শরীরের দুর্গন্ধের কারণে অনেককেই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। বগলে যে ঘাম হয়, তাতে কোনো গন্ধ নেই। মানুষের ত্বকের ওপর বাস করে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া। বিশেষ কিছু ব্যাকটেরিয়া মানুষের ঘামের সঙ্গে মিশে এ দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে।
মানুষের ত্বকে দুই ধরনের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি থাকে। সেগুলো থেকেই ঘামের উৎপত্তি হয়। একরিন গ্রন্থি এবং অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি। অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি থাকে বগল ও গোপনাঙ্গের আশপাশে। সেখান থেকে যে ঘাম উৎপত্তি হয় তাতে এক বিশেষ ধরনের প্রোটিন বিদ্যমান থাকে। যা দুর্গন্ধহীন হলেও ব্যাকটেরিয়ার কারণে দুর্গন্ধে রূপান্তরিত হহ। দুর্গন্ধ সৃষ্টির কাজে ব্যাকটেরিয়াগুলো ঘামের ওই প্রোটিনটি ব্যবহার করে।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে আমরা ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করি। মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ডিওডোরেন্ট পাওয়া যায়। এসব ডিওডোরেন্টে নানা রকম কেমিক্যাল থাকে, যা মানুষের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। জেনে নিন অতিরিক্ত ডিওডোরেন্ট ব্যবহারে কী কী ক্ষতি হতে পারে।
বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা: ডিওডোরেন্টে প্রোপেলিন গ্লেকল নামের কম্পাউন্ড উপাদান বিদ্যমান। এ উপাদান ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতি সাধন করতে পারে। যেমন গায়ে লাল রঙের গুটি দেখা দিতে পারে এবং ত্বক জ্বালাপোড়া করতে পারে। ডিওডোরেন্টের এই কম্পাউন্ড নিউরোটক্সিক, যা মানুষের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
আলঝেইমারস ডিজিজ: অ্যান্টিপারসপিরেন্টের মূল উপদান হচ্ছে অ্যালুমিনিয়াম। যা মানুষের ডিমেনশিয়া এবং আলঝেইমারস রোগের কারণ হতে পারে। বারবার ডিওডোরেন্টের গন্ধ শুঁকলে অ্যাজমাও হতে পারে।
হরমোনাল ইমব্যালেন্স: ডিওডোরেন্টে প্রিজারভেটিভ হিসেবে প্যারাবেনস ব্যবহৃত হয়। ফলে শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্সের কারণে অনিয়মিত ঋতুচক্রের সমস্যা তৈরি হতে পারে এবং উপযুক্ত বয়েসের আগেই ঋতুমতী হয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
ঘাম গ্রন্থি বন্ধ করে দেয়: ডিওডোরেন্ট কিংবা অ্যান্টিপারসপিরেন্ট ব্যবহারে রোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ঘামের সঙ্গে মানুষের শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিনগুলো বেরিয়ে যায়। কিন্তু রোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে তা শরীরের ভেতর জমতে থাকে। এর ফলে শরীরের কোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি ক্যানসারও হতে পারে।