কোমল পানীয় কোম্পানি কোকা-কোলা বাংলাদেশ ছয়টি বিষয়ভিত্তিক বৃহৎ আকৃতির কোক-বোতলের রেপ্লিকা উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তি উদযাপন করছে। একইসঙ্গে, ‘ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড টু বাংলাদেশ’ স্লোগানে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন চালুর পাশাপাশি কোকা-কোলা ক্যানের এবং ৫০০ মিলিলিটার কোকের বোতলের প্যাকেজিংয়ে বিশেষ নকশা নিয়ে এসেছে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে কোক-বোতলের বিশেষ রেপ্লিকা উন্মোচন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী এবং আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মনোরঞ্জন ঘোষাল। এসময় কোকা-কোলা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারস ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
থিমভিত্তক এ রেপ্লিকা উন্মোচনকালে মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তির উদযাপন উপলক্ষে কোকা-কোলা ব্যতিক্রমধর্মী একটি ভাবনা নিয়ে এসেছে। গত পাঁচ দশকে দেশের ভিন্ন ভিন্ন অর্জনগুলো এই আয়োজনে নিয়ে আসায় আমি কোকা-কোলার প্রশংসা করছি।’
কোকের ছয়টি রেপ্লিকা বোতলই ভিন্ন ভিন্ন থিমে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করে। সেগুলো হলো, ‘রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় ও স্বাধীনতা’, ‘দেশের সমৃদ্ধ শিল্প ও সংস্কৃতি’র চিত্র তুলে ধরা, ‘ডিজিটাল ও প্রযুক্তিগত উন্নতি’র প্রতিফলন, ‘নারী ক্ষমতায়ন ও আর্থ-সামাজিক উন্নতি’র পথ তৈরি, অগ্রগতির জন্য ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ এবং ২০২১ সাল ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির কামনা।
বিশেষ থিমের এসব শিল্পকর্ম স্থাপন ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কোকা-কোলা বাংলাদেশের ‘ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড টু বাংলাদেশ’আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা বাংলাদেশের জন্য তাদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাচ্ছেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আরও জানিয়েছে, ‘ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড টু বাংলাদেশ’ স্লোগানে হওয়া ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য- সারাবিশ্বের মানুষকে বাংলাদেশের জন্য শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাতে উৎসাহিত করা ও বাংলাদেশের সঙ্গে পৃথিবীর মেলবন্ধন তৈরি করা। প্রশংসা সূচক এসব বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনাকে তুলে ধরাই এই ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, কোকা-কোলা ক্যানের এবং ৫০০ মিলিলিটার কোকের বোতলের প্যাকেজিংয়ে বিশেষ নকশা নিয়ে এসেছে পঞ্চাশ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে। এই বিশেষ ক্যান ও লেবেলেও এই ব্যতিক্রমধর্মী উদযাপনের ছাপ রয়েছে। যেগুলো চলতি বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যাবে।
ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড এক বার্তায় বলেছে, ‘কোকা-কোলা সিস্টেমের সবার জন্য এটি একটি স্মরণীয় উপলক্ষ। আমাদের এই অনুষ্ঠান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন এর মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বীরদের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। আরও মনে করিয়ে দিচ্ছে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশর এ পর্যন্ত অর্জিত অগ্রগতিগুলো। এই রেপ্লিকা বোতলগুলো জাতির প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ও দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ।’
বাংলাদেশ কোকা-কোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটি বাংলাদেশে কার্যক্রম বজায় রেখে চলছে। দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ব্যবসার জন্য কোকা-কোলা বিগত ছয় বছরে ১০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। কোকা-কোলার ৯০ শতাংশ কাঁচামাল স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়, যা প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতও করা হয় বাংলাদেশের ভোক্তাদের জন্য। তাই এটি একটি স্থানীয় কোমল পানীয় ব্র্যান্ড।
অনুষ্ঠানে দেশের উন্নয়নকে চিহ্নিত করে আব্দুল মোনেম লিমিটেড (বেভারেজ ইউনিট) এর সিইও লুৎফল চৌধুরী বলেন, ‘অর্থনীতি ও অবকাঠামোগতভাবে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে এদেশ পদ্মাসেতু নির্মাণ থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট পাঠানোসহ বেশ কিছু মাইলফলক অর্জন করেছে। কোকা-কোলা যেভাবে অসাধারণ সাফল্যের চিত্র অঙ্কন করছে, আমি তার প্রশংসা করি।’
এই উপলক্ষে কোকা-কোলা বাংলাদেশ এক বার্তায় বলেছে, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের অভিবাদন জানাচ্ছে কোকা-কোলা। সেই বিজয়ের ফলেই এসেছে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও লাখ লাখ মানুষের উন্নয়নের বৃহত্তর সুযোগ। কোকা-কোলা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তিতে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।’
দেশের বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই পদ্ধতিতে ব্যবসায় মনোযোগী কোকা-কোলা কোম্পানির অংশীদার হিসেবে রয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইউনাইটেড পারপাস, কেওক্রাডং বাংলাদেশ, ওয়াটার এইড, ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্স গ্রুপ। তাদের সঙ্গে নিয়ে কোকা-কোলা সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করছে। বাংলাদেশে অংশীদারিত্বমূলক অধিকতর সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণে কোকা-কোলা ভোক্তা ও অংশীদারদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।