ইভেন্ট I হেয়ার অ্যান্ড বিউটি কার্নিভ্যাল
উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে রিভাইভ প্রেজেন্টস বিএসওএবি হেয়ার অ্যান্ড বিউটি কার্নিভ্যাল ২০২৫
বিউটি সার্ভিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএসওএবি) আয়োজনে ২১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় হেয়ার অ্যান্ড বিউটি কার্নিভ্যাল ২০২৫। ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। সঙ্গে ছিল বাংলাদেশি ব্র্যান্ড রিভাইভ। সোনারগাঁওয়ের বলরুমে দিনব্যাপী এই কার্নিভ্যালে সেমিনার, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ পরিচালিত বিউটি কেয়ার ডেমোনেস্ট্রেশন, ফ্যাশন শোসহ ছিল বেশ কিছু আয়োজন। উদ্বোধন করেন সৌন্দর্যসেবা খাতের অন্যতম পথিকৃৎ সায়রা মঈন।
দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছিল এই আয়োজন। প্রথম পর্বে বিভিন্ন বিউটি পারলারের আদিবাসী সৌন্দর্যসেবাকর্মীরা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন। ছিল প্যানেল আলোচনা; যার বিষয়, ‘সৌন্দর্যসেবায় দেশীয় পণ্য ব্যবহারের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’। আলোচনায় অংশ নেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিএবি) সভাপতি এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মালিক মোহাম্মদ সাঈদ এবং বিএসওএবির প্রেসিডেন্ট কানিজ আলমাস খান। সঞ্চালনায় ছিলেন জ্যেষ্ঠ ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল সাংবাদিক শেখ সাইফুর রহমান।
এই আলোচনায় মালিক মোহাম্মদ সাঈদের বয়ানে জানা যায়, ২০ হাজার কোটি টাকার সৌন্দর্যপণ্য তৈরি হয় আমাদের দেশে। আগে শুধু প্রাইমারি ক্যাটাগরির কিছু সাবান, শ্যাম্পু তৈরি হতো। এখন কলেবরে বেড়েছে এই প্রোডাক্ট লাইন। ত্বক ও চুলের ধরন বুঝে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাঁচামাল আনার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কেও আলোচনা করেন তিনি। দেশীয় সৌন্দর্যপণ্যের প্রতি ক্রেতা আস্থা বৃদ্ধি, মান নিয়ন্ত্রণ এবং ভেজাল পণ্য নিয়ে কথা বলেন সিবিএ সভাপতি এ এইচ এম শফিকুজ্জামান। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন আহ্বান করেন তিনি। যার মাধ্যমে এসব ভেজাল পণ্য উৎপাদনের উৎস সম্পর্কে জানা যাবে। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেন।
বিএসওএবির প্রেসিডেন্ট কানিজ আলমাস খান বলেন, বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে স্কয়ারের পণ্য ব্যবহার করছে পারলারগুলো। তবে যে পণ্যগুলো পাওয়া যাচ্ছে না, সেগুলোর ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হচ্ছে বিদেশি পণ্যে। তাই দেশীয় পণ্যের প্রোডাক্টলাইন আরও সমৃদ্ধ করার দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
প্যানেল আলোচনায় মালিক মোহাম্মদ সাঈদ জানান, স্কয়ার সর্বদা গ্রাহকের চাহিদা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুতের চেষ্টা করে। সব পণ্য বিএসটিআই এবং অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এভাবে গ্রাহককে নিরাপদ ও মানসম্মত পণ্য নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি স্কয়ার দেশের হেয়ার ও বিউটি শিল্পের উন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরির মাধ্যমে শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পরবর্তী পর্বে বিএসওএবির সদস্যদের হেয়ার ডেমোনেস্ট্রেশন অনুষ্ঠিত হয়। নান্দনিক সৃজনশীল হেয়ারস্টাইল উপস্থাপন করেন তারা। এই আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন একজন কোরিয়ান বিউটি এক্সপার্ট। তিনি লাইভ ডেমোনেস্ট্রেশনের মাধ্যমে কাজ উপস্থাপন করেন, যা উপস্থিত সৌন্দর্যসচেতন দর্শকদের মুগ্ধ করে। সন্ধ্যায় দক্ষ মেকওভার আর্টিস্টরা ব্রাইডাল রানওয়ে শোতে তাদের মনোমুগ্ধকর রূপসজ্জা তুলে ধরেন, যা তাদের সৃজনশীলতার প্রকাশ। একই সঙ্গে বিউটি ট্রেন্ড কেমন হতে যাচ্ছে, বিয়ের সিজনে সে সম্পর্কেও ধারণা মেলে।
পরবর্তী পরিবেশনায় ছিল থিমেটিক ফ্যাশন প্রদর্শনী। বিষয়বস্তু ছিল রাইজিং অ্যাওয়ারনেস অ্যাগেইনস্ট পলিউশন। হেয়ার এক্সপার্ট কাজী কামরুল ইসলাম এই সেগমেন্টে সৃজনশীল দক্ষতায় এই থিমেটিক প্রদর্শনী করেন।
হেয়ার অ্যান্ড বিউটি কার্নিভ্যালের এই আয়োজনে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় সিলেট বিভাগের দক্ষ বিউটিশিয়ান মিনারাকে। আরও বেশ কিছু অ্যাওয়ার্ডও দেওয়া হয়। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয় স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড, সামিট করপোরেশন, এসিআই ফাউন্ডেশনকে। এ ছাড়া সারা দিন হেয়ার অ্যান্ড বিউটি কার্নিভ্যাল উপলক্ষে স্টল সাজিয়েছিল স্কয়ারের জনপ্রিয় কসমেটিকস ব্র্যান্ড রিভাইভ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপণ্য নিয়ে ছিল মায়া। সৌন্দর্যপণ্য নিয়ে ইনডেক্স কেয়ার ও বিজেন। বিউটি ইন্ডাস্ট্রির মেশিনারিজ নিয়ে এসেছিল আরাফাত বিউটি সলিউশন। উপস্থিত ছিলেন ফ্যাশন ও বিউটি জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারকাদেরও উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল। উৎসবের সমাপ্তি ঘটে সংগীত এবং গালা ডিনারে।
ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে
