হেঁশেলসূত্র I স্বাস্থ্যকর লাঞ্চবক্স
করপোরেট লাইফস্টাইলে লাঞ্চবক্স প্রায় অপরিহার্য। কেমন খাবার তাতে রাখতে হয়? রেসিপি দিয়েছেন শেফ শুভব্রত মৈত্র
সুস্থ দেহমন কর্মক্ষেত্রে উন্নতির পূর্বশর্ত। পুষ্টিকর খাবার ছাড়া তা অকল্পনীয়। তাই প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর লাঞ্চবক্স। মানসম্মত খাবার দেহমনে উদ্দীপনা সঞ্চার করে, কাজের প্রতি উৎসাহ ও মনোযোগ বাড়ায়। অন্যথায় এর ফল হয় উল্টো। সাধারণত আমরা যা খাই, তা শরীরে প্রয়োজনের এক-তৃতীয়াংশ পুষ্টি জোগায়। কর্মক্ষেত্রে সে জন্য লাঞ্চবক্সটি হওয়া চাই পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত। তবে চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার এতে পরিত্যাজ্য । কারণ দুটি উপাদানই প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজের জোগান দেয় না। বরং স্থুলতা এবং উচ্চ রক্তচাপের শঙ্কা বাড়ায়। লাঞ্চবক্স যেমন হওয়া উচিত—
ব্যালান্সড লাঞ্চবক্স
স্বাস্থ্যকর সব ধরনের খাবার রাখার চেষ্টা করুন। যেমন তাজা ফল, ক্রাঞ্চি ভেজি স্টিক, ডিম বা মাংসের প্রোটিন, দই কিংবা পনির, পরিমিত কার্বোহাইড্রেট (রুটি বা ভাত)। যদি সময় কম থাকে, তবে আগের রাতে খাবার তৈরি করে ফ্রিজে রাখুন।
সবজিপ্রধান খাবার
প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি রাখা যেতে পারে। তবে এ জন্য ট্র্যাডিশনাল রন্ধনপদ্ধতির বাইরে চিন্তা করতে হবে। যেমন গ্রেটেড গাজর, জুকিনি এবং সেলারি যুক্ত করা যেতে পারে। এ ছাড়া ঘরে তৈরি সসে টমেটো এবং মসলা ব্যবহার করুন।
পারিবারিক রান্না
রান্নার কাজটি উপভোগ করুন শিল্পকর্মের মতোই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলুন। এতে খাদ্যাভ্যাসে নতুনত্ব আসবে। রাতের রান্না এবং খাওয়া পরিবারের সঙ্গে হওয়া উচিত। কিন্তু সারা দিনের ক্লান্তির পর অনেকেই রাতের খাবার রেস্টোর্যান্ট থেকে আনিয়ে নেন। যার প্রভাব দেখা যায় পরের দিনের লাঞ্চবক্সে। এটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
স্বাস্থ্যসম্মত পরিবার
শিশুরা সাধারণত বড়দের অনুকরণ করে থাকে। আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করলে আপনার সন্তানও তাতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। বাবা-মায়ের লাঞ্চবক্সটি স্বাস্থ্যসম্মত হলে বাচ্চার টিফিন বক্সটিও তেমন হবে।
কোরিয়ান বিফ বোল মিল
উপাদান ভাতের জন্য: বাদামি চাল ১ কাপ, ডিম ৪টি, অলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ, রসুন মিহি কুচি ২ কোয়া, স্পিনাচ কুচি ৪ কাপ।
কোরিয়ান বিফ তৈরির জন্য: ব্রাউন সুগার এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ, রিডিউসড সোডিয়াম সয়া সস এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, সেসেমি অয়েল ২ টেবিল চামচ, শ্রিরাচা সস আধা চা-চামচ (স্বাদ অনুযায়ী আরও বেশি নিতে পারেন), রসুন মিহি কুচি করা ২ কোয়া, মাংসের কিমা ১ পাউন্ড, চিকন করে কাটা পেঁয়াজ ২টি, সেসেমি সিড এক চা-চামচের চার ভাগের এক ভাগ।
