ফোকাস I পাখি হোম
পুরো নাম ‘পাখি হোম’। ‘পাখি’ নামেই অধিক খ্যাত। প্রিমিয়াম বেডিংয়ের ওপর মনোযোগ দিয়ে যাত্রা শুরু করা এই লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডের পণ্যতালিকায় রয়েছে বেডশিট, কুইল্ট, কুশন কভার, থ্রোস এবং অন্যান্য হোম এসেনশিয়াল। প্রাত্যহিক জীবনকে শৈলী ও উষ্ণতায় ঋদ্ধ করে তোলার সমৃদ্ধ সম্ভার। এর উদ্যোক্তা রিপ্রিয়া রাজ পোদ্দার। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা এক দাপুটে উদ্যোক্তা ব্যাকগ্রাউন্ডের যৌথ পরিবারে।

রিপ্রিয়া রাজ পোদ্দার
কুকওয়্যার, কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ও জুট প্রোডাক্ট তৈরির পারিবারিক ব্যবসা তাদের। ফলে ছোটবেলা থেকেই ব্যবসা ছিল তার মনজুড়ে। অল্প বয়সে পড়াশোনার জন্য পাড়ি জমান ভারতে। স্নাতক করেন হার্ভার্ড সামার স্কুল থেকে। স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ডান্ডি থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর বাবার সঙ্গে কাজে যোগ দিয়ে ই-কমার্স ও ডিজিটাল অ্যাডভারটাইজিংয়ে নেন হাতেখড়ি। এরপর ডিজিটাল মার্কেটিং স্পেশালিস্ট হিসেবে এক বছরের জন্য পাড়ি জমান নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে; দেশে ফিরে একই কোম্পানিতে আরও চার বছর কাজ করেন। এ সময়েই কাজের ফাঁকে গড়ে তোলেন হোম ডেকর ব্র্যান্ড ‘পাখি’।
ব্র্যান্ডটি গড়ে তোলার পেছনে রিপ্রিয়াকে প্রস্তুত হতে সাহায্য করেছে তার পারিবারিক প্রেরণা ও পেশাদার অভিজ্ঞতার মিশ্রণ। আমস্টারডামে অ্যাডভান্সড ই-কমার্স ও পারফরম্যান্স মার্কেটিংয়ের নাড়িনক্ষত্র ঝালিয়ে নিয়ে, কোভিড অতিমারির পর দেশে ফিরে এই ব্র্যান্ড গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। দেশে মানসম্পন্ন বেডিং ও ইউনিক ডিজাইনের মার্কেটে একটি বড় ফারাক নজরে পড়েছিল তার। সেখান থেকে ‘পাখি’র আইডিয়ার আবির্ভাব। রিপ্রিয়া বলেন, ‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি, একটি বাসার অবশ্যই সেটির বাসিন্দাদের ব্যক্তিত্ব ও স্পন্দনের প্রতিফলন ঘটানো উচিত; অথচ খেয়াল করে দেখলাম, সবচেয়ে সহজলভ্য বিকল্পগুলো হয় অতি জেনেরিক, নয়তো সেগুলোর মধ্যে একটি বাসার পক্ষে ব্যক্তিগত ও প্রেরণামূলক অনুভূতির সঞ্চারক হওয়ার প্রশ্নে একধরনের নকশা সংবেদনশীলতার ঘাটতি রয়েছে।’ তাই স্রেফ বিছানাপত্রের সীমানা পেরিয়ে যাওয়ার মতো একটি লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড সৃষ্টির দর্শন নিয়ে ‘পাখি’র জন্ম। ‘আধুনিক তবু উষ্ণ অনুভূত হওয়া নকশাগুলো হাজির করতে চেয়েছিলাম আমি; এমন পণ্য তৈরি করতে চেয়েছিলাম, যেগুলো শুধু গুণমানেই সেরা নয়, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের একটি বোধও বহন করে’ বলেন তিনি।
ব্র্যান্ডের নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রিপ্রিয়ার গভীর আবেগ। বললেন, ‘শিশুকালে ভীষণ কৌতূহলী ছিলাম, নানা প্রশ্ন করতাম। বাবা কখনোই সেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে এতটুকু ক্লান্ত হতেন না। “ময়না পাখি”, “টিয়া পাখি” ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন নামে আদর করে আমাকে ডাকতেন তিনি।’ তাই নিজের কাছে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ ও ব্যক্তিগত অনুভূত হওয়া ‘পাখি’কেই ব্র্যান্ড নেম হিসেবে বেছে নিয়েছেন রিপ্রিয়া। বললেন, ‘এটি স্রেফ একটি নামই নয়; বরং আমার আত্মপরিচয় ও শৈশবের একটি অংশও।’
‘পাখি’র পণ্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে গুণমান ও নকশায় সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। আরাম ও স্থায়িত্ব নিশ্চিতের জন্য গভীর সতর্কতার সঙ্গে বেছে নেওয়া হয় ফ্যাব্রিক। নকশার ক্ষেত্রে মনোযোগ পায় ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব ও গৃহনন্দন অনুরণিত করার বিষয়টি। ‘বাজারে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাওয়া জেনেরিক অপশনগুলোর কাছ থেকে “পাখি”র মাধ্যমে একটি ব্রেক আনতে চেয়েছিলাম আমি; সেগুলোর বদলে হাজির করতে চেয়েছি সতেজ, স্পন্দিত ও চিন্তাশীল কিছু,’ বলেন রিপ্রিয়া।
ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া, স্টোরিটেলিং ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে একটি জোরালো অন্তর্জাল উপস্থিতির প্রতি মনোযোগ ব্র্যান্ডটির। রিপ্রিয়া বলেন, ‘আমরা কাস্টমারের ফিডব্যাক খুব মনোযোগ দিয়ে শুনি। আর তা আমাদের কাজে উন্নতি ঘটাতে এবং নতুনত্ব আনতে সাহায্য করে।’ গুণমান, ক্রয়ক্ষমতা ও নকশা সংবেদনশীলতার ভারসাম্যই ‘পাখি’কে সত্যিকার অর্থে অনন্য করে তুলেছে, এমন উপলব্ধি এই উদ্যোক্তার।
অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের (www.paakhihome.com) পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলোতে ব্র্যান্ডটির সকল পণ্য সহজলভ্য। যারা ইন-স্টোর অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাদের জন্য চট্টগ্রামের প্রিলিজেন্ট আউটলেটে মিলবে ‘পাখি’র পণ্য।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: পাখি হোমের সৌজন্যে
