বিশেষ ফিচার I কারওয়ান বাজারের ইতিকথা
একদা এখানে নদী ছিল। তীরে এসে ভিড়ত নৌকা। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে পাইকারি বাজার। লিখেছেন শুভ্র মিসির
কাগজে-কলমে রাজধানী ঢাকার বয়স চার শ বছরের বেশি। দেশের প্রধান খুচরা ও পাইকারি বাজারগুলোর একটি এই কারওয়ান বাজারের বয়স দুই শ বছরের বেশি। এখানে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের পণ্যের রয়েছে বিপুল সমাহার। বলা চলে, ঢাকার সবচেয়ে বড় কেন্দ্রীয় পাইকারি ও খুচরা বাজার এটাই। তেজগাঁও থানার কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউর পাশে প্রায় ৫০ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা চারটি বিশেষায়িত মার্কেট ও অন্যান্য স্থাপনা মিলিয়ে কারওয়ান বাজারে দোকানের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস এই ঢাকায়। তাদের বড় একটি অংশের খাদ্যপণ্য, বিশেষ করে কাঁচা শাকসবজি, ফলমূল, মাছসহ নানা পণ্যের জোগান দেয় এই বাজার। একে ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করেন কয়েক হাজার মানুষ।
কারওয়ান বাজারের গোড়াপত্তন, নাম ও বিস্তার নিয়ে ইতিহাসের পাতায় বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়।
শূরী বংশের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতবর্ষের সম্রাট শেরশাহ শূরী (১৫৩৮-১৫৪৫) সুলতানি বাংলার রাজধানী সোনারগাঁও থেকে পাঞ্জাবের মুলতান পর্যন্ত ৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘সড়ক-ই-আযম’ বা ‘গ্র্যান্ড ট্রাক রোড’ নির্মাণ করেন। তিনিই প্রথম ঘোড়ার ডাকের ব্যবস্থা করেছিলেন। দ্রুত সংবাদ আদান-প্রদান, পথচারীদের নিরাপত্তা, রাত্রিযাপন, সংবাদবাহকের ঘোড়া বদল ইত্যাদি কারণে এই সড়কে নির্দিষ্ট দূরত্বে তার প্রশাসন নিরাপত্তাচৌকি ও সরাইখানা স্থাপন করেছিল। ইতিহাস বলে, সড়ক-ই-আযম কারওয়ান বাজারের পাশ দিয়ে অথবা কোনো সংযোগ সড়কের মাধ্যমে এই বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। এখানেও ছিল একটি সরাইখানা। এর ফারসি শব্দ ‘ক্যারাভাঁ’, অর্থ সরাইখানা। ‘ক্যারাভাঁ’ থেকেই ক্যারভাঁন বাজার, থেকে কালের পরিক্রমায় এই স্থানের নামকরণ হয়েছে কারওয়ান বাজার।
পরবর্তীকালে বাংলার মোগল সুবাহদার মীর মুহাম্মদ সায়ীদ আর্দিস্তানী মীর জুমলা (১৬৬০-৬৩) ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের সাহেবগঞ্জ জেলার রাজমহল মহকুমা থেকে বাংলার রাজধানী দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকায় স্থানান্তর করেন। সেই সময় ঢাকার ‘বাগ-ই-বাদশাহী’ মানে বাদশাহের বাগান যা পুরোনো হাইকোর্ট ভবন থেকে নিয়ে বর্তমান সড়ক ভবন পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, সেখান থেকে টঙ্গী পর্যবেক্ষণ চৌকি/দুর্গ পর্যন্ত মীর জুমলা একটি রাস্তা তৈরি করেন। ধারণা করা হয়, মীর জুমলাই সড়ক-ই-আযমের এই অংশ সংস্কার করেন, নতুবা একটি সড়কের মাধ্যমে তা সংযুক্ত করেন। তার অব্যবহিত পর পরবর্তী সুবাহদার আমীর-উল-উমারা নওয়াব মির্জা আবু তালিব ওরফে শায়েস্তা খান এই রাস্তার উপর শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে নিরাপত্তাচৌকির সঙ্গে পর্যটক/মুসাফিরদের সুবিধার্থে রাষ্ট্রীয় খরচে একটি সরাইখানা