স্পিনাচের জন্য: রসুনকুচি ১ কোয়া, স্পিনাচ ১ কাপ, লবণ এক চিমটি।
প্রণালি: বড় একটি সসপ্যানে ২ কাপ পানি দিয়ে ভাত রান্না করে নিতে হবে। পানি ঝরিয়ে এক পাশে রেখে দিতে হবে। ডিম সেদ্ধ করে নিন। ঠান্ডা হলে খোসা ছাড়িয়ে দুভাগ করে নিতে হবে। ধাতব পাত্রে অলিভ অয়েল নিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। তাতে রসুন দিয়ে এক থেকে দুই মিনিট কষিয়ে নিন। স্পিনাচ দিন। নরম না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। দুই থেকে তিন মিনিট নাড়ুন। নামিয়ে এক পাশে রাখুন। একটি ছোট বোলে ব্রাউন সুগার, সয়া সস, আদা, সেসেমি অয়েল ও শ্রিরাচা সস নিয়ে নাড়ুন। আরেকটি ধাতব পাত্রে অলিভ অয়েল নিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। তাতে রসুন দিয়ে ১ মিনিট কষিয়ে নিন। তাতে মাংসের কিমা যোগ করুন এবং বাদামি না হওয়া পর্যন্ত নাড়ুন। তিন থেকে পাঁচ মিনিট ধরে নাড়ুন। মাংস যেন জট লেগে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে ফেলুন। এবার মাংসে সয়া সস মিকশ্চার ও পেঁয়াজ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে দুই মিনিট ধরে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। একটি মিল প্রেপ কনটেইনারে ভাত, ডিম, স্পিনাচ ও মাংস রেখে পেঁয়াজ, সেসেমি সিড দিয়ে পরিবেশন করুন।
চানা মসলা, ডাল স্প্রাউট স্যালাড, আচারি পনির টিক্কা, চাপাতি
চানা মসলার উপকরণ: খোসা ছাড়ানো ছোলা ১ কাপ, লবণ প্রয়োজনমতো, তেজপাতা ১টি, সবুজ এলাচি ২টি, লবঙ্গ ২টি, জিরাগুঁড়া ২ চা-চামচ, আমচুর গুঁড়া ২ চা-চামচ, ফেনেল পাউডার ২ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা-চামচ, বেদানা ১ চা-চামচ, লালমরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, চাট মসলা ১ চা-চামচ, গরমমসলা ১ চা-চামচ, হিং এক চা-চামচের চার ভাগের এক ভাগ, কাসুরি মেথি ২ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ২টি, মাঝারি আকারের সেদ্ধ আলু ১টি (খন্ড করা), ১ ইঞ্চি মাপের একটি আদা ছিলে চিকন করে কেটে নিতে হবে, অর্ধেক লেবুর রস, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: ছোলা ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলেই চলবে। পরের দিন পানি ঝরিয়ে চানাগুলো একটি ঝাঁজরিতে নিয়ে এক পাশে রেখে দিন। ভেজা ছোলা ৪ কাপ পানি দিয়ে একটি প্রেশারকুকারে নিয়ে তাতে সব মসলা ও লবণ দিন। প্রেশারকুকার ঢেকে দিন এবং ছোলা নরম না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। ঢাকনা খুলে সব মসলা আলাদা করে ফেলুন। একটি বড় বোলে ছোলা তুলে নিন এবং যে পানিতে চিকপিজ রান্না হয়েছে, সেটা রেখে দিন। এবার ঢিমে আঁচে একটি প্যান গরম করে নিন। মসলা ও হিং যোগ দিন। ভালো করে মিশিয়ে শুকনো ভাজা করে নিন যতক্ষণ পর্যন্ত না সুবাস ছড়ায়। এবার ভাজা মসলা কাসুরি মেথি যোগ করুন। এবার এই মসলায় সেদ্ধ চানা যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ঢিমে আঁচে ১০ মিনিট রান্না করে নিন। ঢাকনা বন্ধ রেখে রান্না করলে ভালো। ১০ মিনিট পর আদা, কাঁচা মরিচ, সেদ্ধ আলু, ধনেপাতা ও চিকপিজ সেদ্ধ করা পানি যোগ করুন। ভালো করে নেড়ে নিন। চানা ফোটা পর্যন্ত ঢিমে আঁচে দিয়ে নাড়ুন। এতে করে মসলার সুবাস চানায় ঢুকবে। ঝোল ঘন হয়ে এলে স্বাদ চেখে নামিয়ে নিন।
