skip to Main Content

এই শহর এই সময় I শিল্প ছুঁয়ে

পরিবর্তিত সময়ে নানা অস্থিরতার ভিড়ে রাজধানীবাসীকে স্বস্তির পরশ এনে দিতে শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনজুড়ে গেল মাসে আয়োজিত হয়েছে বিবিধ অনুষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে ১৭ থেকে ১৯ অক্টোবর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘লালন স্মরণোৎসব ২০২৪’। লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে। ‘আশাসিন্ধু তীরে’ শীর্ষক প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে ছিল বক্তব্য ও গান। দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে বসে সাধুমেলা, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শিরোনামে। শেষ দিন একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ‘ধরো মানুষ রূপ নেহারে’ শিরোনামে সমাপনী আসর। এর শুরুতেই যন্ত্রে লালনের বাণী পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির যন্ত্রশিল্পীরা। একাডেমির তালিকাভুক্ত শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় লালনের অমর গান ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। এরপর লালন ভাববাণীগুচ্ছ নিয়ে ‘সহজ মানুষ’ শিরোনামের খণ্ডনৃত্য পরিবেশন করেন মেহরাজ হক তুষার ও তার দল। অনুষ্ঠানে লালনের ভাববাণী একক কণ্ঠে গেয়ে শোনান ফরিদা পারভীন, বাউল শফি মণ্ডল, সরদার হীরক রাজা, আবিদা রহমান সেতু, রাফি তালুকদার, রোকসানা আক্তার রূপসা প্রমুখ। সমবেত কণ্ঠে ‘মিলন হবে কত দিনে’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পর্দা নামে এ আসরের। তিন দিনের এই আয়োজনে ছিল বেশ কয়েকটি আলোচনা সভা।
বারিধারার প্রগতি সরণির প্ল্যাটফর্মস গ্যালারিতে ঢুঁ মেরে দেখা মেলে থরে থরে সাজানো গোলাপি রঙের প্রাধান্যে আঁকা চিত্রমালার। তাতে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের জনজীবনে পড়ার আপাতদৃষ্টে মৃদু অথচ অন্তর্নিহিতভাবে ধারালো প্রতিচ্ছবি ছড়িয়ে পড়ে। বলছি প্ল্যাটফর্মসের আয়োজনে প্রতিশ্রুতিশীল চিত্রশিল্পী অন্তরা মেহরুখ আজাদের একক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ‘সোলাস্ট্যালজিয়া: ফ্র্যাগমেন্টস অব আ ফেডিং হরাইজন’-এর কথা। উদ্বোধন হয় ১৯ অক্টোবর। চলবে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা। শিল্পীর অন্তর্দৃষ্টির ভেতর দিয়ে ধরা পড়া পরিবেশগত পরিবর্তনের ব্যক্তিগত ও সর্বজনীন অভিজ্ঞতার সন্ধান চালিয়ে, বাংলাদেশে নদী ও ল্যান্ডস্কেপের সঙ্গে গভীর সংযোগ ঘটানোর প্রতিনিধিত্ব করে এই প্রদর্শনী। জলবায়ু প্ররোচিত বন্যার প্রভাব এবং গ্রামীণ ও শহুরে পরিবেশের মধ্যে উত্তেজনাকে অন্বেষণ করে শিল্পকর্মগুলো। সুন্দরবন থেকে ঢাকার ঘন শহুরে ফ্যাব্রিক পর্যন্ত, অন্তরার কাজগুলো এই জগতের সংমিশ্রণের প্রতিফলন ঘটিয়ে, মানুষের কার্যকলাপ ও পরিবেশগত সংকটের মাধ্যমে পুনর্নির্মাণ করা একটি ল্যান্ডস্কেপের বাহ্যিক পর্যবেক্ষণের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ আবেগকে একাকার করে দেয়। অন্তরা বলেন, ‘২০১৮ সালে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এসেছিল, যখন আমি পাকুরিয়ায় বন্যাকবলিত জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করেছি। আমার কাজের নিয়ন গোলাপি জল এই সংকটের অস্বাভাবিক মনুষ্যসৃষ্ট উপাদানগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়েছে।’ প্রদর্শনীটির কিউরেটর রায়ানা হোসেন।
পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার। গয়না তৈরির জন্য প্রসিদ্ধ। গয়নার কারিগরদের বলে স্যাকরা। সেই চেনা তাঁতীবাজারের অচেনা গল্পের ঝুড়ি নিয়ে গয়নাশিল্পী, উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষক তাহমীনা শৈলীর আনন্দ প্রয়াস ‘স্যাকরার তাঁতিবাজার’। ১০ থেকে ১৯ অক্টোবর প্রদর্শিত হয় লালমাটিয়ার দ্বীপ গ্যালারিতে। এক যুগের বেশি সময় ধরে তাঁতীবাজারের স্যাকরাদের সঙ্গে কাজ করছেন শৈলী। খুব কাছ থেকে দেখেছেন তাদের। তার ভাষ্য, ‘আমরা কেবল গয়নার সৌন্দর্যটাই দেখি। গয়নার পেছনে যে কারিগরেরা থাকেন, তাদের দেখার সুযোগ হয় না। একটা গয়না তৈরির পেছনে যে কর্মযজ্ঞ থাকে, তা একবারে দেখাও সম্ভব নয়। গয়না তৈরির একেক ধাপের কাজ একেক জায়গায় করা হয়। গয়নাপ্রেমীরা যাতে এই ধাপগুলো এক ছাদের নিচে দেখতে পারেন এবং স্যাকরাদের সম্পর্কে ধারণা পান, সে জন্যই এমন উদ্যোগ।’ এর মাধ্যমে তাঁতীবাজারের গয়নার পাশাপাশি এর কারিগরদের জীবনচিত্র সম্পর্কে দারুণ ধারণা পান দর্শকেরা।

 লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top