সাজসারাই I স্মাইল লাইন
যে রেখা হাসিতে ফুটে ওঠে, তা সব সময় প্রীতিকর নয়। কেননা বার্ধক্য ও মন খারাপের চিহ্ন ফুটে ওঠে এতে। সে জন্য একে লুকানো চাই। কীভাবে?
আমাদের নাকের দুপাশ থেকে যে দুটি রেখা ঠোঁট পেরিয়ে নেমে আসে, তাই ‘স্মাইল লাইন’। চোখের বাইরের দিকের কোণেও এমন ভাঁজ তৈরি হয় অনেকেরই। অন্য অভিব্যক্তিতেও এটা ফুটে ওঠে।
অন্যদিকে বার্ধক্য, বংশপরম্পরা এবং ধূমপান এর কারণ হতে পারে। স্মাইল লাইন এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে কিছু উপায় অবলম্বন করলে এই রেখাগুলোকে কমানো যায়। অথবা চেষ্টা করা যায়, যাতে এটা স্পষ্ট হয়ে না ওঠে।
মূলত এটি দুই ধরনের—‘ন্যাসোল্যাবিয়াল ক্রিজ’ এবং ‘ন্যাসোল্যাবিয়াল ফোল্ড’। প্রথমটি ঠোঁট এবং গালের মাঝখানে ফুটে ওঠা রেখা আর তাকে ঘিরে থাকে দ্বিতীয়টি। আমাদের মুখম-লে থাকা চর্বির আস্তরণ বয়স বাড়তে থাকলে স্থিতিস্থাপকতা হারায়। ঝুলে পড়ে। আর সেই অনুযায়ী স্মাইল লাইনগুলো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
অনেকেই মনে করেন, এই স্মাইল লাইন সৌন্দর্য নষ্ট করে। যদিও বোটক্স, ফিলার কিংবা নির্দিষ্ট কিছু ক্রিম ব্যবহার করে এটা ঢেকে ফেলা যায়। তবে সহজ কিছু উপায় খুঁজে বের করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্মাইল লাইন লুকাতে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখা। এ জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। মুখ ধোয়ার পর এবং মেকআপ লাগানোর আগে প্রতিবার ত্বকে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।
পাউডারি মেকআপের পরিবর্তে ক্রিমি মেকআপ ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ত্বক বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটি প্রযোজ্য স্মাইল লাইন ঢাকার জন্য।
মেকআপের পরত যত বেশি হবে স্মাইল লাইন সুস্পষ্ট হয়ে ওঠার আশঙ্কা তত বেড়ে যায়। তাই ত্বকের সাজে সচেতনতা জরুরি। পরিমিত উপাদানে, ফাউন্ডেশন ব্রাশ আর বিউটিব্লেন্ডারের সঠিক প্রয়োগে নিখুঁত মেকআপ পাওয়া সম্ভব। তারপরও যদি ক্রিজ চোখে পড়ে, তাহলে কনসিলার একেবারে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।
প্রতিবার মেকআপ বেজ হিসেবে ময়শ্চারাইজার বা অ্যান্টিরিংকেল ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। স্মাইল লাইন ঢাকার পাশাপাশি এগুলো দিনভর ত্বককে রক্ষাও করবে। শোবার আগে একই ক্রিম মেকআপ রিমুভ করতেও ব্যবহার করা যায়।
ত্বকরঙের সঙ্গে মানানসই কনসিলার বেছে নেওয়া যেতে পারে। লক্ষ্য দৃশ্যমান বলিরেখাগুলোকে ঢেকে ফেলা। সফট ক্রিম কনসিলার এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর। পয়েন্টেড ব্রাশ দিয়ে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, রেটিনল এবং পেপটাইডযুক্ত লাইট রিফ্লেক্টিং ফাউন্ডেশন এ ক্ষেত্রে জুতসই। শুষ্ক ত্বকে ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যাবে না। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড আছে এমন ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা দরকার। স্মাইল লাইনের সমস্যায় স্যাটিন-ফিনিশ লিকুইড ফাউন্ডেশন বেশি উপযুক্ত।
ফাউন্ডেশন সব সময় ডটিং প্যাটার্নে দিতে হবে। শুষ্ক ত্বকে স্মাইল লাইনের উপর স্পঞ্জ দিয়ে ফাউন্ডেশন প্রয়োগ করলে তা সুন্দরভাবে সেট হয়। ভাঁজও আড়ালে চলে যায়।
স্পঞ্জের বদলে ফ্লাফি বা একটু নরম ব্রাশও ব্যবহার করা যেতে পারে।
দিন শেষে মেকআপ তোলার পর মুখে অ্যান্টি এজিং সিরাম মাস্ট।
চোখের নিচে শিফন রঙের কালার কারেক্টর দিলে রিংকেল অনেকখানিই ঢাকা পড়ে। মনে হতে পারে যে এটা মেকআপে জুতসই হচ্ছে না। কিন্তু কনসিলারের সঙ্গে লাগালে তা টোন ডাউন হয়ে ত্বকে ঠিক মিশে যাবে।
মেকআপের পর বিভিন্ন ধরনের আলোয় গিয়ে ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে সব ঠিক আছে কি না। কারণ, বেডরুমের লাইটে যেটা যথাযথ দেখাচ্ছে, আদতে প্রাকৃতিক আলোতে তেমনটা না-ও হতে পারে।
প্রতিবার লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটে লিপ জেনারেটিভ বেজ এবং লিপ কনটুর লাগিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে ঠোঁট হাইড্রেটেড থাকবে এবং স্মাইল লাইন শুরুর জায়গাও ঠিকঠাক থাকবে।
সুরবি প্রত্যয়ী
মডেল: শিখা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন