বিদেশি ছবি বা সিরিজের ডাবিং। আর সেটা যে সম্ভব, তার প্রমাণ সুলতান সুলেমান। একসময় এই দাবিতে লড়েছেন ইকবাল বাবু ভাইরা।
ইকবাল: ভারতে বিভিন্ন ভাষার ডাবিংয়ের অবকাঠামো আছে। ইউটিভি সেটা করেছে। সেখানে চাকরিও পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার মায়ের জন্য যেতে পারিনি। ইউটিভিতে বাইরের দেশের বিভিন্ন ছবি ওদের দেশের শিল্পীদের দিয়ে ডাব করায়।
দীপক: এটা কত সালের কথা?
ইকবাল: ১৯৯৭।
দীপক: আপনারা তো আরও অনেক আগে থেকে শুরু করেছেন।
ইকবাল: এটা অনেক পরের কথা। যেটার কথা বলছিলাম। আমাদের দেশে ফোক বা ফোক-ফ্যান্টাসি আর সাধারণ সোপগুলোর খুব চাহিদা ছিল। কলকাতার ওরা আমাদের দর্শকদের নার্ভ বা টেস্টটা খুব ভালো বোঝে। ফলে আলিফ লায়লা দিয়েই শুরু করে। আলিফ লায়লা আসে ’৮৭ বা ’৮৮ সালের দিকে। কাছাকাছি সময়ে অর্থাৎ আমরা শুরু করি ’৯০ সালে। বিটিভিতে মুভি অব দ্য উইক দিয়ে। তিন মাসে একটা ছবি বাংলায় ডাব করে প্রচারিত হতো। সেটা থাকত ইরানি ছবি। ইরানি ক্যামেরাম্যান হুসেন এটা করতেন।
সাইফুর: ইরানিয়ান যিনি এসেছিলেন তাঁর পরিচয়?
ইকবাল: পেশাগতভাবে ক্যামেরাম্যান। পরে হয়ে যান ডিপ্লোম্যাট। এখানে ছিলেন ইরানিয়ান কালচারাল সেন্টারের কালচারাল অফিসার। তিনি বিশ্বের ১৮টি দেশেই ইরানি ছবিকে জনপ্রিয় করতে ভূমিকা রেখেছেন। হুসেইনের লক্ষ্য ছিল ইরানি ছবিকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি দেওয়া। বাধা ছিল ভাষা। তাই ডাব করেই কাজটা শুরু করা হয়। অন্য দেশেও সেটা করা হয়েছে।
প্রথম ছবিটা ছিল ‘যে ফুল ফোটেনি’। খুবই সুন্দর ছবি ছিল। সেটা যেন আমাদের এখানকার দৈনন্দিন জীবনেরই গল্প। ছবিটি বিটিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর বেশ ভালো সাড়া পায়। সামনে তখন মহররম মাস। বিটিভির চাহিদা অনুযায়ী কারবালার কাহিনি নিয়ে নির্মিত ছবি দ্য মেসেজ ডাব করে দিই। বাংলায় নাম দেওয়া হয় ‘দূত’। এরপর প্রতি মাসেই ছবি দেওয়া শুরু হয়।
সাইফুর: ওই সময় আর্টিস্ট বা কাজের মানুষ পেতেন কীভাবে?
