skip to Main Content

টেকসহি I ক্লিন এনার্জি কালচার

বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে ইন্টারন্যাশনাল ক্লিন এনার্জি ডে পালন করা হলেও এর মর্মার্থ সারা বছর উপলব্ধি এবং জীবনাচরণে তার চর্চা অব্যাহত রাখা জরুরি। আমাদের সবুজ ধরিত্রীকে বাঁচিয়ে রাখতে

অন্তর্জাল দুনিয়ায় কদিন ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর আদাভি নামে দুই বছরের এক শিশুর নাম। বলা হচ্ছে, সে বিশ্বের প্রথম কার্বন-নিরপেক্ষ শিশু। এরই সূত্র ধরে এশিয়া বুক অব রেকর্ডে নাম উঠেছে তার। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, কার্বন-নিরপেক্ষ শিশু আসলে কী? কার্বনে ভরপুর পৃথিবীতে এই টার্ম খানিকটা নতুনই বলা যায়। কার্বন-নিরপেক্ষ মানুষ তারা, যাদের বাতাসে কার্বন নিঃসরণের হার একেবারে নেই বললেই চলে। এককথায় তারা পৃথিবীর শুদ্ধতম মানুষ হিসেবে ছড়িয়ে দিচ্ছেন দূষণমুক্ত বাতাস।
এই কার্বন নিঃসরণ হ্রাস আসলে হচ্ছে কী করে? কারণ, কোনো না কোনো মাধ্যম ছাড়া কার্বন নিঃসরণ কমানো আদতে অসম্ভব। আদাভির ক্ষেত্রে এই মাধ্যম হলো গাছ। আদাভির পরিবার তার জন্মের আগেই তামিলনাড়ুর কৃষকদের সঙ্গে মিলে রোপণ করেছে ছয় হাজারের বেশি ফলের গাছ। সেগুলো শিশুটির সঙ্গেই বেড়ে উঠবে এবং শুষে নেবে তার নিঃসরিত সকল কার্বন। তবে কি কেবল মানুষই কার্বন নিঃসরণ করে? উত্তর হলো, ‘না’। পেট্রল, ডিজেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ প্রায় সব জীবাশ্ম জ্বালানিতেই কার্বন বিদ্যমান এবং তা পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদন করলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়।
জীবাশ্ম জ্বালানি পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা আমরা সবাই কম-বেশি জানি। এটি রোধ করতে পারে ক্লিন অ্যানার্জি তথা পরিষ্কার শক্তি। ক্লিন অ্যানার্জি বলতে এমন শক্তি উৎসগুলোকে বোঝায়, যেগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় খুব কম গ্রিনহাউস গ্যাস বা দূষণ সৃষ্টি করে। এটি নবায়নযোগ্য সম্পদ বা প্রক্রিয়া থেকে সংগৃহীত হয়, যা পরিবেশগতভাবে টেকসই। পরিষ্কার শক্তি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমায়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে এবং লক্ষ রাখে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তোলায়।
এই মর্মে প্রতিবছরের ২৬ জানুয়ারি পালিত হয় ইন্টারন্যাশনাল ক্লিন এনার্জি ডে। ২০২৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ (রেজল্যুশন এ/৭৭/৩২৭) থেকে দিবসটির ঘোষণা আসে। এদিন মূলত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানির অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও সামাজিক সুবিধা তুলে ধরার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।
ক্লিন এনার্জি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা দূরতম সময়ের মধ্যেও থাকে না। তাই অনেকে একে নবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে অভিহিত করেন। এর প্রধান উৎস পাঁচটি—সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ, ভূতাপীয় শক্তি এবং জীবাশ্ম শক্তি। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই শক্তিগুলোর জুড়ি মেলা ভার।
সৌরশক্তি মূলত সূর্যালোক কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। সূর্য আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রীয় নক্ষত্র, যা একটি বিশাল গ্যাসীয় পিণ্ড। প্রধানত দুটি উপায়ে সূর্য থেকে শক্তি সংগ্রহ করা যায়। প্রথমত, আলোক শক্তি এবং দ্বিতীয়ত, তাপ শক্তি সংগ্রহ করে। আলোক শক্তি সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয় ফটোইলেকট্রিক ইফেক্ট বা আলোকতড়িৎ ক্রিয়া। আলোক সংবেদী অর্ধপরিবাহীর মাধ্যমে তৈরি ফটোভোল্টাইক সেল (পিভি) ব্যবহার করে তৈরি করা হয় সোলার প্যানেল। এসব প্যানেলের বিশাল অ্যারে বা শ্রেণি তৈরি করে আলোক শক্তি থেকে ডিরেক্ট কারেন্ট বা ডিসি বিদ্যুৎ শক্তি সংগ্রহ করা হয়।