স্থাপন করেন। জেমস রেনেলের তথ্যানুযায়ী তেজগাঁওয়ের পার্শ্ববর্তী নড়াই নদ আর বর্তমানে যে রাস্তাটি পান্থপথ নামে পরিচিত, তাই ছিল একসময়ের পান্ডু নদী, পান্ডু নদীর শাখানদী কারওয়ান নদ; এই নদী দিয়ে স্থলপথের পাশাপাশি নৌপথেও শহরের ভেতর যাতায়াতের সুবিধা ছিল। শায়েস্তা খানের তৈরি করা সরাইখানার কারণেই সম্ভবত পান্ডু ও কারওয়ান নদের তীর ঘেঁষে এই স্থানে একটি বাজার বসে। ফার্সি ভাষায় পর্যটক বা মুসাফির অর্থ ‘কারওয়া’। সে জন্য বাজারটির নাম হয় কারওয়ান বাজার।
১৮ শতকের আগে এই স্থান বাঁশবাজার নামেও পরিচিত ছিল। সে সময় নড়াই নদ (বর্তমান হাতিরঝিল) ছিল ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে যুক্ত, সোনারগাঁও হোটেলের অংশে ছিল নদীর ঘাট। এই ঘাটে থামত বাঁশবোঝাই নৌকা। ঢাকার মানুষজন ঘর-দরজা বানাতে কিংবা মেরামত করতে ছুটে আসতো বাঁশবাজারে। নৌপথের সুবিধার কারণে একসময় এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে ফল এনে এই বাঁশবাজারে পাইকারি বিক্রি শুরু করেন। তার ফলের কদর অল্প দিনের মধ্যেই বেড়ে যায়। ওই ব্যবসায়ীর নাম ছিল কারওয়ান সিং। ধীরে ধীরে মানুষ বাঁশবাজারকে ডাকতে শুরু করেন কারওয়ান সিংয়ের বাজার। কালক্রমে কারওয়ান বাজার হিসেবে খ্যাতি পায়।
তৎকালীন ঢাকার প্রবেশ দেউড়ির উত্তরে, (বর্তমান তেজগাঁও থানা) শায়েস্তা খানের খোজাদের প্রধান মালিক আম্বর শাহ ১৬৭৯ সাল বা ১০৯০ হিজরি সনে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। আম্বর শাহের নামে মসজিদটির নাম হয় খাজা আম্বর বা মালিক আম্বর মসজিদ। মসজিদে মুসল্লিদের যাতায়াত সহজ করতে আম্বর শাহ পান্ডু নদীর ওপর মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি সেতুও তৈরি করে দেন। মোগলরা ঢাকা ছেড়ে চলে যাবার ফলে ১৮৮৫ সালের দিকে এই স্থান অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়ে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে অযত্ন-অবহেলায় মসজিদটির হয় বেহাল অবস্থা। মুনশী রহমান আলী তায়েশের তথ্য থেকে জানা যায়, সেই সময় স্থানীয় ব্যক্তিরা আলোর ব্যবস্থা করে নামাজ ও আজান চালু রেখেছিলেন। ঢাকার নবাব খাজা আহসানউল্লাহ তখন মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু জমি ওয়াকফ করে দেন। স্থানীয় মানুষজন তখন চাঁদা তুলে সংস্কারকাজ শুরু করেন। ঢাকার প্রাচীন মসজিদের তালিকায় ২২তম স্থান ধারণ করে থাকা খাজা আম্বর মসজিদ নির্মাণের সময় কুয়া, পুকুর ও বাগান ছিল। সে সবই আজ ইতিহাস। ঢাকার যে ৯৩টি স্থাপনা ‘সংরক্ষিত’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, এই মসজিদ সেগুলোরই একটি।
শুরুতে কারওয়ান বাজারের মূল অংশটি বসত মসজিদের দক্ষিণ দিকে। আশপাশের গ্রামের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, বিশেষ করে শাকসবজি, স্থানীয় কামার-কুমোরদের গড়া তৈজসপত্র, প্রতিমা ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে বণিক, মহাজন, মাঝি-মাল্লা, ক্রেতা-বিক্রেতারা ভিড় করত। ক্রমেই বাজারে লোকসমাগম এবং বাণিজ্যিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে নবাব আহসানউল্লাহর ওয়াকফকৃত জমিতে বাজার সম্প্রসারিত হয়। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারির ব্যবসা শুরু হলে এটি ঢাকার প্রধান একটি আড়ত বা মোকামে পরিণত হয়। ফলে, খুচরা ও পাইকারি বাজারের পাশাপাশি কালক্রমে এই স্থান বিভিন্ন সংস্থার বাণিজ্যিক সদর দপ্তর, অফিস-আদালত, বিমা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল আর হোটেল-মোটেলের সমাহারে পরিণত হয়। এ ছাড়া দেশের প্রধান বিনোদন ও সংবাদমাধ্যমের অফিসগুলোও স্থাপিত হয়েছে এখানে। ফলে কারওয়ান বাজার অঞ্চলকে ‘মিডিয়া পল্লী’ বললেও ভুল বলা হয় না।
বর্তমান কারওয়ান বাজারে কী না পাওয়া যায়! মৌসুমি সবজি আর ফলের বিরাট আড়ত হিসেবে এখানে পাইকারি ও খুচরা মূল্যে মেলে প্রায় সব কৃষিপণ্য। তেজগাঁও রেললাইনের পাশে এফডিসি-সংলগ্ন মাছের আড়তটি ঢাকার প্রধান একটি মাছের আড়ত। লোহা ও মাটির সব ধরনের জিনিসই এখানে কিনতে পাওয়া যায়। আছে মসলার বিশাল বাজার। চাইলে কম দামে কিনতে পারেন কাপড় ও অন্যান্য পরিধেয়। গরুর মাংস আর দেশি ও ব্রয়লারের মুরগির বাজার তো আছেই। চাল-ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য রয়েছে একটি মার্কেটও। রয়েছে অনেক খাবার হোটেলও।
বাজারের আড়তগুলোর উপরেই মেঝেতে পাটি, কাঁথা, বস্তা বিছিয়ে শ্রমিকেরা ঘুমান। রাত ৮টা নাগাদ এখানকার এবং বাইরের থেকে আসা শ্রমিকদের ভিড়ে কারওয়ান বাজারের আসল চেহারা ফুটে ওঠে। রাত ১০টা থেকে আড়তগুলো ব্যস্ত হতে শুরু করে। মালিক মহাজনেরা আসতে থাকেন, শ্রমিকদের ভিড় বাড়তে থাকে। শাকসবজি-ফল আর বিভিন্ন পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো আসতে থাকে বাজারের বিভিন্ন রাস্তায়। ট্রাকগুলো ঘিরে ধরে রিকশা-ভ্যান। বাজারের ভেতরে পণ্য চলে যায় নির্দিষ্ট স্থানে। মাছের বাজারে সারা রাতই আসতে থাকে বরফের ট্রাক।
রাত যখন ১২টা, তখন ফল, সবজি, মাছ, মুরগি ইত্যাদিতে বোঝাই কারওয়ান বাজার। শীতের সময় দেখা মেলে হাজারো সবজির সমাহার। এ ছাড়া বছরজুড়ে যেসব সবজি উৎপাদিত হয়, সেসব তো পাওয়া যায়ই। বিভিন্ন ধরনের শাকসহ সবজির মধ্যে লাউ, করলা, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, বরবটির পাহাড় জমে যায় এখানে। মাছের বাজারে দেশি-বিদেশিসহ সব ধরনের মাছ পাওয়া যায়। মুরগির বাজারের নাম কিচেন মার্কেট। একসময়কার চিকেন মার্কেটের বিবর্তিত রূপ কিচেন মার্কেট। সেখানে মুরগি, হাঁস, রাজহাঁস, টার্কি, কবুতর— সবই মেলে। রাত দুটোর পর থেকে কেনাবেচা জমে ওঠে কারওয়ান বাজারে। তেজগাঁওয়ের পাশর্^বর্তী ও ঢাকার বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা ভোররাতের দিকে ভিড় করে এখান থেকে কাঁচা শাকসবজি ও মাছ কেনার জন্য। কেনাকাটা শেষে রিকশা-ভ্যান কিংবা ছোট ট্রাকে করে মাল নিয়ে রওনা দেয় নিজ নিজ গন্তব্যে। উদ্দেশ্য, সকালের বাজার ধরা।
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করলে চেহারা বদলাতে থাকে বাজারের। রাতভর ভাত, মাংস আর মাছ বিক্রির হোটেলগুলোয় পরোটা ভাজা হয়। ডিম-পরোটা ভাজার গন্ধ, সবজি, ফল, ময়লা আর কাদার গন্ধে অন্য রকম পরিবেশ তৈরি হয় তখন। এ সময় এখানে ভিড় করে ভিন্ন রকমের একদল ক্রেতা। রাতজুড়ে বিক্রি-বাট্টার ফাঁকে আধা নষ্ট, কাটা, থেঁতলানো শাক-সবজি-ফল বা মাছ কিনতে আসে তারা। এসব তারা বিক্রি করবে কারওয়ান বাজারের পাশেই রেললাইনের ধারে গড়ে ওঠা ‘ফকিন্নি বাজার’ নামে পরিচিত স্থানে। এখান থেকে নিম্ন আয়ের মানুষজন প্রায় অর্ধেক মূল্যেই এসব জিনিস কিনতে পারে।
