skip to Main Content

সেলুলয়েড I মিডনাইট ইন প্যারিস

চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: উডি অ্যালেন
চিত্রগ্রহণ: দারিউস খন্দজি
সম্পাদনা: অ্যালিসা লেপসেলটার
অভিনয়: ক্যাথি বেটস, অ্যাড্রিয়েন ব্রডি, কার্লা ব্রুনি, ওয়েন উইলসন, র‌্যাচেল ম্যাকঅ্যাডামস, মারিয়ন কটিলার্ড
সময় ব্যাপ্তি: ৯৪ মিনিট
ভাষা: ইংরেজি
দেশ: যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন
মুক্তি: ২০১১

একজন সৃজনশীল মানুষের অন্তরমহলে প্রেরণা হিসেবে দোলা দেয় এমন অনেকের সৃষ্টিকর্ম, যাদের কেউ কেউ বেশ আগের মানুষ। হয়তো বহু আগেই করেছেন দেহত্যাগ; তবু কাজগুলো বহুল চর্চিত। বাগ্‌দত্তা ইনেজের সঙ্গে প্যারিসে বেড়াতে এসে হলিউডের রুপালি জগতের ব্যস্ত চিত্রনাট্যকার গিল পেন্ডারের মনে সেই সব প্রেরণা যোগ করে এক নতুন মাত্রা। শিল্প-সাহিত্যের জন্য জগদ্বিখ্যাত এ শহরে যুবকটি একে একে দেখা পেতে থাকেন তার স্বপ্নের মানুষগুলোর। আর তা রাতের বেলায়। আচমকাই দৃশ্যপট পাল্টে সময়কাল রূপ নেয় শতবর্ষ আগের; বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের। অন্য এক ঘোরে চক্কর খেতে থাকেন তিনি।
শিগগির বিয়ে করতে যাওয়া গিল ও ইনেজ আসলে প্যারিসে এসেছিলেন ইনেজের বাবা-মায়ের সঙ্গে। এ সময়ে ইনেজের এক বন্ধু ও তার স্ত্রীর সঙ্গেও দেখা হয়ে যায় তাদের। কিন্তু সেই অধ্যাপক বন্ধুর তথ্যসর্বস্ব বুলি আওড়ানোর সঙ্গ গিলের ভালো লাগে না। এই ভ্রমণে তিনি একটি মোহভঙ্গের সূচনা ঘটাতেও ছিলেন প্রস্তুত। অর্থ ও খ্যাতি থাকা সত্ত্বেও হলিউডি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখতে আর ভালো লাগছিল না তার; লিখতে চেয়েছিলেন উপন্যাস। লিখেছিলেনও অনেকটুকু। সেই উপন্যাসকে নতুন করে ভাবতে গিয়ে, প্যারিসের অলিগলিতে শতবর্ষ আগে বিচরণ করা কিংবদন্তি শিল্পী-সাহিত্যিকদের ঘোরে পড়ে যান। আর এভাবেই একে একে, একেক রাতে তার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, জেল্ডা ফিটজেরাল্ড, পাবলো পিকাসো, সালভাদর দালি, ম্যান রে, লুইস বুনুয়েল প্রমুখের—যারা বস্তুত একুশ শতক আসার বেশ আগেই দেহত্যাগ করেছেন।
তাদের সঙ্গ পাওয়ার জন্য প্রতি রাতে বাগ্‌দত্তাকে ছেড়ে প্যারিসের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন গিল। যে সঙ্গ দর্শকদের কাছে গিলের কল্পরাজ্যের প্রকাশ মনে হলেও, গিল তা নিয়ে দ্বিধান্বিত; অনেকটাই সত্য বলে ধরে নেন। নিজের সেই সব আইডলের সঙ্গে আলাপ করেন, তর্ক বাধান; আর এর মধ্য দিয়ে নিজের মননশীলতা ঝালিয়ে নেন। এমনকি প্রেমেও পড়ে যান আদ্রিয়ানা নামের এক তরুণীর, যিনি ছিলেন পিকাসোর প্রেমিকা, যিনি প্রকৃত অর্থে মারা গেছেন বহু আগেই। তবু ১৯২০-এর দশকের রাতের প্যারিসে আদ্রিয়ানার কাছে হাজির হন ২০১০-এর দশকের গিল; আর তাকে একবার আরও শতবর্ষ আগের সময়ে, উনিশ শতকের শেষ ভাগের এক পার্টিতে নিয়ে হাজির করেন আদ্রিয়ানা। গিলের কাছে আদ্রিয়ানার সময়কালকে গোল্ডেন এইজ মনে হলেও, আদ্রিয়ানার কাছে সেটি পল গগাঁ, এডগার ডেগাদের সময়কাল। সেই সময়কার চিত্রশিল্পীদের সঙ্গেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এই তরুণী। অথচ গিল ফিরতে চান বিশ শতকের সময়কালটিতে। ফলে বিচ্ছেদ ঘটে যায় তাদের।
এদিকে বাস্তব পৃথিবীতে, একুশ শতকের প্যারিসে ইনেজের সঙ্গেও বিচ্ছেদ ঘটে গিলের। তবু যুক্তরাষ্ট্রে না ফিরে প্যারিসেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এই যুবক। আর তাতে বেশ খুশিও তিনি। এ বেলা তার সঙ্গে দেখা হয় গাব্রিয়েলা নামে এক ফরাসি তরুণীর; যার সঙ্গে আগেও দেখা হয়েছিল; যিনি একজন অ্যান্টিক ডিলার। প্যারিসের রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজে হাঁটতে থাকেন গিল ও গাব্রিয়েলা; যা তাদের জীবনে একটি প্রেমময় নব সূচনার ইঙ্গিতবাহী।
কল্পনা ও বাস্তবের সমাহারে টাইম ট্রাভেলের এমন ভিন্নমাত্রার আনন্দমুখর প্রকাশ ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’, যা এর নির্মাতা উডি অ্যালেনকে বেস্ট অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে ক্যাটাগরিতে এনে দিয়েছে অস্কার। মুক্তির পর থেকে এখনো রোমান্টিক স্বরের এই চলচ্চিত্র বহুল চর্চিত।

 আরিফুল ইসলাম

কুইজ
১। ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’-এ কোন সাহিত্যিককে দেখানো হয়েছে?
[ক] ম্যাক্সিম গোর্কি
[খ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
[গ] আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
[ঘ] টোমাস ট্রান্সট্রোমার

২। গিল প্রকৃত অর্থে কোন সময়কার মানুষ?
[ক] একুশ শতক
[খ] ষোলো শতক
[গ] উনিশ শতক
[ঘ] এগারো শতক

৩। আদ্রিয়ানা কোন চিত্রশিল্পীর প্রেমিকা?
[ক] সালভাদর দালি
[খ] পল গঁগা
[গ] লিওনার্দো দা ভিঞ্চি
[ঘ] পাবলো পিকাসো

গত সংখ্যার বিজয়ী
১. আশরাফ হোসেন, বাড্ডা, ঢাকা।
২. তাসনিম জান্নাত, উত্তরা, ঢাকা।
৩. মাশিয়াত, খালিশপুর, খুলনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top