দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের জন্য আবারও চমকপ্রদ খবর নিয়ে এলো স্টার সিনেপ্লেক্স। সারা বিশ্বের সবার আগে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে ২০১৮ সালের সাড়া জাগানো ছবি অ্যাকোয়াম্যান-এর সিক্যুয়াল ‘অ্যাকোয়াম্যান অ্যান্ড দ্য লস্ট কিংডম’। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে ছবিটি মুক্তি পাবে ২২ ডিসেম্বর। আর বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর ২০২৩)। এর ফলে সবার আগে বাংলাদেশের দর্শকরা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন প্রতিক্ষীত এই ছবি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। আরও বলা হয়, আইসল্যান্ডের এক দুর্গম কুয়াশাচ্ছন্ন গ্রামের এক আগন্তুকের খোঁজে এসেছেন ব্রুস ওয়েন। সেই আগন্তুক, আর্থার কারি, তার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্রের প্রাণীদেরকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, আর শীতে কাতর মানুষদেরকে খাবারের যোগান দিচ্ছেন। পৃথিবী আক্রমণ করা মহাজাগতিক ভিলেনের বিপক্ষে দল গঠন করছিলেন ব্রুস। প্রথমে সরাসরি তাকে না করে দিলেও পরে নিজের মায়ের রাজ্য আটলান্টিসকে রক্ষার উদ্দেশ্য ঠিকই এগিয়ে আসেন আর্থার।
‘ব্যাটম্যান ভার্সাস সুপারম্যান: ডন অফ জাস্টিস’ মুভিতে ছোট্ট একটি ক্যামিওর পরে ‘জাস্টিস লীগ’ মুভি দিয়ে এভাবেই বড় পর্দায় প্রথম অভিষেক ঘটেছিল অ্যাকোয়াম্যানের। সুপারম্যান, ব্যাটম্যান, ওয়ান্ডার ওম্যান, ফ্ল্যাশের মতো তুমুল জনপ্রিয় ডিসি সুপারহিরোদের ভিড়ে অ্যাকোয়াম্যানকে কিছুটা আন্ডারডগ হিসেবেই বিবেচনা করা হতো একটা সময়। সেটা হোক কমিক বই, অ্যানিমেশন মুভি কিংবা টিভি সিরিজ। তাই ওয়ার্নার ব্রাদার্স যখন ২০১৪ সালে অ্যাকোয়াম্যানের সলো মুভি বানানোর ঘোষণা দেয়, এর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই। তবে জ্যাক স্নাইডার যখন অ্যাকোয়াম্যান ওরফে আর্থার কারির চরিত্রে ‘গেম অব থ্রোন্স’ খ্যাত জ্যাসন মোমোয়াকে নির্বাচিত করেন, তখনই নড়েচড়ে বসেন অনেক ভক্ত।
পরিচালক হিসেবেও স্নাইডারেরই কাজ করার কথা ছিল প্রথমে। পরে অস্ট্রেলিয়ান জেমস ওয়ানকে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এর আগে মাদার বক্সের জন্য আটলান্টিসের কাছাকাছি গেলেও মূল রাজ্যে ঢোকা হয়নি আর্থারের। তার চোখ দিয়েই দর্শক পরিচিত হন এক মনোমুগ্ধকর জগতের সাথে। ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ’, ‘থর রাগনারক’ কিংবা ‘ব্লেড রানার ২০৪৯’ এর মতোই নয়নাভিরাম সিনেমাটোগ্রাফি উপহার দিয়েছে অ্যাকোয়াম্যান। মসৃণ ক্যামেরার কাজ বরাবরই জেমস ওয়ানের ট্রেডমার্ক কাজ, তার সাথে সাগরতলের বর্ণিল সৌন্দর্য দর্শকের বিনোদনের ষোলকলা পূর্ণ করেছে।
‘ফাইন্ডিং নেমো’র মতো বর্ণিল সামুদ্রিক জীবন যেমন ছিল, তেমনি ছিল ইন্ডিয়ানা জোনসের মতো মরুভূমির অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ। স্টার ওয়ার্স যেমন স্পেস অপেরা জনরাটিকে তুমুল গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছিল, ঠিক তেমনি অ্যাকোয়াম্যান হয়ে উঠেছে একটি পরিপূর্ণ আন্ডারওয়াটার অপেরা। মূল চরিত্রকে জ্যাসন মোমোয়ার চেয়ে নিখুঁতভাবে আর কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারতেন বলে মনে হয় না। অ্যাকশন দৃশ্যগুলোতে আর্থার ছিলেন একাই একশো, বিশালদেহী মোমোয়ার কারণে তার ক্ষমতাগুলোও একবারের জন্যও অবাস্তব মনে হয়নি। প্রত্যুৎপন্নমতি মেরার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যাম্বার হার্ড।
‘মেরা’র মূল ক্ষমতা হাইড্রোকিনেসিস, ঠিক যেন ‘ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট’ এর ‘গি’ এর মতো। সেই সাথে দুর্দান্ত কিছু অ্যাকশন সিকোয়েন্সেও অংশ নিতে দেখা গেছে তাকে। আর আর্থার কারির মা হিসেবে নিকেল কিডম্যানের চেয়ে যোগ্য আর কেউ ছিলেন বলে মনে হয় না। একই সাথে তিনি যেমন ছিলেন লাবণ্যময়ী, তেমনি দোর্দন্ড্য প্রতাপের অধিকারী। অল্প সময় স্ক্রিনটাইম পেয়েও ঝলক দেখিয়েছেন ইয়াহিয়া আবদুল মতিন, ব্ল্যাক মান্তার কিছুটা জটিল চরিত্রে খুব ভালোভাবেই উতরে গেছেন তিনি।
নতুন ছবিতেও এই লাইনআপের পরিবর্তন হয়নি। পরিচালক জেমস ওয়ানসহ আগের ছবির প্রায় সবাই আছেন এ ছবিতে। প্রত্যেকেই যার যার জায়গায় আরও পরিণত আরও দুর্দান্তভাবে ফিরে আসছেন। ধারণা করা হচ্ছে বছর শেষের এ ছবি বছরের শীর্ষ ব্যবসাসফল ছবির তালিকায় ভালোভাবেই জায়গা করে নেবে।
- ক্যানভাস অনলাইন