ইভেন্ট I মিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বাংলাদেশ অধ্যায়। হাজার জনের মধ্য থেকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম এমন কাউকে খুঁজে বের করার চেষ্টা। বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ শেষে বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপন। বিশাল কর্মযজ্ঞের সাতকাহন
বিশ্বের অন্যতম বিউটি প্যাজেন্ট মিস ইন্টারন্যাশনাল। বিগ ফোরের তালিকায় স্থান পাওয়া এই আসর ১৯৬০ সালে যাত্রা শুরু করে। সৌন্দর্য, সৌহার্দ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে ধীরে ধীরে। ২০২৩ সাল থেকে মিস ইন্টারন্যাশনালে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। এই গুরুদায়িত্ব পালন করছে বিউটি প্যাজেন্ট মিস ইন্টারন্যাশনালের এদেশীয় পরিচালক আজরা মাহমুদ এবং স্পন্সর শোকুবুতসু।
এবারের তিন ফাইনালিস্ট জেসিয়া ইসলাম, সাজরিয়া তাবাসসুম প্রমা ও সোমাইয়া হারুন। ফাইনাল রাউন্ড শেষে জেসিয়া ইসলামকে মুকুট পরানো হয় মিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ২০২৫ হিসেবে। সাজরিয়া তাবাসসুম প্রমা হন ফার্স্ট রানারআপ, আর সেকেন্ড রানারআপ হন সোমাইয়া হারুন।
এ বছরের তিনজন ফাইনালিস্ট এনজিওর সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যাতে তাদের প্রচেষ্টা অর্থবহ ও টেকসই পরিবর্তন আনতে পারে। তারা সামাজিকভাবে সক্রিয় থেকে সমাজে দীর্ঘস্থায়ী অবদানের এই পথচলা অব্যাহত রাখতে খুবই আগ্রহী। সৌন্দর্যের বাইরেও এ বছরের বিজয়ীরা তাদের সামাজিক প্রভাব এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রতি গভীরভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।
জেসিয়া ইসলাম
মাদকাসক্ত পথশিশুদের পুনর্বাসনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন জেসিয়া। বাংলাদেশ স্ট্রিট কিডস এইডের (বিএসকেএ) সঙ্গে যুক্ত তিনি। পথশিশুদের মাদকের প্রভাব থেকে সুরক্ষা এবং তাদেরকে সুস্থভাবে জীবনযাপনের ব্যবস্থা করাই তার মূল উদ্দেশ্য। স্পনসরের কাছ থেকে ফান্ড জোগাড়ের চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিয়মিত। স্বপ্ন দেখেন আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কাজের পরিসর বাড়ানোর।
সাজরিয়া তাবাসসুম প্রমা
ফার্স্ট রানারআপ প্রমা। কাজ করছেন সবার জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিতে। ফুটস্টেপ বাংলাদেশের প্রজেক্ট তৃষ্ণা কাজ করে নগরীর সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিতদের জন্য। সেখানেই যুক্ত তিনি। প্রমা মনে করেন, নিরাপদ পানি পান কোনো প্রাপ্ত সুবিধা নয়; বরং অধিকার। তাই সুপেয় পানি যাতে সবার সহজপ্রাপ্য হয়, সেই চেষ্টা তার নিরলস।
সোমাইয়া হারুন
সেকেন্ড রানারআপ সোমাইয়া। তিনি বেছে নিয়েছিলেন এসডিজি গোলের পরিষ্কার টয়লেটের প্রয়োজনীয়তাকে। পাশে পেয়েছেন ভূমিজকে। এই প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন জায়গায় টয়লেট স্থাপনের মাধ্যমে নারীদের স্যানিটাইজেশন নিশ্চিত করে। প্রজেক্টের কর্মীরা নারী। মহান এই কর্মে যুক্ত থাকার পরেও সামাজিকভাবে হেয় হন তারা। তাই তাদের পাশে থেকে অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছেন এই ফাইনালিস্ট।
মিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আয়োজন স্পনসর করে শোকুবুতসু। জাপানি এই বিউটি ব্র্যান্ডের মাদার কোম্পানি লায়ন কল্লোল লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং ডিরেক্টর তন্ময় দত্ত গুপ্ত বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সৌন্দর্যের আসল উৎস হলো প্রকৃতি, আত্মবিশ্বাস ও লক্ষ্য নির্ধারণ করে সেদিকে এগিয়ে যাওয়া। শোকুবুতসু টানা দ্বিতীয়বারের মতো মিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ স্পনসর করেছে। আমাদের উদ্দেশ্য- শুধু প্রতিযোগিতা নয়; নারীদের ক্ষমতায়ন, বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব এবং বুদ্ধিমত্তা, সংস্কৃতির গর্ব, নেতৃত্ব ও সহমর্মিতা তুলে ধরা।’
জেসিয়া ইসলাম গৌরবের সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা বহন করবেন মিস ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতায়। এটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭ নভেম্বর, জাপানের টোকিওতে। সেখানে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ফ্যাশন ডেস্ক
মডেল: জেসিয়া, প্রমা ও সোমাইয়া
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: সানায়া কুটর বাই সানায়া চৌধুরী
ছবি: কৌশিক ইকবাল