ইকবাল: আমরা থিয়েটারের কিছু শিল্পীকে নিয়েছিলাম। রাইসুল ইসলাম আসাদ ভাই, ওবায়দুল হক সরকার ভাই, আবদুল আজিজ ভাই, গাজি ভাই বলে একজন ফিল্মের অভিনেতা ছিলেন, এম এ কায়েস, আমাদের বিপুল ছিল (পাশে বসা), আমি ছিলাম, আহমেদ শরীফ ছিলেন। এ ছাড়া আমাদের সঙ্গে ছিলেন এফডিসির একজন ডাবিং আর্টিস্ট সুফিয়া খাতুন। তিনি বাচ্চা থেকে বুড়ো- সবার ভয়েস দিতে পারতেন। উনি শাবানা, ববিতা, কবরীদের ভয়েস অবিকল তাদের মতো করেই দিতেন। কেউ বলতেই পারতো না এটা আসলে তাদের ভয়েস না। সুফিয়া খাতুন বেঁচে নেই। এ ছাড়া জাকিয়া সুলতানা শান্তাও দীর্ঘদিন বিজ্ঞাপনে ভয়েস দিয়েছেন। এখনো কাজ করেন। কানাডায় থাকেন। সেখান থেকে ডাব করে পাঠান।
আমরা এ কজনই তখন শুরু করলাম। এটা নব্বই সালের কথা। তখন বিটিভিতে আলিফ লায়লা খুব জনপ্রিয়। আমাদের কাছে যেটা খারাপ লাগল তা হলো, বাংলা ভাষা বিকৃত হচ্ছে। আমি, আসাদ ভাই এসব নিয়ে কথা বলতাম।
’৯৬ সালে আবদুল্লাহ আবু সাইয়িদ ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। বিটিভির ডিজি ছিলেন সালাউদ্দিন জাকী। আসাদ ভাইয়ের সঙ্গে জাকি ভাইয়ের খুব ভালো সম্পর্ক। আসাদ ভাইকে নিয়েই শুরু হয় বিদেশে ডাব করা ছবি বন্ধের চেষ্টা। আমরা সংবাদ সম্মেলন করি। সেখানে তথ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। পরিচালক বাদল রহমান ও মামুনুর রশীদ ভাই ছিলেন আমাদের সঙ্গে। এতে বন্ধ হয় বিদেশে ডাব করা ছবি। অবশ্য সাময়িকভাবে। পরে ধান্ধাবাজরা আবার আমদানি শুরু করে।
ইবনে সিনা নামে একটি সিরিয়াল দিয়ে শুরু করলাম। তারপর থেকে বেশ কিছু সিরিয়াল হয়েছে।
দীপক: বাবু ভাই, এটা বন্ধ হয়ে যাবার কারণ কী ছিল?
ইকবাল: সাইটেক ভিশনের মনোপলি ব্যবসার অভিপ্রায়। যা হয় আরকি। আমাদেরও অফার দেওয়া হয়েছিল। রাজি হয়নি। বরং আমিই প্রথম বাধা দিই। লাভ হয়নি। মন্ত্রণালয়ে সুসম্পর্কের সুবিধা নিয়ে আমদানি শুরু করে সাইটেক ভিশন। আনে রবিনহুড, সিন্দবাদ, আলিফ লায়লা, আকবর দি গ্রেট, টিপু সুলতান। পরে আবার এখানে ডাবিং হয় সিন্দবাদ, রবিনহুড। আমিই করি।
সাইফুর: তাহলে মাঝে একটা বন্ধ্যা সময় গিয়েছে। এর কারণ কী?
ইকবাল: ইরানি ছবিগুলো বন্ধ হয়ে গেলেও প্রতি মাসে একটা করে ছবি প্রচারিত হতো চ্যানেল আইয়ে। আবার ঈদের সময়ও বাংলায় ডাব করা ছবি যেত। দ্য মাস্ক, দ্য ম্যাট্রিক্স, রোমিও-জুলিয়েট, টাইটানিকের মতো বিখ্যাত সব ছবি আমি করেছি।
সাইফুর: হালের সাকসেস স্টোরি তো সুলতান সুলেমান।
