স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে সায়েন্স ফিকশন ডিজাস্টার ঘরানার ছবি ‘মুনফল’। ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। রোনাল্ড এমরিখ পরিচালিত এ ছবিটি ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় প্রদর্শিত হচ্ছে। হ্যালি বেরি, প্যাট্রিক উইলসন ও জন ব্রাডলিসহ আরও অনেকে রয়েছেন এ ছবিতে।
পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ, যা লক্ষ-কোটি বছর ধরে নির্দিষ্ট দূরত্বে এর চারদিকে ঘুরছে। সৃষ্টির শুরুতে চাঁদ পৃথিবীর আরও কাছে ছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন থেকে প্রায় ৬০ কোটি বছর পরে চাঁদ পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরবে না। চাঁদ তখন পৃথিবীর কাছে একটি দূরের তারা হয়ে থাকবে। খালি চোখে চাঁদের সৌন্দর্য আর দেখাই হয়তো যাবে না। পৃথিবী থেকে অনেক দূরের কোনো কক্ষপথে ঘুরবে। মানব সভ্যতা টিকে থাকলেও দেখবে না সূর্যগ্রহণ কিংবা জোয়ার ভাটা। সূর্যের আলোয় বাঁধা দেবে না চাঁদ। পৃথিবীকে দিতে পারবে না ছায়াও। সমুদ্রের পানি বাষ্প হয়ে যাবে তত দিনে, পৃথিবী উষ্ণ হবে অনেক বেশি। শত কোটি বছর পরে, সূর্য চাঁদকে কক্ষপথ থেকে পুরোই বিচ্যুত করে দেবে। পৃথিবীর পরিণতিও হবে ভয়াবহ। পুরো বিশ্বে ঘটতে পারে আরও বড় বড় ভূমিকম্প। পরিবেশের জন্য যা বয়ে আনতে পারে মহাবিপর্যয়। এমনকি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পৃথিবী। বিজ্ঞানীদের এমন পূর্বাভাস রেখাপাত করেছে হলিউডের পরিচালক রোনাল্ড এমরিখের মনে। তাই হয়তো বিষয়টিকে সেলুলয়েডের পর্দায় আনতে চেয়েছেন তিনি। বরাবরই পৃথিবীর বিপর্যয় নিয়ে ছবির কথা বললে রোনাল্ড এমরিখের নাম সামনে চলে আসে। ‘ইনডিপেনডেন্স ডে’, ‘দ্য ডে আফটার টুমরো’ ‘২০১২’ একের পর এক সায়েন্স ফিকশন আর পৃথিবীর বিপর্যয় নিয়ে ছবি নির্মাণে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন এই নির্মাতা। এবার তিনি নিয়ে এসেছেন ‘মুনফল’। ২০১৬ সালে ‘ইনডিপেনডেন্স ডে: রিসারজেন্স’-এর পরে ‘মুনফল’ তৈরিতে তিনি সময় নিলেন পাঁচ বছর। বেশ কয়েক বছর ধরেই ছবিটি নিয়ে কাজ করছেন ৬৬ বছর বয়সী এই নির্মাতা। প্রথমে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেলের কাছে ছবির প্রাথমিক ধারণা বিক্রি করে দিয়েছিলেন এমরিখ। পরে তিনি আবার তাঁর স্বত্ব নিয়ে নেন। এবার ছবিতে প্রচুর অর্থ লগ্নির জন্য চেষ্টা করেন। প্রকল্পটি নিয়ে আসেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে। সেখান থেকে তিনি প্রচুর তহবিলও সংগ্রহ করেন। যেন ছবিটি স্বাধীনভাবে নির্মাণ করা যায়। করোনা মহামারীর মধ্যেও অবশেষে ছবিটি পর্দায় আনতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এমরিখ। হলিউড রিপোর্টারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এ ধরণের ছবি নির্মাণ রীতিমত চ্যালেঞ্জিং। তাই সময় নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কোভিডের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন ছিল। শেষ পর্যন্ত ছবিটি দর্শকদের সামনে আসছে এটা আনন্দের।’
চাঁদ তার কক্ষপথ থেকে সরে এসেছে। ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। এই বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের পথ কী? একজন সাবেক মহাকাশচারী, একজন নাসা বিজ্ঞানী ও একজন ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিক পৃথিবীকে এই বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে মিশনে নামেন। এই মিশন কতখানি সফল হয় সেটা দেখতে হলে যেতে হবে স্টার সিনেপ্লেক্সে।