ফিচার I একান্ত ব্যক্তিগত
মধুরেণ সমাপয়েতের পরের অধ্যায় শুধুই দুজনের। একত্র বাসের সঙ্গে পরিচয়। নিজেকে খানিকটা গুছিয়ে নিলে আত্মবিশ্বাসের আলো ছুঁয়ে যাবে অনায়াসে
বিয়ের হইচইয়ের পরের পর্ব শুধুই নিজেদের। তখনকার সাজটাও তা-ই। ক্যামেরার শাটারের শব্দ নেই; নেই ফ্ল্যাশ লাইটের চমক, অতিথির কোলাহল কিংবা আত্মীয়ের আলাপন। সামাজিকতার সময় এটা নয়; বরং নবদম্পতির একে অপরকে বুঝে নেওয়ার ক্ষণ। এ সময়ে নিজেকে সাজিয়ে নেওয়া যেতে পারে শুধু নিজেদের জন্য। সঙ্গীই তখন একমাত্র দর্শক। কোথাও আর কেউ নেই!
নিউলিওয়েড গ্লো
জাস্ট ম্যারেড রিট্রিটে বিয়ের পরেই বেরিয়ে পরা হোক অথবা হোক নিজেদের শহরেই একত্র বাস, তবু তো এক নতুন অধ্যায়। সেখানে নিজেকে নিয়ে ভাবনা তো মাস্ট! বিয়ের দীর্ঘ পরিকল্পনা, কর্মযজ্ঞ আর ধকলের প্রভাব ত্বকে স্পষ্ট হতেই পারে। যদি না-ও হয়, তবু সত্য হলো, ত্বক যথেষ্ট ক্লান্ত। এ জন্য হাইড্রেটিং শিট মাস্ক রাখা যেতে পারে সঙ্গে। হালকা এক্সফোলিয়েশন করে, গ্লো-সেরাম দিয়ে শিট মাস্কের চাদরে ঢাকা কিছুক্ষণ। তাতে ময়শ্চারাইজেশন হবে; আবার উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া হোক, কিংবা বাসায় একত্র যাপন—কোনোখানেই ভারী বেস আবশ্যক নয়। স্বাভাবিক উজ্জ্বলতাই সই। টিন্টেড ময়শ্চারাইজার, সামান্য পিচ ব্লাশ আর চিকবোনে নামমাত্র হাইলাইটার। তাতেই দুই ছক্কা পাঁচ। ব্রেকফাস্ট ডেট, অফিস বাঙ্ক লাঞ্চ অথবা ক্যান্ডেল লাইট ডিনার—সবেতেই সই।
হানিমুন হেয়ার
বিবাহ যজ্ঞের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই চুল নানাভাবে ঝক্কির শিকার হয়। কখনো আঁটসাঁট হেয়ার ডু, কখনো স্প্রে আর হিটের বাহাদুরি। ফুল, ঝাপটা, টিকলি টিকিয়ে রাখার যুদ্ধও কম কিছু নয়। পরবর্তী পর্ব চুলকে দেওয়া যেতে পারে খানিক অখণ্ড বিশ্রাম। যেখানে চুল নিজের মতো ঢেউ খেলবে; বাতাসে ভেসে যাবে। সামান্য হেয়ার সেরামে যত্নআত্তি পাবে। অলস সকালে একটি মেসি বান, কয়েকটি খোলা চুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে গাল—কবিতার মতো সুন্দর একেই বলে!