দীপক: সুলতান সুলেমানের কাজ শুরু করতে গিয়ে দেখি পেশাদার তেমন কেউ নেই। বিজ্ঞাপনে ভয়েস দেন অনেকে; কিন্তু চ্যানেলে ফুলটাইম কেউ জয়েন করবে না।
ইকবাল: দীপ্ত টিভির এই স্ট্র্যাটেজি খুবই চমৎকার ছিল। নতুন চ্যানেল হিসেবে হাউজটি এমন এক সিরিয়ালের কথা ভেবেছে, যেটা বাংলাদেশের দর্শকেরা পছন্দ করবে এবং চলবে।
দীপক: বাবু ভাই, এই প্রজেক্টের একদম শুরু থেকে আমি ছিলাম। তখন তো দীপ্ত টিভি হয়নি। আমি আর রিবা ছিলাম কাজী ফার্মসের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ‘টুন বাংলা অ্যানিমেশন স্টুডিও’। আমাদের ডাবিংয়ের ঘটনাটা আসলে আরেকটু মৌলিক জায়গা থেকে শুরু হয়েছিল। আমার একটা থিয়েটার শো থেকে ‘টুন বাংলা অ্যানিমেশন স্টুডিও’তে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘টুকি ও ঝায়ের (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযান’ অবলম্বনে বাংলাদেশের একটা মৌলিক অ্যানিমেশন টিভি সিরিয়াল করার জন্য একটা ডাবিং টিম তৈরির চেষ্টা হচ্ছিল। পাশাপাশি ছিল কার্টুন সিরিজের প্রকল্প। এগুলোর জন্য টিম তৈরি করা হচ্ছিল। আমি প্রথম ডিরেক্টর হিসেবে জয়েন করি। পরে ফুল টাইম ভয়েস অ্যাক্টর টিম নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রায় পনেরো জনের একটা টিম দাঁড়ায়। কয়েকটা পর্ব আমরা প্রায় ভয়েস দিয়েও ফেলেছিলাম। ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। ওখানে আশিজনের মতো অ্যানিমেটর কাজ করতেন। আমরা ভয়েস টিমে ছিলাম বারোজন। এরই মধ্যে দীপ্ত টিভিও যাত্রা শুরু করে। টুন বাংলা থেকে আমাদের নিয়ে আসা হয় দীপ্ততে। দীপ্তর এমডি তুরস্ক ঘুরতে গিয়ে সুলতান সুলেমানের একটা সিজন নিয়ে এসে আমাকে দেখতে বলেন। মেকিং আর ভিজ্যুয়াল দেখে আমি মুগ্ধ। মিটিংয়ে বলেছিলাম, অয়োময়, কোথাও কেউ নেই-এর মতো মানুষ নিতে পারলে ফিরে আসবে বাংলাদেশের চ্যানেল দেখার হুজুগ। তখন দীপ্ত ফ্রিল্যান্সার নিতে রাজি ছিল না বলেই আমরা বারোজন মিলেই শুরু করি। শুরুতে একেকজন পাঁচটা-ছয়টা ক্যারেক্টার করেছি। এক শ ত্রিশটার মতো চরিত্র, আমরা যাকে সামনে পেয়েছি তাকে দিয়েই কাজ করিয়েছি। পিয়ন, কুক, এইচআর কর্মকর্তা। ষাটটি পর্ব জমা দেওয়ার পর সুম্বল আগার কণ্ঠ বদলের জন্য বলা হলো। তখনই শুরু হয় ফ্রিল্যান্সার নেওয়া।
সাইফুর: সুলতান সুলেমান চরিত্র বেছে নেওয়ার কোনো কারণ ছিল কি না? তখন কি ভাবা গিয়েছিল, দর্শক এভাবে গ্রহণ করবে?