অপরদিকে তাপ শক্তি সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহার করা হয় কনসেন্ট্রেটেড সোলার পাওয়ার বা কেন্দ্রীভূত সৌরশক্তি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দর্পণের মাধ্যমে কেন্দ্রীভূত প্রতিফলনের ফলে সৃষ্ট তাপ কাজে লাগিয়ে বাষ্প তৈরি এবং তা থেকে পরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সোলার্জিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌরবিদ্যুতের প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রতি বর্গমিটারে ঘণ্টায় ৩ দশমিক ৮ থেকে ৪ দশমিক ৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
বায়ুশক্তি মূলত সৌরশক্তিরই আরেক রূপ। বায়ুর গতিতে থাকে গতিশক্তি বা কাইনেটিক এনার্জি। এই শক্তিকে সাধারণত টারবাইনের মাধ্যমে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করা হয়। সেই যান্ত্রিক শক্তি থেকে বিদ্যুৎ শক্তি পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি ল্যাবরেটরির (এনআরইএল) তথ্য অনুযায়ী, ৮০-১২০ মিটার বা ২৪-৩৬ তলা উঁচু স্তম্ভের ওপর বায়ুকল বসালে বাতাসের প্রবাহ ব্যবহার করেই বাংলাদেশে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
পৃথিবীর পৃষ্ঠের অধিকাংশ এলাকাজুড়ে রয়েছে সাগর-মহাসাগর। এই বিশাল সমুদ্র অংশ সম্পদ ও শক্তির ভান্ডার। সমুদ্র থেকে বিভিন্ন উপায়ে নবায়নযোগ্য শক্তি সংগ্রহ করা যায়। জলবিদ্যুৎ হলো ক্লিন এনার্জির আরেকটি মাধ্যম। প্রবাহিত বা পতিত পানির শক্তি কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত শক্তি। এটি সবচেয়ে পুরোনো ও সর্বাধিক ব্যবহৃত নবায়নযোগ্য জ্বালানির মধ্যে একটি, যা নির্ভরযোগ্য ও ধারাবাহিক শক্তি সরবরাহ করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা চট্টগ্রামের কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীর ওপর দেশের প্রথম জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে ১৯৫৭ সালে শুরু হয়।
পরিষ্কার শক্তির অন্যতম উৎস জিওথার্মাল এনার্জি বা ভূতাপীয় শক্তি, যা পৃথিবীর অভ্যন্তরের শক্তি হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর কেন্দ্র একটি গলিত ধাতুর পিণ্ড, যার তাপমাত্রা প্রায় ৬ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সেই তাপমাত্রা পৃথিবীপৃষ্ঠের নিচ পর্যন্ত পরিচলন পদ্ধতিতে চলে আসে। তা ছাড়া পৃথিবীর অভ্যন্তরের তেজস্ক্রিয় পদার্থ; যেমন থোরিয়াম, ইউরেনিয়াম ক্ষয়ের ফলে যে তাপ সৃষ্টি হয়, সেটিও ভূপৃষ্ঠের নিচ পর্যন্ত পরিচালিত হয়। এই তাপ কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়।
শহুরে আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ বা ‘মিউনিসিপ্যালিটি ওয়াস্ট টু এনার্জি’ বর্তমানে দারুণ জনপ্রিয় একটি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন মাধ্যম। প্রতিটি মেগাসিটি বা বড় শহরে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টন সলিড-ওয়েস্ট তৈরি হয়। এই আবর্জনাগুলো কাজে লাগানো যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে। আবর্জনাগুলো থেকে দাহ্য পদার্থ যেমন প্লাস্টিক, কাঠ-খড় ইত্যাদি বাছাই করে আলাদা করা হয়। সেগুলো দক্ষ ফার্নেসে পুড়িয়ে বাষ্প তৈরি করে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। উৎপন্ন গ্যাসকে বিভিন্ন উপায়ে পরিশোধন করে বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিশ্বের ৬৭৫ মিলিয়ন মানুষ এখনো বিদ্যুৎহীন, যার ৮০ শতাংশের বাস সাব-সাহারা আফ্রিকায়। বিদ্যুতের অভাবে তাদের শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা তাদের দৈনন্দিন জীবনে দূষণ বাড়াচ্ছে এবং অব্যাহত রেখেছে দারিদ্র্য চক্র।
আমাদের দেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে, জ্বালানি কাঠ বাদ দিলে এখানে পেট্রোলজাতীয় (পেট্রোলিয়াম) তরল জ্বালানি ব্যবহার করা হয়। যেমন কেরোসিন, ফার্নেস অয়েল, ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি), তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), তরলায়িত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ইত্যাদি। এর বাইরে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ইটভাটা ও ইস্পাতশিল্পে কয়লা ব্যবহার করা হয়। এগুলো সবই জীবাশ্ম জ্বালানির অংশ।
