skip to Main Content

ফিচার I প্রেমের পাতে

কোনো কোনো খাবারের সঙ্গে ভালোবাসার রয়েছে সরাসরি সংযোগ! একান্ত প্রিয় মানুষকে উপহার হিসেবে খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার চলও

লেবকুচেনের কথাই ধরা যাক। এটি ঐতিহ্যবাহী জার্মান কুকিজ। ক্রিসমাস ডেতে খুবই কমন। ভালোবাসা দিবসেও জার্মানিতে এই কুকিজের কদর বেড়ে যায়। কাউকে সত্যি ভালোবাসেন এবং তার খেয়াল রাখেন—এমন প্রমাণ দিতে জার্মান তরুণ-তরুণীরা লেবকুচেন বিনিময় করেন। এটি আসলে বড় ধরনের হৃৎপিণ্ড-আকৃতির জিনজার বিস্কুট। খুব চমৎকারভাবে সাজানো হয়। মাঝখানে থাকে ব্যক্তিগত বার্তা লেখার জায়গা। এ যেন সুইটহার্টের জন্য একটি বিশেষ সুইট হার্ট!
ভালোবাসা দিবসের প্রতি নিজস্ব কৌতূহল রয়েছে জাপানিদেরও। ১৪ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যগতভাবে সে দেশের শুধু নারীরাই নিজ নিজ পছন্দের পুরুষকে বিশেষ চকলেট উপহার দেন। ওই চকলেট ডিশের নাম ‘হনমেই চকো’। আক্ষরিক অর্থে, ‘নিখাদ অনুভূতির চকলেট’। সাধারণত বেশ উন্নত মানের এবং দামি। চটকদার বাক্সের মধ্যে খুবই সুন্দরভাবে মুড়িয়ে দেওয়ার চল। হনমেই চকো হরদমই হৃৎপিণ্ড-আকারের হয়ে থাকে। চকলেটের সঙ্গে মিষ্টিমধুর ভাষায় ছোট্ট চিরকুট বা বার্তা দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। অন্যদিকে এ দিন প্রেমিক বা একান্তই প্রিয় মানুষের বাইরের অন্য কোনো পছন্দের পুরুষ যেমন সহকর্মী, বন্ধু ও পারিবারিক সদস্যকে জাপানি নারীরা উপহার হিসেবে দেন ‘গিরি চকো’। আক্ষরিক অর্থে, ‘কর্তব্যের চকলেট’। চকলেটের মাধ্যমে নারীর ভালোবাসা বা মমত্ব প্রকাশের প্রতিদান দেওয়ার সুযোগ জাপানি পুরুষেরা পান ঠিক এক মাস পর; ১৪ মার্চ। এদিন পালিত হয় ‘হোয়াইট ডে’। দিবসটিতে পুরুষেরা ঐতিহ্যগতভাবে মার্শম্যালো বা সাদা চকলেট উপহার দিয়ে থাকেন; সঙ্গে অন্যান্য উপহারও।
ভ্যালেন্টাইন ডেতে নয়; জুলাইয়ে সপ্তাহজুড়ে মিষ্টান্নের মাধ্যমে ভালোবাসা ভাগাভাগি করে নেন আর্জেন্টিনার নাগরিকেরা। ‘সুইটনেস উইক’ শিরোনামের এক উৎসব চলে সেই মাসের ১ থেকে ৭ তারিখ। ‘আ ক্যান্ডি ফর আ কিস’ স্লোগান নিয়ে। অর্থাৎ, মিষ্টান্ন উপহারের বিনিময়ে একটি আদুরে চুমু পাওয়া! বেশ জনপ্রিয় এই উৎসবের সূচনা অবশ্য বেশি দিন আগে নয়; ১৯৮৯ সালে। উৎসব চলাকালে কোন ধরনের মিষ্টি বা মিষ্টান্ন উপহার দেওয়া হবে, তা নির্ভর করে যার যার একান্ত প্রিয় মানুষের খাদ্যরুচির ওপর। অন্যদিকে, প্রথম প্রেমের স্মৃতিতে যারা কাতর, তারা সাধারণত কোকোনাট আইস ভাগ করে নেন। নিখুঁত কিছু পছন্দ যাদের, তারা পারফেক্ট স্কটিশ ট্যাবলেটে (মিষ্টান্নবিশেষ) ভরসা রাখেন বেশি। কোকোনাট রোজ লাডুসের মতো গোলাপ ফুলের গন্ধমাখা মিষ্টান্নেরও বেশ কদর থাকে এই আয়োজনে। সুইটনেস উইক ঘিরে দেশটির রেস্তোরাঁগুলোতে প্রেমিক যুগলদের ভিড় লেগেই থাকে। চকলেট ও ক্যান্ডি বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যায়। শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাদেরই যে এ সময়ে মিষ্টান্ন উপহার দেওয়া হয়, তা নয়; তালিকায় জায়গা পান পছন্দের বন্ধু, সহকর্মীরাও। এককথায়, সব ধরনের ভালোবাসা প্রকাশেরই বিশেষ উপলক্ষ হয়ে ওঠে মিষ্টান্নের বিনিময়ে চুমু দেওয়া-নেওয়ার এই উৎসব।
স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশে ৯ অক্টোবর খুবই গুরুত্বপূর্ণ তারিখ। দিনটি ভ্যালেন্সিয়ার জাতীয় দিবসই শুধু নয়, সেন্ট দোনিস দিবস বা ‘ভ্যালেন্সিয়ান লাভারস ডে’ও। এদিন বিভিন্ন ফল ও সবজির অবয়বে মার্জিপান মিষ্টান্ন আদান-প্রদানের ধুম পড়ে যায়। সাধারণত সিল্কের রুমাল দিয়ে এসব মিষ্টান্ন মুড়িয়ে উপহার দেওয়ার চল রয়েছে। সঙ্গে থাকে প্রিয় মানুষকে দেওয়া বিশেষ বার্তা।

 ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top