ডাল স্প্রাউট স্যালাড উপকরণ: অঙ্কুরিত মুগডাল সেদ্ধ দেড় কাপ, ভালো করে কুচি করা বাঁধাকপি এক কাপের চার ভাগের তিন ভাগ, টমেটো কুচি আধা কাপ, কুচি করা গাজর আধা কাপ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি আধা চা-চামচ, কালো লবণ আধা চা-চামচ, লবণ প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন।
আচারি পনির টিক্কা উপকরণ: কটেজ পনির কিউব করে কাটা ৫০০ গ্রাম, মাঝারি আকারের ক্যাপসিকাম কিউব করে কাটা ২টি, মাঝারি আকারের পেঁয়াজ কিউব করে কাটা ২টি।
মেরিনেটের জন্য উপকরণ: দই ১ কাপ, আদা ও রসুনবাটা ১ চা-চামচ করে, আচার স্পাইস মিক্স ২ চা-চামচ, চাট মসলা ১ চা-চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, কাসুরি মেথি এবং শুকনা মেথি পাতা ১ চা-চামচ করে। সর্ষের তেল এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ।
প্রণালি: পনির ও সবজি কেটে একটি বোলে নিয়ে এক পাশে রাখুন। দই, আদাবাটা, রসুনবাটা, মসলা ও লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। ভালো করে নেড়ে পেস্টের মতো তৈরি করে নিন। হাতের তালুতে মেথি নিয়ে আলতো করে পিষে নিন এবং মেরিনেট মিক্সে যোগ করুন। এতে সর্ষের তেল দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। স্বাদ চেখে নিন। পনিরের কিউব ও সবজি মেরিনেটে যোগ করুন। টিক্কার আস্তরণ তৈরির জন্যই ভালো করে মেশান। এটা সারা রাত রাখতে পারেন। তবে দু-তিন ঘণ্টা মেরিনেট করতে হবে। এবার বারবিকিউ গ্রিলে পনির আর সবজি গেঁথে নিয়ে আভেনে কিংবা গ্যাসের চুলায় গ্রিল প্যারে সেঁকে নিন। তৈরি হতে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি লাগবে না। সবুজ চাটনি দিয়ে টিক্কা পরিবেশন করুন।
চাপাতি উপকরণ: আটা ২ কাপ, লবণ স্বাদমতো, পানি ১ কাপ, খামিরে ব্যবহারের জন্য তেল ২ টেবিল চামচ, চাপাতিতে দেওয়ার জন্য মাখন অথবা তেল ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালি: একটি সমান তলাবিশিষ্ট পাত্রে আটা ও লবণ নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার অল্প অল্প করে পানি মিশিয়ে নরম খামির তৈরি করে নিন। এরপর তেল দিয়ে খামিরের সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ২০ মিনিট ঢেকে রাখুন। এরপর খামির আবারও ভালোভাবে মথে নিন। রোলিং পিন দিয়ে খামির আরও নরম করে নিন। এবার মাঝারি আকারের লেচি কেটে নিন। পিঁড়িতে আটা ছড়িয়ে লেচিগুলো রেখে রুটির মতো করে বেলে চাপাতি তৈরি করে নিন। তাওয়ার চাপাতি দিয়ে নিচের পাশটি কয়েক সেকেন্ড ভেজে নিন। উল্টে দিন এবং আরেক পাশ কয়েক সেকেন্ড ধরে ভেজে নিন। আবার উল্টে দিন। আবার চাপাতির কোনার দিকে চাপ দিন, যাতে চাপাতি ফুলে ওঠে।
