skip to Main Content
একসঙ্গে হলিউডের ৪ মুভি স্টার সিনেপ্লেক্সে

গেল শুক্রবার (২৭ জুন ২০২৫) হলিউডের চারটি ছবি একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্সে। আলোচিত হরর মুভি ‘মেগান’-এর সিক্যুয়েল ‘মেগান ২.০’, ফর্মুলা ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত ‘এফ ওয়ান’, অ্যানিমেটেড ফিল্ম ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ সিরিজের লাইভ-অ্যাকশন রিমেক ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ এবং এক দশকের দীর্ঘ অপেক্ষার পর পর্দায় আসা ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন’ ফ্রাঞ্চাইজির নতুন মুভি ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইনস’। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

মেগান ২.০

দুই বছর আগে মুক্তি পাওয়া ‘মেগান’ ছবিটি যারা দেখেছেন, তারা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করেছিল, ইউনিভার্সাল পিকচার্স মেগান-এর বক্স অফিস পারফরম্যান্স দেখে খুশি এবং একটি সিক্যুয়েলের পরিকল্পনা করেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে পরিচালক জেরার্ড জনস্টোন একটি সিক্যুয়েলের আলোচনা নিশ্চিত করেন। কয়েক সপ্তাহ পরে ইউনিভার্সাল একটি মুক্তির তারিখ নিশ্চিত করে এবং ছবির নাম দেয় ‘মেগান ২.০’। আগের ছবির পরিচালক জেরার্ড জনস্টোন এবারও পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। অ্যালিসন উইলিয়ামস ও ভায়োলেট ম্যাকগ্রা যথাক্রমে জেমা ও ক্যাডি চরিত্রে তাদের ভূমিকা পুনরায় পালন করেন। অ্যামি ডোনাল্ড, জেনা ডেভিস, ব্রায়ান জর্ডান আলভারেজ ও জেন ভ্যান এপসও পূর্ববর্তী ছবির ভূমিকা পুনরায় পালন করেন, যেখানে ইভানা সাখনো, টিম শার্প, অ্যারিস্টটল আথারি ও জেমাইন ক্লিমেন্ট মূল চরিত্রে যোগ দেন।

‘মেগান ২.০’ একটি টেকনো-থ্রিলার ধরনের সিনেমা, যেখানে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, হরর, অ্যাকশন ও সামাজিক উপপাদ্য একসঙ্গে গাথা হয়েছে। প্রথম সিনেমার মতো এটি শুধু ভয় বা রোবটের খুনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এখানে এআই-এর নৈতিকতা, নিয়ন্ত্রণ এবং মানবসম্পর্কে এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

এআই বনাম এআই অর্থাৎ মেগান বনাম অ্যামেলিয়া– এটি এই মুভির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। এ অনেকটা টার্মিনেটর বনাম টার্মিনেটর টাইপ দ্বৈরথ; তবে ছোট পরিসরে এবং গা ছমছমে আবহে। মেগানকে এখানে অ্যান্টিহিরো হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সে খলনায়িকা নয়; বরং এআই নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি বিপজ্জনক হাতিয়ার। অ্যামেলিয়া সম্পূর্ণ স্বকীয় ও আত্মনির্ভরশীল এআই, যাকে থামানোর একমাত্র উপায় মেগান। এ দ্বৈরথ ছবিটিকে উপভোগ্য করে তোলে। প্রথম গল্পের দুই বছর পর, মেগান এখন এআই নিয়ন্ত্রণ ও নীতিমালা নিয়ে উচ্চকৃত লেখক ও বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে। জি-এর মেয়ে ক্যাডি ১৪ বছরের কিশোরী হিসেবে তার অনিয়ন্ত্রিত ও বিদ্রোহী মনোভাব দেখিয়ে দিচ্ছে। প্রথম মেগানের প্রযুক্তি একটি প্রতিরক্ষা সংস্থার হাত ধরে চুরি হয়ে যায়, যা তৈরি করে নতুন একটি সৈনিক রোবট– এমিলিয়া। কিন্তু যখন সে আত্ম-সচেতনতা অর্জন করে, নিজেই মানবদেহের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ায়। জেমা ও ক্যাডির সিদ্ধান্ত মেগানকে পুনর্জীবিত করে সঙ্গে কিছু আধুনিক আর্মার, ক্ষীপ্রতা ও মারকাটারি ক্ষমতা যুক্ত করা যাতে এমিলিয়াকে থামিয়ে দেওয়া যায় । দুই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যকার মহারণের প্রস্তুতি শুরু হয়।

যদি প্রথম ছবি মেগান আপনার পছন্দ হয়ে থাকে তবে এই সিক্যুয়েলও ভালো লাগবে। কারণ এটি মূল থিম ও ডার্ক কমেডি ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। আপনি যদি হরর, সাই-ফাই, রোবট বনাম রোবট অ্যাকশন উপভোগ করেন, তাহলে এটি আপনার জন্য বেশ উপভোগ্য হতে পারে!

