গর্ভে থাকাকালীনই শিশু বুঝতে পারে মায়ের ভাষা, বুঝতে পারে স্বাদ, আলোর উপস্থিতি ও গন্ধ। কী, অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার মতোই বিষয়। এসব কথাই বলছে বর্তমান বিজ্ঞান।
মায়ের গর্ভে ধীরে ধীরে বিবর্তিত হতে থাকে শিশু। পায় মানুষের কাঠামো। বেড়ে উঠতে উঠতেই শিশুটি যুঝতে থাকে বাহ্যিক পরিবেশের সঙ্গে। যেমন,
ভাষা বোঝা: গর্ভে থাকাকালীন কান তৈরি হওয়ার পরপরই শিশু তার মায়ের ভাষার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে শুরু করে। মায়ের ভাষার দিকে কান খাড়া করে বিশেষ গুরুত্ব দেয় গর্ভের শিশুটি। যদি কেউ ভাবেন, আপনি যা বলছেন, সেই কথা আপনার গর্ভের শিশু শুনতে পাচ্ছে, তাহলে আপনি খুব একটা ভুল ভাবেননি। আধুনিক বিজ্ঞান সমর্থন করছে বিষয়টিকে।
স্বাদ বোঝা: গর্ভে আট থেকে পনেরো সপ্তাহের মধ্যেই শিশু স্বাদ বোঝার ক্ষমতা অর্জন করে। তখন থেকেই শিশু আলাদা করতে পারে- টক, মিষ্টি বা তেতো। সন্তান প্রসবের পর মা যদি বিশেষ কোনো স্বাদের খাবার গ্রহণ করে, সেই খাবার শিশুর উপর প্রভাব ফেলে। শিশুটি স্বাদের তারতম্যের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে, কেননা সে গর্ভের ভেতরেই এই গুণ লাভ করে।
আলোর অস্তিত্ব: যদিও সাত সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশুর চোখ ভালো করে ফোটে না। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেই অবস্থাতেও মাতৃগর্ভের কালো অন্ধকারে কোনোভাবে যদি কোনো আলো পৌঁছে, তাতে সাড়া দেয় গর্ভের শিশু। সে আলোর দিক থেকে তার চোখ সরিয়ে নেয়। এমনকি আলট্রাসাউন্ডে ধরা পড়েছে যে জন্মের কাছাকাছি সময়েও শিশুরা বারবার চোখ পিটপিট করে।
গন্ধ বিচার: অদ্ভুত হলেও সত্য যে এ ক্ষমতাটিও শিশু অর্জন করে গর্ভে থাকা অবস্থাতেই। জিরা, মৌরি, রসুন ও টুকটাক মসলার গন্ধ চিনে যায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস থেকেই। গর্ভের শিশু যে অ্যামনিওটিক ফ্লুয়িডে ভেসে থাকে, সেটির গন্ধ মায়ের গায়ের গন্ধের মতো। তাই জন্মের পর সেই গন্ধ আর গলার স্বরের ওপর নির্ভর করেই মায়ের উপস্থিতি টের পায় একটি নবজাতক শিশু।