দীপক: চরিত্রটি আমিই বেছে নিয়েছিলাম। তবে এই চরিত্রে ভয়েস দেওয়া বাবদ উল্লেখযোগ্য কোনো সম্মানী পাইনি। আমি ডিরেক্টর হিসেবে জয়েন করি। ফলে জব রেসপনসিবিলিটির মধ্যে ভয়েস দেওয়ার কাজ ছিল না। ওটা আমি একপ্রকার বিনা পারিশ্রমিকেই করি। দীপ্ত সম্প্রচারের অন্তত আড়াই বছর আগে কাজটা শুরু করি আমরা। নানা ধরনের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে আসলে এই দীর্ঘ সময়ে।
এবার মনে হয় অন্য কেউ তার অনুভূতি শেয়ার করুক।
সংগীতা: হুররম ক্যারেক্টারটা প্রথমে রিবা করে। আমি সিনিয়র হুররম করেছি। আমার বন্ধুবান্ধব কেউ জানতো না। জানার পরে আমি যেখানে থাকি, সেখানকার অনেকেই আমাকে দেখতে এসেছে। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। আমি অনেক দিন অভিনয় করি। এই যে পরিচিতি, সেটা শুধুই ভয়েসের কারণে। একটা ক্যারেক্টার যে মানুষের মনে কীভাবে জায়গা করে নেয়, সেটা দেখেছি। ফেসবুকে বেশ কয়েকটা ফ্যান পেজও হয়েছে সুলতান সুলেমান নামে।
দীপক: আমি এখানে একটু যোগ করতে চাই। সুলতান সুলেমান ডাবিং শুরুর আগে আমরা বিশ্ববিখ্যাত কয়েকটি সিরিয়াল নিজেদের জন্য ডাব করি, শুধু প্র্যাকটিসের জন্য। আমরা সুকুমার রায় সমগ্র, একাত্তরের দিনগুলো পুরোটা রেকর্ড করেছি শুধু। প্রতিদিন প্রাণায়াম দিয়ে শুরু হতো আমাদের সকাল; তারপর ব্রিদিং প্র্যাকটিস করে কাজে নেমে পড়তাম। এই ধারা এখনো দীপ্ততে আছে। এভাবে ছয় মাসের মতো আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে তারপর সুলতান সুলেমানে হাত দিই। একটা বড় কাজ ভালো হবার এগুলোও একেকটা কারণ। আমাদের টিমের সবাই বিশ্বাস করতাম, একটা ভালো কাজ করছি আমরা।
সাইফুর: বাবু ভাইরা যে কাজটা শুরু করেছেন, আপনারা সেই কাজকে এই সময়ে নতুন মাত্রা দিয়েছেন। এটাকে ধরে রাখতে হলে কী করা দরকার, এই খাতে ইনভেস্টমেন্ট, ব্র্যান্ডিং; আর ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে যারা কাজ করতে চান, তারাই-বা কী করতে পারেন?
দীপক: বাবু ভাইরা যখন কাজটি শুরু করেন, তখন চ্যানেল ছিল মাত্র একটি, কোথায় কী হচ্ছে সেটারও খোঁজ পাওয়া যেত না সহজে। এখন সব তথ্যই প্রায় উন্মুক্ত, কাজের পরিধিও অনেক বেড়েছে। পৃথিবী এখন অডিও ভিজ্যুয়াল নির্ভর হয়ে পড়েছে। বাংলা ভাষায় গেমস তৈরি হচ্ছে, অনেক সফটওয়্যার তৈরি হচ্ছে। এসবে বাংলা ভয়েস দেওয়ার কাজ ভয়েস অ্যাক্টর ছাড়া সম্ভব নয়। নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঢাকা শহরে অন্তত দশটা ডাবিং স্টুডিও আছে, সেখানে ফুলটাইম কাজ করেন অনেকে। অন্তত ২০০ জন ফ্রিল্যান্সার ভয়েস আর্টিস্ট এই স্টুডিওগুলোতে কোনো না কোনো কাজ করেন। ভয়েস দেওয়াটা থিয়েটার কর্মীদের জন্য নতুন কাজের দুয়ার খুলে দিয়েছে। আমি আমার সময়ে অন্তত এমনটা পাইনি। টিউশনি করেছি, থিয়েটার করেছি- কোনটা ছেড়ে কোনটা করবো- এসবের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। এখন যারা ভালো করছেন, তাদের শিডিউল পাওয়াটা মুশকিল হয়ে পড়ে। বিপুল ভাই যেটা বলছিলেন আগে ডাবিং শিল্পীদের সম্মানী নিয়ে, সেটারও পরিবর্তন ঘটবে।
সাইফুর: এটার সুযোগ নিয়ে নিচ্ছে না তো কেউ?
