সঙ্গানুষঙ্গ I চার্ম টার্ম
ছোটখাটো, চোখধাঁধানো সব অনুষঙ্গের যোগে হাতের মামুলি ব্যাগ হয়ে উঠছে ব্যক্তিত্বের অংশ। এমন পার্সোনালাইজেশনে তৈরি হচ্ছে শক্তিশালী স্টেটমেন্ট স্টাইল। রানওয়ে আর রেড কার্পেট প্রাণিত
শুরুটা জেন বার্কিনের হাতে হলেও এ বছরজুড়ে ব্যাগ চার্ম নতুন স্টেটমেন্ট গড়তে যাচ্ছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে। কোচ, ফেন্দি, মিউ-মিউ, ভারসাচি, কেট স্পেড, লুই ভিতোঁসহ এ সিজনের প্রায় সব রানওয়েতেই মডেলদের চার্মসংবলিত ব্যাগ তাক লাগিয়ে দিয়েছে ফ্যাশনবোদ্ধাদের। গেল বছরে ক্লোয়ি আর ব্যালেন্সিয়াগাতেও খুব ঘটা করে মডেলদের রানওয়ে মাতাতে দেখা গেছে এই মাইক্রো ট্রেন্ডকে উপজীব্য করে।
এ বছর ব্যাগকে ‘বার্কিনিফায়িং’ করার মাধ্যমে ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সাররা টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে বাগিয়ে নিচ্ছেন লাখো ফলোয়ার। ছোট্ট একটু ফ্যাশন ডিটেইলও যে কারও চোখ এড়ায় না, এ তারই প্রমাণ।
হাতলে চেইন অ্যাকসেসরিজ কিংবা একটি ছোট চাবির রিং ঝুলিয়ে দিলেই ব্যাগ হয়ে গেল ফ্যাশন এলিমেন্টের একটি অংশ। পার্স থেকে টোট—এই স্টাইলে সাজিয়ে নেওয়া যাবে শখের যেকোনো ব্যাগই।
বছরখানেক ধরে ফ্যাশন এলিমেন্ট যেন খুব সাদামাটা হতে শুরু করেছে। মিনিমালের চক্করে পড়ে মূলত এই দশা। অন্যদিকে মাইক্রো ট্রেন্ডগুলোর আসা-যাওয়া কোনো ফ্যাশন স্টেটমেন্টকেই যেন স্থায়ী হতে দিচ্ছে না। আর পরিবেশবান্ধব ফ্যাশন ট্রেন্ড কিংবা রিসাইকেল না করতে পারার ঝামেলা তো রয়েছেই। এ ক্ষেত্রে ব্যাগ চার্ম আভিজাত্যের ছাপ যোগ করছে স্টাইলিংয়ে। যার মাধ্যমে রিসাইকেলও সম্ভব হচ্ছে অনেক ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজের।
পথ দেখিয়েছেন জেন বার্কিন। পারসোনাল স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবে। পার্টি, মিটিং কিংবা ক্যাজুয়াল আউটিংয়ে তিনি ব্যাগে ঝুলিয়ে রাখতেন ঘড়ি, চাবির রিং থেকে ব্যাংগলের বিডস। ব্যাগ থেকে অনেকটা উপচে বের হতো কাগজ আর ফাইলপত্র। সঙ্গে ব্যাগে সাঁটানো থাকত স্টিকার। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতেন, এ রকম ‘জিঙ্গেল জাঙ্গেল’ আর টুংটাং শব্দ ভালোই লাগে তার। ব্যাপারটি কেউ কেউ একটু বাঁকা চোখে দেখলেও তারকাদের অনেকে কিন্তু তার এই কাস্টমাইজড স্টাইল স্টেটমেন্টকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছিলেন। শুধু শুধু তো আর এরমেস ব্র্যান্ডের ব্যাগ ‘বার্কিনিফায়িং’ করার ট্রেন্ড চালু হয়নি!
ব্যাগ চার্মে স্টাইলিং অ্যাকসেসরিজ হিসেবে যোগ হতে পারে স্কার্ফ, চাবির রিং, চেইন, পছন্দের পুতুল বা স্ক্র্যাপ বুক। হালের পপসংগীতশিল্পী ডুয়া লিপার গেল বছরের স্টাইলিং দেখলে বোঝা যায়, ব্যাগ বার্কিনিফায়িংয়ের কম ভক্ত নন তিনি। নিজস্বতার ছাপ জুড়ে দিতে ব্যাগ চার্মের জুড়ি নেই।
ব্যাগের ধরন ও রং বুঝে ব্যাগ চার্মে আবার ভিন্নতা দেখা যায়। ঘরে বানানো কিউট স্টাইলের ক্লে অ্যাকসেসরিজ কিংবা অভিজাত লুক আনতে ব্র্যান্ডেড কি রিং ঝুলিয়ে দেওয়া—সবই স্টাইলিংয়ে যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে ব্যাগে একটি স্কার্ফ ঝুলিয়ে দিলেও কিন্তু মন্দ লাগবে না দেখতে।
ব্যাগ চার্মের শুরুটা কোনো স্টাইল অ্যাকসেসরিজ হিসেবে নয়, বরং ছিল বার্মিজ ডেমোক্রেসি-পূর্ববর্তী আন্দোলন সমর্থনের অংশ। সেই সময় বার্কিন নিজের ব্যাগে অন সান সু কি স্টিকার লাগিয়ে তার প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করেছিলেন। তবে বর্তমানে টিকটকের কল্যাণে এটি স্টাইল স্টেটমেন্টে পরিণত হয়েছে। উঠতি টিন-এজার হোক বা সেলিব্রিটি—চার্ম ব্যবহারে কীভাবে নিজের ব্যাগকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবেন, তাই দেখার অপেক্ষা ২০২৫-এ।
বিদিশা শরাফ
ছবি: সংগ্রহ