লবঙ্গ এক প্রকার মসলা। লবঙ্গগাছের ফুলের কুঁড়ি শুকিয়ে লবঙ্গ তৈরি করা হয়। এর আদিবাস ইন্দোনেশিয়ায়। পৃথিবীর প্রায় ৮০ শতাংশ লবঙ্গ উৎপাদিত হয় সেখানেই। বর্তমানে এটি পৃথিবীর সর্বত্রই পাওয়া যায়। আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় লবঙ্গের চাষ হয়। একে আস্ত অথবা গুঁড়া করে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। চীনা ও জাপানিরা ধূপ হিসেবে লবঙ্গ ব্যবহার করে থাকে।
লবঙ্গ অত্যন্ত সুগন্ধিযুক্ত। এর সুগন্ধের মূল কারণ, এতে ‘ইউজেনল’ বিদ্যমান। এটি লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত তেলের মূল উপাদান। এই তেলের প্রায় ৭২ থেকে শতাংশ অংশজুড়েই ইউজেনল বিদ্যমান। এই যৌগে জীবাণুনাশক এবং বেদনানাশক গুণ রয়েছে। লবঙ্গের তেলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো হচ্ছে- অ্যাসিটাইল ইউজেনল, বেটা-ক্যারোফাইলিন, ভ্যানিলিন, ক্র্যাটেগলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড, মিথাইল স্যালিসাইলেট, ফ্ল্যাভানয়েড, ইউজেনিন, র্যাম্নেটিন, ইউজেনটিন, ট্রি-টেরপেনয়েড, ক্লিনোলিক অ্যাসিড, স্টিগ্মাস্টেরল ও সেস্কুইটার্পিন।
রান্নায় সুগন্ধি বৃদ্ধি ও ধূপ হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়াও অ্যাসিডিটি দূর করতেও ব্যবহার করা হয় লবঙ্গ। বিশেষজ্ঞদের মতে, লবঙ্গ হজমে সাহায্য করে।
দারুচিনি ও লবঙ্গ একসঙ্গে দিলে তা অ্যাসিটিডি দূর করতে দারুণ ভূমিকা রাখে। এগুলোতে থাকা ঔষধি উপাদান অ্যাসিডিটি দূর করার পাশাপাশি পেটে জমে থাকা গ্যাস কমায়। তা ছাড়া এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অতিরিক্ত অ্যাসিডিটির সমস্যা হলে লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে বলা হয়। দু-তিনটি লবঙ্গ একসঙ্গে চিবুলে তা অ্যাসিডিটি দূর করে তাৎক্ষণিক আরাম দেয়।