বিপুল: আমাদের আর্টিস্টদের মধ্য থেকে কেউ যদি ছবিগুলো আনতেন, তাহলে আমরা আমাদের দুঃখগুলো বুঝতে পারতাম। যারা কাজ আনছেন, তারা পাঁচ টাকায় ডাবিং করিয়ে আমাদের দুই আনা করে দেন।
দীপক: আমার অভিজ্ঞতাও এমনই।
ইকবাল: তুমি বোধ হয় আরেকটা জিনিস জানো না, কলকাতায় প্রায় সব ডাবিং এজেন্সির অফিস আছে। তাদের নেটওয়ার্কও বেশ স্ট্রং।
দীপক: এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। সুলতান সুলেমানের আগের সময়ে ফিরে যাই। বাংলা ভাষার ডাবিংয়ের ধ্বনিচিত্র স্টুডিও বড় অবদান রাখছে। তাদের বড় একটা প্রজেক্ট হচ্ছে ডোরেমন। এই কার্টুন সিরিজের হাজারখানেক পর্ব প্রচারিত হয়েছে। জয়ীতা, ডোরেমনে তোমার কাজের অভিজ্ঞতা আমাদের একটু বলো।
জয়ীতা: ২০০২ সাল থেকে আমি ভয়েস দিই। সিন্দবাদ দিয়েই আমার শুরু। ধ্বনিচিত্রেরই কাজ ছিল এগুলো। তাদের পেমেন্টও খারাপ ছিল না। সুলতান সুলেমানে আমি টাকার জন্য কাজ করিনি, তা নয়। আমি আসলে চাকরি করতে চাইনি। শিল্প-সংস্কৃতির যেকোনো ক্ষেত্রে আমরা টাকার চেয়ে কাজে বেশি মনোযোগী থাকি। ত্যাগের মানসিকতা নিয়েই কাজ করি। সুলতান সুলেমান করতে গিয়ে আমাদের অ্যাক্টরস সিকিউরিটি তৈরি হয়েছে। সুলতান সুলেমান নিয়ে দর্শক প্রতিক্রিয়া থেকেই কিন্তু আমাদের মধ্যে সংঘবদ্ধ হওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়েছে।
দীপক: এই বিষয়ে আমি একটু যোগ করতে চাই। আমরা ভয়েস দিই যারা, তারাও তো শিল্পী। ক্যানভাস আজকের আড্ডার আয়োজন করেছে, এটার একটা আর্কাইভ ভ্যালু আছে। কিছু বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমরা অন্য ভাষার বই বাংলায় পড়তে চাচ্ছি অনুবাদের মাধ্যমে। তাহলে কেন আমরা অন্য ভাষার অডিও ভিজ্যুয়াল বাংলায় ডাব করে দেখব না। এটা একটা মৌলবাদী চিন্তা।
সাইফুর: এটার একটা কারণ আছে, আমরা আসলে ভালো কিছু করছি না। যখন ভালো কিছু আসে সামনে, তখন তো আমার আর জায়গা থাকবে না। এ চিন্তা থেকেই হয়তো বিরোধিতা করা বলে আমার মনে হয়।
দীপক: অডিও ভিজ্যুয়ালের ক্ষেত্রে পৃথিবীটা তো একটা গ্রামের মতো। যেখানে যা বানানো হয়, যেকোনো জায়গায় বসে দেখা যায়। সংস্কৃতিকে তো আর আইন দিয়ে আটকে রাখা যায় না। আমি এমন স্বপ্ন দেখি, আমার দেশে নির্মিত সিরিয়াল অন্য দেশে ডাব করে প্রচারিত হবে। আমাদের উচিত ভালো কন্টেন্ট হলে তবেই কাজ করা। কলকাতার উচ্চারণে বাংলায় না, আমাদের দাবিটা বাংলাদেশের বাংলা উচ্চারণে ডাব করা।
সাইফুর: আচ্ছা, আমরা সিরিয়ালের বাইরে একটু যাই। শুনি চুপচাপ বসে থাকা অমিতাভ বচ্চন ওরফে সাহানের কথা।
দীপক: ওর পরিচয়টা একটু দিই। এসএ টিভিতে কারবালা কাহিনি নামে যে ইরানি সিরিয়ালটা চলছে, সেটার মূল চরিত্র মুক্তার এর ভয়েস দিচ্ছে। এ ছাড়া দীপ্ত টিভিতে নতুন একটা সিরিয়াল আসছে, সেটার রিজাল চরিত্র ও করবে। আর ও হলো বাংলাদেশের অমিতাভ বচ্চন।