চিকেন স্টেক, স্টিমড ব্রকলি, ম্যাশড পটেটো
চিকেন স্টেকের উপকরণ: মাঝারি আকারের মুরগির বুকের মাংসের টুকরা ৪টি (হাড় ও চামড়া ছাড়ানো), ব্রাউন সুগার ১ চা-চামচ, প্যাপরিকা আধা চা-চামচ, জিরা আধা চা-চামচ, রসুনগুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ ও মরিচ স্বাদমতো, অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: মুরগির মাংসের টুকরায় ব্রাউন সুগার, প্যাপরিকা, জিরা, রসুনগুঁড়া, লবণ ও মরিচ ঘষে ঘষে মেখে নিন। একটি প্যানে মাঝারি আঁচে ১ থেকে ২ চামচ তেল গরম করে নিন। এবার প্যানে মুরগির বুকের মাংসের টুকরা দিয়ে এক পাশ ৫ থেকে ৬ মিনিট ধরে গ্রিল করুন, যতক্ষণ না নিচের অংশে গ্রিলের দাগ পড়ছে। মাংসের টুকরা উল্টে দিন এবং আরেক পাশ ৫ থেকে ৬ মিনিট ধরে গ্রিল করুন। চুলার আঁচ নিভিয়ে প্যানের মধ্যে মুরগির টুকরাগুলো আরও ৫ মিনিট ধরে রেখে দিন। তারপর কেটে পরিবেশন করুন।
ব্রকলির উপকরণ: ব্রকলি ২ থেকে ৩ কাপ, সেদ্ধ করার জন্য পানি।
প্রণালি: একটি বড় পাত্রে পানি গরম করে নিন। তাতে ব্রকলি দিয়ে ১ মিনিট রাখুন। তারপর পাত্র থেকে ব্রকলি উঠিয়ে ফেলুন।
ম্যাশড পটেটোর উপকরণ: রুসেট পটেটো দেড় কেজি পাউন্ড (খোসা ছাড়ানো এবং বড় কিউব আকারে কাটা), সামুদ্রিক লবণ ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টি, রসুন পেষা ২ কোয়া, আনসল্টেড বাটার ১০ টেবিল চামচ, হেভি ক্রিম এক কাপের চার ভাগের তিন কাপ, সাওয়ার ক্রিম এক কাপের চার ভাগের তিন ভাগ, গোলমরিচ, পেঁয়াজ পাতা প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: আলু ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। গলফ বলের আকারে আলু কিউব করে কেটে নিন। আলুগুলো একটি বড় ছাঁকনিতে নিয়ে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। একটি বড় পাত্রে আলুর টুকরাগুলো নিয়ে ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। এই পাত্রে ১ টেবিল চামচ সামুদ্রিক লবণ, একটি তেজপাতা নিয়ে নাড়ুন এবং সেদ্ধ করুন। আলু ভালোভাবে সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত পানি ফোটান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ফোটাতে হবে। আলু ভালোভাবে সেদ্ধ হলে পানি ঝরিয়ে নিন, যাতে আলুতে ভেজা ভাব না থাকে। পাঁচ মিনিট ধরে আলুগুলো শুকিয়ে নিন। তেজপাতা তুলে ফেলে দিন। আলু গরম থাকতে থাকতেই সেগুলোকে একটি রাইজারে দিয়ে ছেনে নিয়ে আবার পাত্রে ঢেলে নিন। একটি সসপ্যানে ঢিমে আঁচে মাখন গলিয়ে নিন। তাতে তেজপাতা ও রসুনবাটা মিশিয়ে নিন। এবার হেভি ও সাওয়ার ক্রিম যোগ করুন। মিশ্রণ ভালোভাবে মিশে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন এবং তেজপাতা ও রসুন সরিয়ে নিন। ছানা আলুর মধ্যে গলা মাখন দিয়ে দিন। নরম না হওয়া পর্যন্ত একটি কাঠের চামচ দিয়ে আলুগুলো ভর্তা করে নিন। লবণ ও গোলমরিচ দিয়ে সিজন করে নিন। প্রয়োজন হলে, পেঁয়াজপাতা এবং আরও কিছু গলা মাখন যোগ করতে পারেন।