বিয়ের পরের দিনগুলোতে সকাল মানেই ধীর ছন্দ, নরম আলো আর একটু অগোছালো সৌন্দর্য। কিন্তু ক্লান্তি ও ব্যস্ততার ফাঁকে প্রতিদিন চুল ধোয়া, কন্ডিশন কিংবা সেট করা সব সময় সম্ভব নয়। তাই দরকার কিছু দ্রুত অথচ কার্যকরী হেয়ার কেয়ার টেকনিক; যাতে চুল থাকে মসৃণ, সুগন্ধি। সময় না থাকলে ড্রাই শ্যাম্পুই ভরসা। চুলের গোড়ায় স্প্রে করে দুই মিনিট রেখে আঙুলের আলতো ছোঁয়া মাসাজ করা চাই। তাতে চুল হবে ঝরঝরে, ঘ্রাণে ভরপুর, একদম নতুনের মতো। আর যদি পানির স্পর্শ চাই-ই চাই, তাহলে কুইক শাওয়ারে মিলতে পারে সমাধান। দ্রুত গোসলের সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। এই সামান্য উষ্ণতা প্রশান্ত করবে শরীর ও মন। সামান্য শ্যাম্পু শুধু স্ক্যাল্পে প্রয়োগ করে, হালকা হাতে ধুয়ে নিলে তেলও দূর হবে, চুলও শুকিয়ে যাবে না। এরপরে রেগুলার কন্ডিশনারের বদলে স্প্রে করা যেতে পারে হালকা লিভ-ইন কন্ডিশনার। তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছে নিয়ে, চুলে দুই থেকে তিনবার স্প্রে করে, তারপর আঙুলে আঁচড়িয়ে নিলে চুল হবে নরম, গন্ধে ভরা আর সহজে স্টাইলযোগ্য।
শুষ্ক বা ফ্রিজি চুল মাঝেমধ্যে শ্যাম্পু বাদ দিয়ে শুধু কন্ডিশনারে ধুয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে চুলের ন্যাচারাল অয়েল বজায় থাকে; চুল থাকে কোমল ও প্রাণবন্ত। কখনো পুরো চুল নয়, কেবল ফ্রন্ট বা ক্রাউন অংশ তৈলাক্ত দেখালে শুধু সামনের অংশটুকু পরিষ্কার করে নেওয়া সম্ভব। এতে কয়েক মিনিটে ফ্রেশ লুক মিলবে; স্টাইলও ঠিক থাকবে। চুল ধোয়ার পর রুক্ষ তোয়ালে নয়, মাইক্রোফাইবার টাওয়েল বা পুরোনো কটন টি-শার্টে হালকা চাপ দিয়ে পানি শুষে নিলে চুল ভাঙার ঝুঁকি কমবে; থাকবে নরম ঝলমলে টেক্সচার। শেষে এক চিমটি হেয়ার মিস্ট বা আরগান অয়েল স্প্রে করে নিলে চুলে ছড়াবে কোমল উজ্জ্বলতা আর ভালোবাসার ঘ্রাণের আকর্ষণ।
একান্ত বাস
সৌন্দর্যের শুরু পরিচ্ছন্নতা থেকে। প্রতিদিন গোসলের সময় হালকা, মৃদু ঘ্রাণের বডিওয়াশ ব্যবহার করলে সজীবতা থাকবে চারপাশে। তবে বেছে নেওয়া চাই এমন বডিওয়াশ, যা ত্বক শুষ্ক করে না। আন্ডারআর্ম, ঘাড়, পিঠের মতো জায়গাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার রাখাও কম জরুরি নয়। আর ইন্টিমেট হাইজিনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। পিএইচ-ব্যালেন্সড ফেমিনিন ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। স্নানের পর পুরো শরীরে হালকা বডি লোশন ও পারফিউম লেয়ার করলে ত্বক কোমল থাকবে।
সুগন্ধে সানন্দে
নবযুগল কাছাকাছি থাকার সময় পারফিউম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন রকম সুগন্ধির ভিড়ে বেছে নিতে পারেন ভ্যানিলা, মাস্ক অথবা ফ্লোরাল। তাতে স্নিগ্ধতা ঘিরে রাখবে।
পরিপাট্যে সমাপ্তি
সাটিনের রোব, মিনিমাল গয়না, হালকা চুল খোলা রাখা আর পছন্দের লিপ টিন্ট—এমনভাবে শুরু হতে পারে সকালটা। ছোট ছোট জিনিসেই থাকে আকর্ষণের গল্প। দুপুর, সন্ধ্যা, রাত—দিনের কোনো সময়েই অতিরঞ্জন জরুরি নয়। নিজের ও সঙ্গীর জন্য নিজেকে তৈরি করে নেওয়াতে মোহমুগ্ধতা থাকুক মোলায়েম।
বিউটি ডেস্ক
মডেল: বর্ণ
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: সাফিয়া সাথী
জুয়েলারি: গ্লুড টুগেদার
ছবি: কৌশিক ইকবাল