সোহাগ: আমি ভাবতে পারিনি যে, আমার কণ্ঠ এভাবে কখনো ব্যবহৃত হবে। আমাকে আবিষ্কার করেন দীপ্তর একজন প্রডিউসার। সেখান থেকে দীপক ভাইদের সঙ্গে পরিচয় এবং কাজ করা। ছোটবেলা থেকে অমিতাভের বড় ফ্যান, তার ভয়েস নকল করতাম। কেউ শুনতে চাইলে একটা ডায়ালগ শুনিয়ে দিতাম অমিতাভের। (আমাদেরকেও শুনিয়েছেন। গান, কবিতাও। সামনে না থাকলে বিশ্বাস হতো না)। টিভিসির জন্য ভয়েস দেওয়াটাও দৈবক্রম। ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেছি র্যাম্প মডেল হিসেবে। পরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে। দীপক দাদার সঙ্গে পরিচয়ের পর এই কাজ শুরু করেছি, আমার নিজেরই বিশ্বাস হতো না। এমনকি জানা ছিল না এ রকম একটা প্ল্যাটফর্ম আছে বাংলাদেশে। এখন আসলেই এনজয় করি আমার কাজ। আমি আনন্দ পাই, যখন আমার মা সবাইকে বলেন।
জয়ীতা: আমরা ক্যানভাসকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ, আমরা ভয়েস আর্টিস্টরা এভাবে কখনোই একত্র হইনি। ভয়েস আর্টিস্টদের নামই তো কেউ জানেন না। যারা কাজ করেন, তাদের নামও দিতে চান না।
ইকবাল: আমি একটা সময় অনেক ফাইট করেছি ভয়েস আর্টিস্টদের নাম দেওয়া নিয়ে। আমি যতগুলো ডাবিং সিরিয়াল করেছি, সব কটিতে নাম দিয়েছি।
দীপক: নাম দেওয়ার জন্য ফাইট করে চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছি। আমি দুই সিজন সুলতান সুলেমান করেছি। প্রথম সাড়ে তিন বছরের মতো কাজ করেছিলাম। তারপর চাকরি ছেড়ে দিয়ে তাদের ডাকে আবার যাই। প্রথমবার বোর্ড মিটিংয়ে আমাকে জানানো হয়েছিল, টাইটেল কার্ডে কিছু যোগ করতে হলে তাদের বাড়তি পেমেন্ট করতে হবে। পরেরবার তাই বলেছিলাম, আমাদের নাম দেওয়ার জন্য বাড়তি টাকাটা আমার বেতন থেকে কেটে নেওয়া হোক। কারণ, ক্রেডিট লাইনে নাম থাকাটা আমাদের অধিকারের পর্যায়ে পড়ে। এটা মালিকপক্ষের আত্মসম্মানে লেগেছিল। শেষ পর্বগুলোতে নাম গিয়েছিল আমাদের সবার।
ইকবাল: বিটিভির সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল সৈয়দ নাম দেওয়ার বিরোধিতা করেছেন। পরে আমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন আনি। তারপর উনি নাম দিলেও কিন্তু ‘বাংলাদেশে বাংলাদেশি শিল্পী দ্বারা ডাবিংকৃত’ কথাটা বাদ দেন।
জয়ীতা: মানুষ বিশ্বাসও করে না যে, এটা আসলে আমার কিংবা আমাদের কাজ। ডোরেমনের ভয়েসের সঙ্গে আমার ভয়েসের কোনো মিল নেই। পাভেল (আজাদ আবুল কালাম) একদিন ধ্বনিচিত্রে গিয়ে দেখে আমি ভয়েস দিচ্ছি; সে ওদের বলে, তোমরা বোধ হয় সাউন্ড মিক্স করে করো এসব। এটা শুনে আমি খুব হেসেছিলাম।
সংগীতা: আমার মনে আছে, হুররমের ছেলে জাহাঙ্গীর মারা গেছে। তার লাশ এসেছে। আমার এখনো বুক হু হু করে। মায়ের যে কান্না, এটা আমাকে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে। ওই সময় আমি শুধু চোখ মুছেছি আর কেঁদেছি। ওই দিন আমি আর কিছুই করতে পারিনি। চরিত্রকে অনুধাবন করা না গেলে কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
দীপক: সুলতান সুলেমানের ভয়েস আমার, এটা পরিচিত বা প্রতিবেশীরা কেউ জানতেন না। আমি বলিনি কাউকে। একটা ইন্টারভিউ প্রচারিত হবার পর জানাজানি হয়।
