skip to Main Content

ফরহিম I সামারপ্রুফ

রোজকার পরিচর্যায় কী পরিবর্তন আনলে তবেই অর্জিত হবে সামার হেয়ার গোল? টুকে রাখলে পরে খুব কাজে লাগবে কিন্তু

বিচ হলিডে, সামার বারবিকিউ কিংবা সুইমিং সেশন—প্ল্যান যেটাই হোক, ভুলে গেলে চলবে না গ্রীষ্মের দাবদাহ সঙ্গে নিয়ে আসে গরম, আর্দ্রতা, বৈরিতা আর অতিবেগুনি রশ্মি। চুলের জন্য গ্রীষ্ম যেন এক আতঙ্ক! শুষ্কতা, খুশকি, হেয়ার থিনিং কিংবা স্ক্যাল্পে ইরিটেশন এ সময়ে খুবই সাধারণ সমস্যা। তবু গরম আর ঘামে কুস্তি করে কেই-বা চায় একটা নেতিয়ে পড়া হেয়ার ডে! তাই এ সময়ে একটা সলিড হেয়ার কেয়ার রুটিন বিলাসিতা নয়, বরং সময়ের চাহিদা।
চুলে যতই বাজ, বব কিংবা স্লিক ব্যাক স্টাইল থাকুক, চুল যদি সতেজ না দেখায়, তবে পুরো স্টাইলই কিন্তু বৃথা। আবার যত্ন যে শুধু চুলেই সীমাবদ্ধ, তা নয়; বরং স্ক্যাল্প, হেড এবং শারীরিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ক্লিন ডায়েট—সবকিছুর ওপর নির্ভর করে সামার হেয়ার গোল।
বুঝতে হবে চাহিদা
সামার হেয়ার গোল অর্জনে প্রথমেই বুঝতে হবে স্ক্যাল্প আর চুলের ধরন। কোঁকড়ানো, স্ট্রেইট, শুষ্ক কিংবা তেলতেলে—যেমনই হোক, চুলের ধরন অনুযায়ী চাই একটু বাড়তি মনোযোগ। গরমে স্ক্যাল্প শুষ্ক কিংবা চ্যাটচ্যাটে হয়ে আরও স্পর্শকাতর করে দিতে পারে। তাই যত্ন শুরুর আগে অবশ্যই স্ক্যাল্প ও চুলের ধরনের ওপর ভিত্তি করে সঠিক রুটিন তৈরি করা জরুরি।
সঠিক উপাদানে সতেজতা
অতিরিক্ত গরমে চুল স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়। পরিবেশের শুষ্কতা আর শরীরের ঘামের অতিরিক্ত আর্দ্রতার প্রভাব দূর করতে তাই চুলে ব্যবহার করা যেতে পারে হাইড্রেটিং হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার—দুটোতেই যেন হাইড্রেটিং এজেন্ট বিদ্যমান থাকে। চুলের জন্য ভালো শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারের খোঁজ করলে খেয়াল রাখা চাই, প্রোডাক্টগুলোতে যেন কেরাটিন প্রোটিন, ম্যাকাডেমিয়া অয়েল, আরগান অয়েলের মতো উপাদানগুলো উপস্থিত থাকে। এগুলোর ব্যবহারে অতিরিক্ত গরমেও সতেজ ও সুন্দর থাকবে চুল।
সূর্য থেকে সরে
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে শুধু ত্বকই নয়, বাঁচাতে হবে স্ক্যাল্পকেও। এটি ত্বকের যেভাবে ক্ষতি করে, একইভাবে স্ক্যাল্পেরও। শুধু অ্যালার্জি নয়, অতিরিক্ত রোদে থাকার কারণে চুলের স্বাভাবিক রংও পাল্টে যেতে পারে। চুলকে সানবার্ন থেকে বাঁচাতে কিংবা অতিবেগুনি রশ্মি রুখে দিতে ক্যাপ বা হ্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া চুলের গোড়া ও স্ক্যাল্পের ত্বককে রোদের অতিরিক্ত প্রভাব থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা যায় অ্যান্টি ইউভি হেয়ার সেরাম।
গ্রোথ সেরাম বেনিফিট