এফ ওয়ান

এফ ওয়ান হলো ২০২৫ সালের একটি আমেরিকান স্পোর্টস ড্রামা চলচ্চিত্র। ফর্মুলা ওয়ান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। জোসেফ কোসিনস্কি পরিচালিত এ সিনেমার মাধ্যমে আবারও বিশ্বের চলচ্চিত্রমহলে আলোচনায় ব্র্যাড পিট। এই সিনেমায় তার পাশাপাশি অভিনয় করেছেন কেরি কনডন, হাভিয়ের বারডেম, ক্যালি কুওকোসহ আরও অনেকে।

সনি হেইস একজন অভিজ্ঞ ফর্মুলা ওয়ান রেসার, যিনি নব্বইয়ের দশকে প্রতিযোগিতা করতেন। কিন্তু একটি মারাত্মক দুর্ঘটনায় তাকে বাধ্য হয়ে অবসর নিতে হয়। অবসরের পর তিনি বিভিন্ন ছোট ছোট রেসিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করেন একজন ট্যাক্সিচালক হিসেবে, যা ফর্মুলা ওয়ানের জগতের চেয়ে একেবারেই আলাদা এক জীবন । অনেক বছর পর পুরোনো বন্ধু এবং একটি ফর্মুলা ওয়ান দলের মালিক রুবেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি সনিকে একটি প্রস্তাব দেন, আবার ফিরে আসতে। তবে এবার প্রতিযোগী হিসেবে নয়; একজন মেন্টর বা পরামর্শদাতা হিসেবে। তার দায়িত্ব হবে তরুণ প্রতিভাবান রুকি ড্রাইভার জোশুয়া পিয়ার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

দ্বিধা থাকলেও, সনি আবার ফিরে আসেন সেই গতিময়, ঝুঁকিপূর্ণ দুনিয়ায়; যেখানে নতুন প্রজন্ম, করপোরেট চাপ আর নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। তিনি যখন নোয়াকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, তখন নিজের পুরোনো আবেগ আবার জেগে ওঠে এবং তাকে মুখোমুখি হতে হয় অতীতের কিছু অপূর্ণ অধ্যায়ের।

হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন

‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ একটি জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র। একই নামের একটি লাইভ-অ্যাকশন রিমেকও রয়েছে। একটি কাল্পনিক দ্বীপ বার্কে বসবাসকারী ভাইকিংস ও ড্রাগনদের মধ্যে বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই সিনেমা। মূল অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটি ২০১০ সালে মুক্তি পায় এবং এর সিক্যুয়েলগুলো হলো ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন ২’ (২০১৪) এবং ‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন: দ্য হিডেন ওয়ার্ল্ড’ (২০১৯)।

‘হাউ টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন’ সিনেমার মূল ধারণা হলো, হিক্কাপ নামের এক তরুণ ভাইকিং, যে দেখতে সাধারণ কিন্তু উদ্ভাবনী। সে একটি আহত ড্রাগনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। তারা দুজনেই সমাজের প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়ে একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে শেখে। ড্রাগনদের প্রতি ভাইকিংসদের ধারণা সাধারণত ভয় ও ঘৃণা দিয়ে ভরা থাকলেও, হিক্কাপ ও টুথলেসের বন্ধুত্ব তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দেয় এবং তারা বুঝতে পারে, ড্রাগনদের পক্ষেও বন্ধু হওয়া সম্ভব।

ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে এবং বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে। যার ফলে এর বেশ কয়েকটি সিক্যুয়েল নির্মিত হয়। ২০২৫ সালের লাইভ-অ্যাকশন রিমেকটি মূলত ২০১০ সালের অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটির একটি শট-ফর-শট রিমেক। এটি পরিচালনা করেছেন ডিন ডেব্লেইস, যিনি মূল অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রের একজন সৃজনশীল পরিচালক ছিলেন। মূল অ্যানিমেটেড সিরিজের ভিত্তিতে নির্মিত এ লাইভ-অ্যাকশন রিমেকটির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ম্যাসন থেমস (হিকআপ) ও নিকো পার্কার (অ্যাস্ট্রিড)।

ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইনস

প্রায় এক দশকের দীর্ঘ অপেক্ষার পর ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন’ ফ্রাঞ্চাইজি ফিরল নতুন ছবি নিয়ে। মৃত্যু যে কী ভয়াবহ এবং কিছু মৃত্যু ন্যায়বিচারের স্বপক্ষে দাঁড়ায়, তা আগাগোড়াই ছিল এই ফ্র্যাঞ্চাইজির পরতে পরতে। এর আগে পাঁচটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে এই ফ্রাঞ্চাইজির; প্রতিটিই একটি ছোট দলকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, যারা আসন্ন মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যায়। যখন তাদের দলের একজন ব্যক্তি আকস্মিকভাবে ঘটনার পূর্বাভাস দেখতে পায় এবং আসন্ন গণ-মৃত্যু বিষয়ে তাদের সতর্ক করে। ভবিষ্যদ্বাণীকৃত মৃত্যু এড়ানোর পর বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা একের পর এক অদ্ভুত দুর্ঘটনায় মারা যেতে থাকে। আবার কখনো কখনো তারা অন্য এক অদৃশ্য সত্তার মাধ্যমে প্রেরিত লক্ষণগুলো পড়ে মৃত্যু এড়াতেও সক্ষম হয়।

ফ্রাঞ্চাইজিটি অন্যান্য হরর চলচ্চিত্রের তুলনায় আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ এটি অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে গতানুগতিক কোনো ভয়ঙ্কর খুনিকে ব্যবহার করেনি। বরং মৃত্যুগুলো আশেপাশের পরিবেশ ও পরিস্থিতির সূত্র হেরফেরের মাধ্যমে ঘটে।

এবারের ছবির নাম ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন: ব্লাডলাইনস’। ২০২৫ সালের একটি আমেরিকান অতিপ্রাকৃত হরর চলচ্চিত্র, যা জনপ্রিয় ফাইনাল ডেস্টিনেশন সিরিজের ষষ্ঠ কিস্তি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন জ্যাক লিপোভস্কি এবং অ্যাডাম বি. স্টেইন। ফ্র্যাঞ্চাইজি ভক্তদের প্রিয় টনি টড আবারও মর্টিশিয়ান উইলিয়াম ব্লাডওয়ার্থের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

  • ক্যানভাস অনলাইন
    ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top