রিবা: আমার হয়েছে মজার অভিজ্ঞতা। আমি বিটিভিতে গিয়েছিলাম একটা অনুষ্ঠানের জন্য। মেকআপ রুমে বসা। সেখানে কথা হচ্ছিল সুলতান সুলেমান নিয়ে। একজন বললেন, সিরিয়ালটা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি বললাম, শুরু হয়ে যাবে শিগগিরই। তাদের প্রশ্ন, আপনি কীভাবে জানেন? বললাম, আমি কণ্ঠ দিই। জানতে চান, কোনটা? বলি হুররম সুলতান। ওদের বিশ্বাসই হলো না। বরং আমার ওপর এতটাই খেপলেন একজন যে, তিনি আমার মেকআপই করলেন না সেদিন।
দীপক: বিজ্ঞাপনে তো অল্প সময়। কাটকাট কথা বলেই শেষ। কিন্তু সিরিয়ালে ডাব করতে গেলে অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে যেতে হয়।
সোহাগ: এই সেক্টরে কাজ করে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কারণ, এখানকার মানুষগুলোর একে অন্যের প্রতি আন্তরিক এবং তাদের বোঝাপড়াটাও দারুণ। আমরা ঘুরতে যাই, আড্ডা দিই, লাঞ্চ করি একসঙ্গে। আমাদের আনন্দটা অন্য ধরনের।
সাইফুর: বিদেশি সিনেমা বা সিরিয়ালের পাশাপাশি আমাদের এখনকার সিনেমা বা সিরিয়ালে ডাবিংয়ে কোন কাজ করা হয়?
দীপক: সেটার প্রয়োজনও নেই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে সেটা হয়। গত সপ্তাহে সাখাওয়াত নামে এক পরিচালকের একটা বাংলা সিনেমায় ভয়েস দিয়েছি।
ইকবাল: আমি সিনেমায় ডাব করেছি প্রচুর। নাটকেও করেছি। আমি অন্য ভাষায় বেশি দিয়েছি উর্দুতে। উর্দুটা একটু ভালো বলতে পারি। পাকিস্তানি আর্মির যত ক্যারেক্টার আছে, এগুলো বেশির ভাগ ডাব করেছি আমি।
দীপক: অনেক কিছুর কপিরাইট কলকাতার নেওয়া। যেমন ডিসকভারির কোনো প্রোগ্রাম চাইলেও আমরা দেখাতে পারবো না। বাংলা যেহেতু আমাদের মাতৃভাষা, সেহেতু সরকারেরও একটা উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল। সিনেমার ক্ষেত্রে না হলেও ডিসকভারি বা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে বাংলা ডাবিংয়ের কপিরাইটটা আমাদের হাতে থাকা দরকার ছিল। আমাদের এখানে ভয়েস অ্যাক্টরের অভাব ছিল না। আমাদের কাজেরও মান ভালো।
সাইফুর: এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে যাওয়া যাক; ডাবিংয়ের সম্প্রসারণ হচ্ছে, বাজারটা বাড়ছে, অনেক নতুন ছেলে-মেয়ে আসছে। সে ক্ষেত্রে শেখার একটা জায়গা বা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষার দরকার আছে কি না, আপনারা কী মনে করেন?
জয়ীতা: আমাদেরও যে নেই, তা কিন্তু নয়। কিন্তু আমরা কোনো কিছুকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি না। হাতে গোনা কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যকলা বিভাগ আছে। এগুলো কেন করা হচ্ছে, নিশ্চয়ই এখান থেকে বেরিয়ে আসবে ভালো ভালো নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা। তাদের দিয়ে কী করানো হবে বা তারা কী করবে, সেটা নিয়ে হয়তো কথা হতে পারে।
দীপক: নাটক ও নাট্যকলা পড়ানোর জায়গা আছে কিছু, কিন্তু ফিল্মের জন্য আলাদা স্কুল কোথায়?
সঙ্গীতা: যাদের সুপ্ত আগ্রহ থাকে, তারা আশ্রয় নেয় থিয়েটারের কাছে।
দীপক: থিয়েটার করে এসেই যে ভালো করবে, তা কিন্তু নয়।
সাইফুর: দীপকদা আপনি যা করছেন এখন, তা তো আর শিখে আসেননি। একটা গ্রুমিংয়ের মধ্য দিয়ে এসেছেন আজকের অবস্থানে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটা এমন হওয়া দরকার কি না?
দীপক: ডাবিংয়ের পেশা হিসেবে নিচ্ছেন এখন অনেকে। একটা প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার, যেখানে ডাবিং শিখে এসে তা করবে।
সাইফুর: তাহলে ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে কীভাবে?
দীপক: ব্যক্তিগতভাবে আমি দু-একজনের সঙ্গে আলোচনা করেছি, এমন একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য। দীপ্তর সঙ্গেও আলোচনা হয়েছিল এ বিষয়ে। আমি নতুন করে স্টুডিও করার পরও এটা নিয়ে কথা হয়েছিল। আমাদের ইচ্ছা, জনবল- সবই আছে। কিন্তু আমরা মধ্যবিত্ত এই মানুষগুলো একটা আলাদা প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো আর্থিক ঝুঁকি নিতে পারি না। স্টুডিও গড়ে তোলা যতটা ঝুঁকির, তার চেয়ে একটা ডাবিং স্কুল আরও বেশি ঝুঁকির কাজ।
দীপক: সেটা তো আছেই। প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি একটু যদি জানাজানিও হতো, আমরা এই কাজগুলো করছি- তাহলেও হতো। আমরা স্বপ্ন দেখি অনেক বড়, কিন্তু সেটা মাঝপথেই আটকে যায়।
এই আড্ডায় সবাই কথা বলেছেন মন খুলে। আর এই বিষয় নিয়ে আড্ডার আইডিয়াটা ছিল নুজহাত খানের। তাই সবাই তাকে ধন্যবাদ দিতে কার্পণ্য করেননি। আর সবাইকে জড়ো করার পেছনে রয়েছেন দুজন- পরিচালক রাকেশ বসু ও দীপক সুমন। কৃতজ্ঞতা তাদের প্রতিও। বরং এ জন্যই একটা মাইলফলক রচিত হলো। জানা হলো ইতিহাস।
অনুলিখন: শুভ্র মিছির
কৃতজ্ঞতা: রাকেশ বসু ও দীপক সুমন
আতিথ্য: দ্য মিরাজ
ছবি: সৈয়দ অয়ন
আড্ডা এবং লক্ষীভূত আড্ডার ক্যানভাস এসব শব্দবান আমাকে তাড়িত করে ষাট, সত্তর ও আশি’র দশকের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক আড্ডার তারুণ্য ও যৌবনের ভরা কটালের নবগঙ্গা ও ভৈরব। ঝিনাইদহের বুল বুল চৌধুরী ও এড. আমির হোসেন মালিতা বাড়িতে গণসংগীত চর্চার আসর আর মুসা মিয়ার প্রেসে বাম রাজেনৈতিক ছাত্র সংগনের চায়ের কাপে ধোয়া উড়ানো বিপ্লবের শ্লোগান বাতাসের পাখায় পালক জড়িয়ে ভেসে যেতো রক্ত পতাকা। আহা! আমরা না পেরেছি সুস্থ একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির আবহ তৈরি করতে না পেরেছি মুক্তবুদ্ধির সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে – পারছি বা পারবো লক্ষণ দেখা যায় না। মখ্যবিত্তের তর্কের জালে আটকে গেছে সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং মুক্তবুদ্ধির সংস্কৃতির বিকাশ। হাঃ হাঃ হাঃ …………….?! নয়ন তালুকদার (এরশাদের খল্যাণে রাখা ছদ্ম নাম)
আমি কণ্ঠ দিতে চাই। নাটকের অভিজ্ঞতা আছে।