skip to Main Content

বহুরূপী I পানি প্রকরণ

শীতে সাধারণত পানি একটু কমই পান করে মানুষ। স্বাস্থ্যসচেতনেরা তাই এ ঋতুতে শারীরিক আর্দ্রতার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখেন। আবার এ সময়ে ধুম পড়ে যায় ভ্রমণের। যাত্রাপথে যে উপাদান অপ্রতুল, তা হলো বিশুদ্ধ পানি। পানের জন্য সঠিক পানি নির্বাচন করা চাই। কেননা পানির রয়েছে রকমফের।
ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে যে পানি মেলে, সেটিকে ট্যাপের পানি বলেই চেনে লোকে। নদীর পানি পরিশোধনের মাধ্যমে তা নগরবাসীকে বিতরণ করা হয়। এ পানি বিশুদ্ধ, তবে পাইপ বেয়ে আসার কারণে তা দূষিত হতে পারে। ফলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে পরিশোধন করে এই পানি পানের উপযোগী করে নিতে হয়। ট্যাপের চেয়ে খনিজ পানি বহুলাংশে নিরাপদ। সেগুলো মূলত ভূগর্ভ থেকে তুলে বোতলজাত করা হয়। তবে তোলার পর বোতলজাত করা পর্যন্ত সেটি বিশুদ্ধ না-ও থাকতে পারে। তা ছাড়া বিক্রয়যোগ্য করে তুলতে এ পানির পেছনে বেশ অর্থ খরচ হয়। ফলে অল্প পানি বেশি দামে কেনা লাগে। খনিজ পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ আরও কিছু রাসায়নিক মেলে, যা রোগ প্রতিরোধ করার পাশাপাশি পাচনতন্ত্রের ঘটায় উন্নতি। একই কথা প্যাকেটজাত পানির ক্ষেত্রেও বলা সম্ভব। কিছু কোম্পানি রাসায়নিকের অনুপাত সুনির্দিষ্টভাবে বিন্যস্ত করে পানি প্যাকেটে কিংবা বোতলে ভরে। তবে খনিজের অনুপাত ঠিকঠাক না হলে তা মাইক্রোবায়োলজিক্যালি অনিরাপদ হতে পারে। অন্যদিকে, ঝরনার পানিও নিরাপদ। এটি বেশ পরিশোধিত হয়েই পতিত হয়। তবে এই পানির দাম বেশি। অপ্রতুলও।
কূপের পানিকে অনেকে নিরাপদ মনে করেন। তবে অঞ্চলভেদে তা বিশুদ্ধ না-ও হতে পারে। বিষয়টি নির্ভর করে ওই অঞ্চলের ভূত্বকের রাসায়নিক গঠনের ওপর। কিছু কূপের পানিতে আর্সেনিক থাকে, যা বিষাক্ত। এমনকি কূপের পানিতে ব্যাকটেরিয়াও মেলে। এ ধরনের পানি পান কতটা স্বাস্থ্যোপযোগী, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের নানা মত রয়েছে।
তাহলে সবচেয়ে নিরাপদ পানি কোনটি? পাতিত পানি? যাকে ইংরেজিতে বলে ‘ডিস্টিল্ড ওয়াটার’। পানিকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় বলে এতে জীবাণু থাকে না। তাই এটিকেই অন্যান্য পানির তুলনায় বেশি নিরাপদ ভাবা হয়। কিন্তু এই পানিতেও রয়েছে কিছু সমস্যা। পাতিত করার ফলে তাতে খনিজ ও লবণ থাকে না। ফলে এ ধরনের পানি মূলত শরীরের অন্যান্য অঙ্গের উন্নতিতে খুব একটা কাজে আসে না। দীর্ঘদিন এ ধরনের পানি পান করার ফলে শরীরে খনিজ ও লবণের অভাব দেখা দিতে পারে। যার প্রভাব দাঁত ও হাড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একধরনের পানি রয়েছে, ‘হার্ড ওয়াটার’ নামে পরিচিত। সাধারণত যেসব স্থানে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়, সেখানে মেলে এটি। এই পানিতে বেশি রাসায়নিক থাকে। ফলে তা পান ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর। এ ধরনের পানিতে জিপসামের আধিক্য থাকতে পারে। বর্তমানে একধরনের পানি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে, ক্ষার পানি। অনেকে এটিকে স্বাস্থ্যকর মনে করেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এ নিয়ে মতভেদ দেখা যায়। এ পানিতে ক্ষারের পরিমাণ বেশি থাকে, যা পাকস্থলীর জীবাণু হটায়। তবে বেশি পান করলে তা থেকে অ্যালকালোসিস হতে পারে।
আরও অনেক প্রকার পানি থাকলেও যেগুলো আলোচিত হলো, এগুলোই তুলনামূলক বেশি পরিচিত। এগুলোর থেকে যেকোনো একটিকে বেছে পান করা যেতে পারে। তবে সেটি সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া চাই।

 ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top