বেলা একটু বাড়তেই শুরু হয় বাজার পরিষ্কারের কাজ। তাতে নিযুক্ত থাকে শতাধিক কর্মী এবং ময়লা নিতে চলে আসে সিটি করপোরেশনের বড় কয়েকটি ট্রাক। রাতভর পাইকারি আর আড়তে যারা কাজ করেছেন, সকাল হতেই শুরু হয় তাদের বিশ্রাম, নাশতা নয়তো ঘুম। তখন ব্যস্ততা বাড়ে খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতার। এটা কারওয়ান বাজারের প্রতিদিনের দৃশ্য। এখানে কয়েক লাখ মানুষের আগমন ঘটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। প্রতিদিনই লেনদেন হয় কোটি টাকা।
কারওয়ান বাজারের ইতিহাস নিয়ে গবেষক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের ‘কারওয়ান নদী ও আম্বর সেতু’ শিরোনামের লেখা দিয়ে শেষ হতে পারে এই নিবন্ধ। ১৯১৭ সালে অক্সফোর্ড থেকে প্রকাশিত ‘রেভিনিউ হিস্ট্রি অব বেঙ্গল অ্যান্ড দ্য ফিফথ রিপোর্ট’ এবং ‘ফাইনাল রিপোর্ট অব দ্য সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অব ঢাকা’ বইয়ের উদ্ধৃতি আর কল্পনার মিশেলে তিনি লিখেছেন—
‘সিএ ভবনে প্রথম আলো ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অফিস। ভবনটি যে রাস্তার ওপরে, তার নামকরণ হয়েছে জাতীয় কবির নামে। একটা নম্বরও বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ। সিএ ভবনের ঠিক প্রবেশপথেই কারওয়ান নদীর ঘাটে নৌকা বাঁধা। বেশ বড় ছান্দি নৌকা। দুজন মাঝি যাত্রীসহ নৌকাটি নিয়ে পুব দিকে গেল পাফ্ফু নদীর দিকে। পান্ডু বেশ বড় নদী। পান্ডু নদী মগবাজারকে করেছে দ্বিখন্ডিত।
‘কারওয়ান নদীটি একটি ছোট শাখানদী। বৈশাখ মাসে তাতে হাঁটুপানি থাকলেও জ্যৈষ্ঠে বৃষ্টি শুরু হতেই পানি বাড়তে থাকে। আষাঢ়ে দুই তীর টইটম্বুর। পূর্ণিমা সিনেমা হলের কাছে আন্ডারপাসের ওখানে শ্রাবণ-ভাদ্রে ফোটে প্রচুর শাপলা। বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। আশি^নের ঝড়ে কোনো কোনো বছর সোনারগাঁও রোডের চৌরাস্তায় ফোয়ারার গোলচত্বরে নৌকাডুবিতে মারাও যায় দু-চারজন। একটু দূরেই হাতিরঝিলে সারা বছর যে পানি থইথই করে, তাতে মনে হয় যেন কাস্পিয়ান হ্রদ।
‘কারওয়ান নদীর পাশেই আম্বর সেতুটি নির্মাণ করেন আম্বর শাহ নামে একজন পুণ্যবান মানুষ। তিনি প্রভাবশালী ও বিত্তবান ছিলেন। কারওয়ান নদীর তীরে এলাকার মানুষের জন্য তিনি নির্মাণ করেন একটি ছোট সুরম্য মসজিদ।
‘ফ্রেঞ্চগঞ্জ (ফরাশগঞ্জ) থেকে নৌকায় চান খাঁ সাহেবের পুল হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জসীমউদ্দীন ও জিয়াউর রহমান হলের ওপর দিয়ে পরীবাগ হয়ে অনেকে কারওয়ান নদীর তীরে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে আসেন। কারওয়ান নদী থেকে যে খালটি চলে গেছে দোলাই নদীতে (বহু পরে যার নাম হয় ধোলাই খাল), তার পানি অতি স্বচ্ছ। মাছের সাঁতার কাটা দেখা যায় নৌকায় বসে ও পাড় থেকে।
‘…ভরাট কারওয়ান নদীর ওপর গড়ে উঠেছে বিরাট বাজার। তার নাম এখন কারওয়ান বাজার। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সময় কারওয়ান নদীর যে জায়গায় মাছ সাঁতার কাটত, জেলেরা ভেসাল ফেলে মাছ ধরতেন, এখন সেখানে মাছ ব্যবসায়ীর ডালায় মরা মাছের ওপর মাছি ভনভন করে।’
ছবি: অঙ্কুর রায়