গোটা বিশ্বের মোট জ্বালানি চাহিদার আশি ভাগের বেশি জোগান দেয় জীবাশ্ম জ্বালানি; বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম তেল, কয়লা এবং প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক জ্বালানি। বলা যায় জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমরা আজ অনেকাংশে নির্ভরশীল। অন্যদিকে এই চরম নির্ভরশীলতাই আমাদের ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। গোটা বিশ্ব আজ জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন, যার পেছনে রয়েছে মূলত তিনটি কারণ; অনিশ্চিত জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিবেশদূষণ এবং তেলভিত্তিক ভূরাজনীতি।
সারা বিশ্বে প্রতিদিন বাড়ছে জনসংখ্যা; বাড়ছে যানবাহন আর শিল্পকারখানা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্বালানি চাহিদা। ২০০৭ সালের এক হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে মোট যানবাহনের সংখ্যা ছিল ৮০৬ মিলিয়ন, যা ২০৩০ সালের দিকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়নে দাঁড়াবে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ ২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০৮ সালে পেট্রোলিয়াম এবং অন্যান্য তরল জ্বালানির ব্যবহার ছিল প্রতিদিন ৮৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন ব্যারেল, যা ২০৩৫ সাল নাগাদ ১১২ দশমিক ২ মিলিয়ন ব্যারেলে পৌঁছাবে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সারা বিশ্বে সব ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ছিল শূন্যের কোঠায়, যা ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়ে গত শতকের শেষ দিকে এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ মিলিয়ন টন প্রাকৃতিক গ্যাস, ৬ হাজার মিলিয়ন টন পেট্রোলিয়াম তেল এবং ২ হাজার মিলিয়ন টন কয়লা। অন্যদিকে, জীবাশ্ম জ্বালানির সঞ্চিত ভান্ডার সীমিত ও অ-নবায়নযোগ্য এবং ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ৪০-৫০ বছরের মধ্যে এই মজুত নিঃশেষ হয়ে যাবে।
শক্তির উৎসকে টিকিয়ে রাখতে তাই আলবেনিয়া, কঙ্গো, আইসল্যান্ড ও প্যারাগুয়েতে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া নামিবিয়া, কোস্টারিকা, নরওয়ে, তাজিকিস্তান, উরুগুয়ে ও জাম্বিয়ায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের হার ৯৫ শতাংশের বেশি; কিন্তু বাংলাদেশে তা এখনো ৪ শতাংশের কম। অদূর ভবিষ্যতে এই হার বাড়াতে না পারলে বাংলাদেশ আরও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
পরিষ্কার জ্বালানি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। জীবাশ্ম জ্বালানি জলবায়ু সংকটের সবচেয়ে বড় কারণ। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং টেকসই জ্বালানির দিকে এগিয়ে যেতে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসা অপরিহার্য। বিজ্ঞান বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বন্ধ এবং পরিষ্কার, সহজলভ্য, সাশ্রয়ী, টেকসই ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির উৎসে বিনিয়োগ করতে হবে।
২০২৪ সালে আজারবাইজানে আয়োজিত কপ২৯ সম্মেলনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কয়লা, তেল কিংবা গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে এই গ্রহকে উত্তপ্তকারী কার্বনের নিঃসরণ আগের বছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। অথচ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৪৩ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে এবং মানুষের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্যই এটি করা দরকার। এ জন্য প্রয়োজন ক্লিন এনার্জির ব্যবহার বাড়ানো।

 সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top