আলু-খাসির ঝোল, ভেজিটেবল পোলাও, শসার রায়তা
আলু-খাসির ঝোলে উপকরণ: তেল ৪ টেবিল চামচ, মাঝারি আকারের পেঁয়াজ ২টি (স্লাইস করে কাটা), ছাগলের মাংস আধা কেজি, মাঝারি আকারের আলু ২টি (বড় করে কাটা), টমেটো কুচি ২টি, আদা ও রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ করে, লবণ স্বাদমতো, হলুদ এক চিমটি, লালমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা-চামচ, স্লাইস করা কাঁচা মরিচ ২টি, তাজা ধনেপাতা এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ।
প্রণালি: একটি বড় পাত্রে তেল গরম করুন। পেঁয়াজ দিন এবং বাদামি রঙ না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। ভাজা পেঁয়াজ আলাদা করে নিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। একই পাত্রে তেল আবারও গরম করুন। তাতে পেঁয়াজের পেস্ট দিন। কয়েক সেকেন্ড ভাজুন। তাতে আদা ও রসুনবাটা দিন। তারপর খাসির মাংসের টুকরাগুলো দিন। ২ থেকে ৩ মিনিট ধরে ভাজুন, যতক্ষণ পর্যন্ত মাটনের রঙ পরিবর্তন না হয়। তারপর ধনেগুঁড়া, লালমরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ যোগ করুন। আরও ১ মিনিট ভাজুন। তারপর টমেটো যোগ করুন। এবার টমেটো নরম না হওয়া পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে ভাজুন। তাতে দুই কাপ পানি যোগ করুন। কী পরিমাণ গ্রেভি চান, সেই পরিমাণ পানি দিন। সেদ্ধ হতে দিন। আঁচ কমিয়ে আনুন। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন এবং ১৫ মিনিট ধরে রান্না করুন। তাতে আলু দিন এবং রান্না করতে থাকুন। মাটন ও আলু নরম হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। এক ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
ভেজিটেবল পোলাও উপাদান: বাসমতী চাল দেড় কাপ, কুচানো সবজি ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ২-৩টি, কুচি করা আদা ও রসুন ১ চা-চামচ, পানি সাড়ে তিন কাপ, লবণ প্রয়োজনমতো, তেল ২ টেবিল চামচ, গরমমসলা প্রয়োজনমতো, তেজপাতা ১টি, সবুজ এলাচি ২টি, লবঙ্গ ২-৩টি, জিরা ১ চা-চামচ, দারুচিনি ছোট ১ টুকরা।
প্রণালি: চাল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। চাল পানিতে ১ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখুন। পানি ঝরিয়ে চাল প্লেটে ছড়িয়ে দিন। একটি প্যানে ২ টেবিল চামচ তেল গরম করে নিন। গরমমসলা যোগ করে সাঁতলে নিন। কুচানো পেঁয়াজ দিয়ে সাঁতলে নিন। আদা, রসুন ও কাঁচা মরিচ দিয়ে সাঁতলে নিন। এতে কুচানো ধনেপাতা যোগ করুন এবং কয়েক সেকেন্ড সাঁতলে নিন। এবার কুচানো সবজি যোগ করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মুখ খোলা প্যানে ৭ থেকে ১০ মিনিট রান্না করে নিন। এবার চাল মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিন। চালের আর্দ্রতা চলে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে হবে। এখন সোয়া ৩ কাপ পানি যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে নিন। লেবুর রস যোগ করুন। লবণ দিয়ে সিজন করে নিন। পানি ফোটা শুরু না হওয়া পর্যন্ত ঢাকনা খুলে রাখুন। পানি ফুটতে শুরু করলে ঢাকনা দিয়ে প্যান ঢেকে দিন। ঢিমে আঁচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করে নিন। হয়ে গেলে আঁচ বন্ধ করে ১০ মিনিট ঢাকনা দিয়ে প্যান ঢেকে রাখুন। এরপর প্যান খুলে ভাত পরিবেশন করুন।