নারীদের তুলনায় পুরুষেরা চুল পড়ে যাওয়া বা পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যায় বেশি ভোগেন। ছেলেদের চুল অপেক্ষাকৃত ছোট থাকায় হেয়ার থিনিংয়ে স্ক্যাল্প দেখা যাওয়ার সম্ভাবনাও তাই বেশি। সাধারণত এ সমস্যা ৩০ থেকে শুরু হতে পারে বিভিন্ন কারণে। যার একটি পরিবেশের প্রভাব। এই সমস্যা দূরীকরণে হেয়ার কেয়ার রেজিমে যোগ করা যেতে পারে হেয়ার গ্রোথ সেরাম। চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি হেয়ার ফলিকল আরও মজবুত করতে রেডেনসিল সমৃদ্ধ সেরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখা চাই, প্রকৃত ফল পেতে এটি অবশ্যই স্ক্যাল্পে ব্যবহার করতে হবে।
আয়ুর্বেদিক তেলে সমাধান
শত বছরের পুরোনো টোটকা। কিন্তু কাজে আসে চুল পড়ায়, নতুন চুল গজানোতে, ফাটা চুল ঠিক করতে, কিংবা চুলের আগায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দিতে। চুলের সাধারণ সৌন্দর্য পুনরুজ্জীবিত করতে আমলকী, ভৃঙ্গরাজ, শিকাকাই, ব্রাহ্মীর মতো আয়ুর্বেদিক উপাদানসমৃদ্ধ তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। সঠিক ফল পেতে অবশ্যই পরিষ্কার স্ক্যাল্পে গোসলের ১-২ ঘণ্টা আগে অয়েল ম্যাসাজ করা শ্রেয়। তেল দেওয়া চুল ভালোভাবে আঁচড়ানোর মাধ্যমে স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন করা যেতে পারে।
পরিষ্কার স্ক্যাল্প, হেলদি চুল
গ্রীষ্মের সময়টায় অতিরিক্ত ঘাম, তেল, ময়লা জমে স্ক্যাল্পে ইরিটেশন, অ্যালার্জি কিংবা খুশকি হতে পারে। তাই মাথার এই অংশ সব সময় থাকা চাই পরিষ্কার। অবশ্যই চুলের ধরন বুঝে একটা শ্যাম্পু সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করতে হবে। রুক্ষতা দূর করে চুলকে ম্যানেজেবল রাখতে চাইলে ব্যবহার করা চাই একটা ভালো কন্ডিশনার। অনেকে চুলের গোড়ার তেলতেলে ভাব দূর করতে গরম পানি ব্যবহার করেন। মনে রাখা উত্তম, চুলের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি।
নিয়মিত ট্রিমিং
চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে, আর চুল ফাটা এবং চুল পড়া প্রতিরোধে নিয়মিত ট্রিম করা মাস্ট। অনেকে মনে করেন, চুল লম্বা করতে চাইলে ট্রিমিংয়ের প্রয়োজন নেই; বরং যারা চুল খানিকটা লম্বা রাখতে চান, নিচের দিকটা ছেঁটে রাখার মাধ্যমে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা সম্ভব। এ ছাড়া রেগুলার হেয়ার কাট চুলকে এলোমেলো দেখানো থেকে বাঁচিয়ে একটা স্লিক লুক দিতে পারে।
প্রচণ্ড দাবদাহেও চুলের সৌন্দর্য ম্লান করে দিতে না চাইলে যত্নে নেওয়া চাই সঠিক সিদ্ধান্ত। স্ক্যাল্পকে সঠিকভাবে হাইড্রেটেড রাখার মাধ্যমে সতেজ চুল পাওয়া সম্ভব, শুধু একটা সিম্পল হেয়ার কেয়ার রুটিন মেনে চলা চাই। সেই সঙ্গে নিয়মমতো ট্রিমিং আর চুলের যত্নে সঠিক প্রোডাক্ট।

 বিদিশা শরাফ
মডেল: অর্কিড
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top