ফরহিম I উটকো দাড়ি
রেজর বাম্প মানেই ত্বকের দফারফা। এর থেকে নিস্তার পেতে শেভিংয়ের সঠিক নিয়ম মেনে চলা জরুরি। জুতসই হওয়া চাই উপকরণগুলো
শেভিং ছেলেদের গ্রুমিংয়ের একটি অংশ। যারা বড় দাড়ি রাখেন না বা রেখেও একটা নির্দিষ্ট শেপে পছন্দ করেন, সবারই প্রতিদিন কিংবা এক দিন পর শেভ করতে হয়। শেভিংয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রেজর বাম্প। রেজর বাম্প হচ্ছে অন্তর্বর্ধিত দাড়ি, যা শেভ করার পরে সৃষ্টি হয়। ত্বকের নতুন সেলগুলো তাতে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এগুলো আটকা পড়ে ত্বকে খোঁচা খোঁচা ভাব কিংবা চুলকানির সৃষ্টি করে। ত্বক বেশি টান টান রাখলে, উল্টো দিকে শেভ করলে অথবা পুরোনো ব্লেড ব্যবহার করলে এই সমস্যা প্রকট হতে পারে। কিছু পদ্ধতি মেনে চললেই রেজর বাম্প থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব।
প্রপার শেভিং
সঠিক পদ্ধতিতে শেভ করে রেজর বাম্প কমিয়ে আনা যায়। প্রথম স্ট্রোকে দাড়ির স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার দিকে শেভ করতে হবে। এটা ভেতরের ফলিকলগুলো তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে। ছোট ছোট ট্রিমের জন্য বিপরীত দিকে শেভ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক হতে হবে। নইলে ত্বকে র্যাশ দেখা দিতে পারে। ত্বক সংবেদনশীল হলে উল্টো দিকে শেভ না করাই ভালো।
বিরতি
ত্বকে জ্বালাপোড়া থাকলে কার্যকর উপায় হলো দৈনিক ট্রিম থেকে বিরতি নেওয়া। এতে স্কিন সেলগুলো একটু স্বস্তি পায়। ত্বক র্যাশমুক্ত থাকে। ট্রিমিংয়ে বিরতি দিলে র্যাশ এবং প্রদাহ দূর হতে পারে। ত্বক এক্সফোলিয়েট, ক্লিনজ এবং ময়শ্চারাইজ করতে হয়। এতে সেলগুলো চাঙা হবে। বন্ধ হবে জ্বালাপোড়া।
গরম-ঠান্ডা কম্প্রেশন
শেভ করার আগে গরম এবং ঠান্ডা কম্প্রেশনে ত্বকের ফলিকল উজ্জীবিত হয়। তখন পোরগুলো খুলে যায়। দাড়ি নরম হয়। এর জন্য চাই গরম পানিতে ভেজানো নরম তোয়ালে। এবার ত্বকের যে অংশে শেভ বা ট্রিম করবেন, সেখানে কিছুক্ষণ আস্তে আস্তে ওই ভেজা তোয়ালে দিয়ে চাপ দিতে হবে। এর বদলে একই পদ্ধতিতে বরফের টুকরা ব্যবহার করা যায়।
ত্বকের যত্ন
এক্সফোলিয়েশন এবং ক্লিনজিং ত্বকের যতেœ জরুরি। মরা কোষগুলো দূর করতে মাইল্ড স্ক্রাব জুতসই। ক্লিনজার দিয়ে ত্বকের ময়লা কিংবা অয়েল দূর করতে হবে। রেজর বাম্প থেকে ত্বক রক্ষা পাবে।
শেভিং রুটিন
সঠিক রুটিন মেনে শেভ করতে হবে। তবে গোসলটা আগে সেরে নেওয়া ভালো। এতে ত্বকের পোরগুলো খুলে যায় এবং নরম থাকে। শেভিং জেল কিংবা লোশন লাগিয়ে মুখত্বক প্রস্তুত করতে হবে। শেভ করার পর অবশ্যই একটি ভালো মানের আফটার শেভ লাগিয়ে নিন। এগুলো বিভিন্ন ধরনের হতে পারে- জেল, পেস্ট কিংবা লিকুইড। ত্বকের ধরন বুঝে আফটার শেভ নির্ধারণ জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে যেন তাতে স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের উপস্থিতি থাকে। এটা রেজর বাম্পের প্রভাব কমিয়ে আনে এবং ত্বকের মরা কোষ সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
টুইজিং
অন্তর্বর্ধিত দাড়ি টুইজার দিয়ে উপড়ে ফেলা যায়। এতে রেজর বাম্পের আশঙ্কা কমে। তবে ব্যবহারের আগে টুইজার গরম পানি দিয়ে ধুতে হবে। ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক ধোয়া প্রয়োজন। টুইজার ব্যবহার কেবল দৃশ্যমান দাড়িতেই চলতে পারে। নইলে এতে ত্বকে ক্ষত ও সংক্রমণের সৃষ্টি হতে পারে।
সঠিক উপকরণ
এসবের পরেও রেজর বাম্প থেকে (মুক্তি না মিললে) ধরে নিতে হবে, পুরোনো কিংবা অপরিষ্কার রেজরে শেভিং চলছে। ভোঁতা ব্লেড ত্বকের ক্ষতি করে। ম্যানুয়াল শেভিং টুলগুলো প্রতিবার স্ট্রোকের সঙ্গে ত্বকের একটা স্তর উঠিয়ে নেয়, যা জ্বালাপোড়া কিংবা খোঁচা অনুভূত হওয়ার মূল কারণ। সুতরাং একটা মসৃণ শেভের জন্য সার্কুলার মোশনে ইলেকট্রিক ট্রিমার ব্যবহার করাই শ্রেয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে শেভিংয়ের জন্য সিঙ্গেল ব্লেডের রেজরই ভালো।
শিরীন অন্যা
মডেল: নিহাফ
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: সৈয়দ অয়ন