শসার রায়তা উপকরণ: প্লেনফুল ফ্যাট দই ১ কাপ, ছোট করে কাটা শসা আধা কাপ, ভাজা জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, লালমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, চাট মসলা পাউডার আধা চা-চামচ, লবণ ও পেপার প্রয়োজনমতো, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: একটি পাত্রে দই নিয়ে ফেটে নিন। তাতে এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ পানি যোগ করুন এবং ফেটে ঘন করে নিন। তাতে শসা, মসলা, লবণ, পেপার এবং ধনেপাতা দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ঠান্ডা করে আরও কিছু ধনেপাতা দিয়ে গার্নিশ করা পরিবেশন করুন।
স্টার ফ্রাই পাস্তা, স্যান্ডউইচ, ফ্রুটস
স্টার ফ্রাই পাস্তার উপকরণ: এলবো আকারের ম্যাকারনি ২৫০ গ্রাম, চৌকো করে কাটা সবুজ ক্যাপসিকাম আধা কাপ, চৌকো করে কাটা লাল ক্যাপসিকাম আধা কাপ, চৌকো করে কাটা হলুদ ক্যাপসিকাম আধা কাপ, ব্রকলি ১ কাপ, রসুনকুচি ৪-৫ কোয়া, অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ, ভিনেগার আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, পেপার এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ, ইতালিয়ান হার্ব মিক্সড ১ চা-চামচ, চিলি ফ্লেক্স আধা চা-চামচ, শুকনা পুদিনা ১ চা-চামচ, মাশরুম ১ কাপ।
প্রণালি: একটি বড় সসপ্যানে পানি নিয়ে তাতে এক চা-চামচ লবণ দিয়ে ফুটতে দিন। পানি ফুটতে শুরু করলে তাতে ম্যাকারনি দিয়ে নেড়ে নেড়ে সেদ্ধ করে নিন। পানি ঝরিয়ে ম্যাকারনি এক পাশে রেখে দিন। একটি প্যানে অলিভ অয়েল গরম করে নিন। তাতে কুচানো রসুন দিয়ে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড কষিয়ে নিন। এবার প্যানে স্লাইসড মাশরুম ও ভিনেগার দিন। তাতে সবজি যোগ করে নেড়ে নেড়ে রান্না করুন, যতক্ষণ পর্যন্ত না সবজি নরম হয়ে আসে। অধিক রান্না না করা এবং লবণ যোগ না করাই ভালো। এখন সেদ্ধ পাস্তা, লবণ, পেপার, চিলি ফ্লেক্স, ইতালিয়ান হার্বস মেশান এবং ভালো করে নাড়ুন। চুলার আঁচ নিভিয়ে দিন। সবজি যোগে পাস্তা পরিবেশন করুন।
চিকেন স্যান্ডউইচের উপকরণ: ব্রেড স্লাইস ৬টি, রান্না করা এবং কুচি করা হাড় ছাড়া চিকেন ব্রেস্ট ১টি, বাঁধাকপির টুকরা করা পাতা ১ কাপ, পেঁয়াজকুচি এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ, মেয়োনেজ আধা কাপ অথবা প্রয়োজনমতো, লবণ স্বাদমতো, গোলমরিচের গুঁড়া স্বাদমতো।
প্রণালি: সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। ব্রেডের উপর বিছিয়ে দিন। উপরে আরেকটি ব্রেড দিয়ে স্যান্ডউইচ তৈরি করে নিন। গুঁড়া ঝেড়ে ফেলে কোনাকুনি করে কেটে নিন।