ফোকাস I সুরভিত সারা দিন
তাপমাত্রার পারদ ছুটছে দারুণ বেগে। সূর্যের রুদ্র প্রতাপে সজীবতা লাপাত্তা। ঘাম হাজির প্রবল অস্বস্তি সঙ্গে নিয়ে। এর মধ্যে প্রশান্তির পরশ বড় আকাঙ্ক্ষিত
বছরের এই সময়ে গরম নিয়ে বিরক্তির গল্প থাকে সবার মুখে। সানি সামারের সৌন্দর্য উপভোগ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আবহাওয়ার সংবাদে গরম এখন গরম খবর। কোথায় কখন কেমন তাপমাত্রা, তা নিয়ে চিন্তিত সবাই। এমন সময় কীভাবে নিজেকে ফ্রেশ লাগবে, সেটা চিন্তার বিষয়ই বটে। চটজলদি সমাধানে নিত্যদিনের ক্লান্তি কমিয়ে সজীব থাকার আকুল আকাঙ্ক্ষা থাকে সবার মনে। কয়েকটি সহজ মন্ত্রে সমাধানের চেষ্টা।
স্নানে শান্তি
উচ্চ তাপমাত্রা শরীরকে প্রভাবিত করে। এমন সময় শীতল পানির স্পর্শ শরীরকে ঘাম থেকে মুক্ত করতে ভূমিকা রাখবে। তাই ‘শাওয়ার স্কিপ’ না করলেই ভালো; বরং দিনে একাধিকবার গোসল সেরে নিতে পারলে ভালো। সেরাটোনিন হরমোনের প্রবাহ এতে বৃদ্ধি পায়। মন শান্ত হয়।
আত্মবিশ্বাসে প্রতিদিন
দেহের নিজস্ব গন্ধ আছে। তার সঙ্গে ঘামের উপস্থিতি হলে, প্রচণ্ড অস্বস্তি ঘিরে ধরে। দেহের কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় ঘাম হয় সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে একটি আর্ম পিট। বগলের গন্ধ আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলে অনেকটাই। সকাল-বিকেল পোশাক বদলের আগে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করলে জীবাণু জমিয়ে বসতে পারবে না। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সব কাজ সামলে নেওয়া যাবে।
ট্যাল্ক ট্যাকল
ট্যালকম পাউডার ব্যবহারে নিয়মিত হলে ঘাম তৈরি এবং তা থেকে দুর্গন্ধকে বেশ ভালোভাবে ট্যাকল করা সম্ভব হতে পারে। বগলে আলতো করে ট্যালকম পাউডার বুলিয়ে নিলে ঘাম কম তৈরি হবে।
সুগন্ধে সুন্দর
ট্যালকম পাউডারে সুগন্ধি মিশ্রিত থাকলে অত্যাচারী ঘামকে পরাস্ত করা আরও সহজ হতে পারে। ব্রেনের যে অংশটি আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই অংশের সঙ্গেই সুগন্ধের অনুভূতি যুক্ত। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যমতে ফুলের সুবাস মানব মনকে আন্দোলিত করে। বলা যায়, ফ্লাওয়ার ফ্র্যাগরেন্স সুস্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত। গোলাপের সুবাস বেছে নেওয়া যেতে পারে। কারণ, গরমে শ্রান্তি এসে হানা দেয়, বিষণ্ন করে মন। রোজ ফ্রাগরেন্স বিষাদকে বিদায় জানাতে দারুণ পটু। বাজারে এই সৌরভ-সংবলিত ট্যালকম পাউডার পাওয়া যায়। তাই দেশি পণ্যেই সুগন্ধের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে।
ওয়েট টিস্যুতে ওয়ে আউট
সকাল-সন্ধ্যা বাইরে ঘোরাঘুরি যাদের, তাদের জন্য ওয়েট টিস্যু হতে পারে কুইক সল্যুশন। সব সময় পানি আর ফেসওয়াশ ব্যবহারে মুখ ধুয়ে নেওয়ার সুযোগ না-ও পেতে পারেন। কিন্তু সে তো আর বুঝবে না বাতাসে মিশে থাকা ধূলিকণা। তাই এক টুকরো ভেজা টিস্যু এ সময়ে কাজ করতে পারে টনিকের মতো। মুখ-চোখ মুছে নেওয়া গেল, আবার সময়ও বাঁচল।
সুয্যি মামার রাগ!
সূর্যরশ্মি দেহ ও মনের জন্য উপকারী, একই সঙ্গে এর কিছু ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে, যা ত্বকে তৈরি করে সান ট্যান। আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি এ জন্য দায়ী। ত্বককে রক্ষা করতে ইউভি প্রটেকশন সমৃদ্ধ প্রসাধন হতে পারে সমাধান। সানব্লক, সানস্ক্রিনের সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর, অর্থাৎ এসপিএফ সম্পর্কে সবার কমবেশি ধারণা আছে। ত্বকে পাউডার ব্যবহার করা হলে সেখানে আলট্রা ভায়োলেট প্রোটেকশন দেওয়ার মতো উপাদানের উপস্থিতি আছে কি না, তা খেয়াল রাখা জরুরি।
চুল বেঁধে অল্প মেকআপে
গরমে সামান্য সাজ আর চুলের পারিপাট্য স্নিগ্ধ সৌন্দর্য প্রকাশ করে। বাহুল্যে অস্বস্তি এ সময়ে বাড়ে। লেস ইজ মোর—সূত্র মেনে নিজেকে সাজিয়ে নেওয়া যেতে পারে। প্রসাধনের আতিশয্য নয়, প্রয়োজনই সই। ময়শ্চারাইজার, সানব্লক, বিবি ক্রিম—সবকিছুই লাইট ওয়েট হলে ভালো। তাতে ত্বক স্বস্তি পাবে।
জলে জয়
পানিতে প্রাণ যেমন বাঁচবে এ সময়, তেমনি ত্বকও থাকবে সুন্দর। শুষ্কতায় ত্বকের শোচনীয় অবস্থা হবে না। কিছুক্ষণ পরপর পানি পানে পাওয়া যাবে সমাধান। সঙ্গে মৌসুমি রসাল ফল নিয়মিত খেলে দেহে পানির ভারসাম্য বজায় থাকবে।
গরমের সময়ে ঘরের বাইরে যতটা সম্ভব কম বের হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সকাল হলেই ঘরের বাহির হতে হয় এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। বের হওয়ার কিছু সময় আগে প্রস্তুতিপর্ব সেরে নেওয়া যেতে পারে। শীতল পানিতে গোসল সেরে ট্যালকম পাউডার বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে ত্বকে। আর উপযুক্ত স্থানে ডিওডোরেন্ট। পছন্দের সুগন্ধি সব শেষে। সুরভিত সারাটা দিন! হেলদি লাইফস্টাইল, ব্যালেন্স ডায়েটে সুস্থ থাকা সম্ভব হতে পারে গ্রীষ্মকালজুড়ে। সানি সামারে সুরভিত সারা দিন, আর কী চাই!